বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী কোমল মিনি বাসের ভিত্তিহীন শ্রমিক কমিটির নামে চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রন নিতে নাসিক ৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলী হোসেন আলা বাহিনীর সাথে ইজারাদার মতিউর রহমান মতুর সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, কমিটির অফিস ভাংচুর,লুটপাট উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১০ জন আহত। তার মধ্যে ৫ জন গুরুতর। বুধবার (১০ আগষ্ট) রাত সাড়ে ৯ টায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় থানায় পাল্টা পাল্টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
জানা গেছে, আদমজী কমোল বাস ষ্ট্যান্ডের বৈধ ইজারাদার মিজমিজি এলাকার মিছির আলীর ছেলে মোঃ মতিউর রহমান মতুকে বিতারিত করে টোল আদায় ও চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রন নিতে চায় নাসিক ৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলী হোসেন আলার আশির্বাদপুষ্ট মেয়াদ উত্তির্ণ ভিত্তিহীন শ্রমিক কমিটির সভাপতি সালাউদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক শাহাজালাল। এ নিয়ে ইজারাদার মতুর সাথে সালাউদ্দিনের বিরোধ চলছে মাস দেড়েক ধরে। একদিকে কমিটির বিরোধ আরেক দিকে চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রন নিয়ে দু,টি গ্রুপের মধ্যে দেখা দেয় উত্তেজনা। এরই জের ধরে গত ৯ আগষ্ট শ্রমিক কমিটির একটি গ্রুপ অফিস দখল করে তালা লাগিয়ে দেয়। এখবর পেয়ে বুধবার রাত সাড়ে ৮ টায় কাউন্সিলর আলী হোসেন আলার নেতৃত্বে ২০/২৫ জনের একটি দল শ্রমিক কমিটির অফিসে গিয়ে তালা ভেঙ্গে ফেলে। তারা অফিসের তালা ভেঙ্গে ফেলেছে এ খবর পেয়ে প্রতিপক্ষ কমিটির রুবেলসহ ১৫/১৬ বাস ষ্ট্যান্ডে ছুটে যায়। এসময় দু‘পক্ষ মোখমুখী হলে সংঘর্ষ বাঁধে। রাত সাড়ে ৯ টায় শুরু হয় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। ভাংচুর করা হয় কমিটির অফিস। এ সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়। তাদের মধ্যে আলা গ্রুপের সালাউদ্দিন ড্রাইভার,নবী ড্রাইভার ও শাহাজালাল রুবেল গ্রুপের ২ জন। আলা গ্রুপের ৩ জনকে নারায়ণগঞ্জ খানপুর আর রুবেল গ্রুপের ২ জনকে স্থানীয় সুগন্ধা হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। এ সংঘর্ষে ষ্ট্যান্ড ইজারাদার মতিউর রহমান মতু উপস্থিত ছিলনা বলে দাবি করেছে। ইজারাদার মতিউর রহমান অভিযোগ জানায়, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশণ থেকে চলতি ২০১৬/১৭ অর্থ বছরের জন্য আমি সর্বোচ্চ ৭ লাখ টাকা দরে আদমজী কোমল বাস ষ্ট্যান্ড ইজারা পেয়েছি। কোমল মিনি বাস শ্রমিক কমিটির সভাপতি সালাউদ্দিন একই কমিটির সাধারণ সম্পাদক শাহাজালালকে অংশিদার নিয়ে ষ্ট্যান্ডটি ইজারা পাওয়ার জন্য ৬ লাখ টাকার চেয়ে কিছু বেশী দরে দরপত্র জমা দেয়। দরপত্র কম হওয়ায় সিটি কর্পোরেশন তাদেরকে ইজারা দেয়নি। গত ২০১৫/১৬ অর্থ বছরেও মতিউর রহমান মতু ওই ষ্ট্যান্ডটি ইজারা পেয়েছিল বলে জানায়।
এ ঘটনায় কদমতলী কলেজপাড়া এলাকার মৃত আলী হোসেনের ছেলে ওই কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহাজালাল(৩৫) বাদী হয়ে দন্ড বিধির ১৪৩/৪৪৮/৩২৩/২২৫/৩০৭/৪২৭/৩৮০/৫০৬ ধারায় মামলা দায়ের করে। মামলার এজাহার নামীয় আসামিরা হলো,কদমতলী এলাকার শামসু বাবুর ছেলে রুবেল (২৮), আবু তাহেরের ছেলে আশরাফ (২৬), চান্দু মিয়া (২৭),মৃত খালেক মিয়ার ছেলে লিটন মিয়া(২৩), মোঃ আবুল কালাম(৩৪) পিতা অজ্ঞাত,আদমজী নতুন বাজার এলাকার মৃত মোহাম্মদ মিয়ার ছেলে সেলিম মজুমদার(৩৫),মিজমিজির মিছির আলীল ছেলে মোঃ মতিউর রহমান মতু(৩৪), মুক্তিনগর এলাকার কানা আবুল ফকিরের ছেলে মোঃ সাইদুল ওরফে জঙ্গি সাইদুল(৩৫), মোঃ শাহাবুদ্দিন(২৮) পিতা অজ্ঞাত ও মোঃ শাহাদাত (৩০) পিতা অজ্ঞাত। অপর দিকে শাহাজালালের দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি রুবেল বাদী হয়ে পাল্টা মামলা দায়ের করেছে বলে জানা গেছে।
ইজারাদার মতিউর রহমান মতুর সাথে কথা হলে তিনি জানায়,টেন্ডার প্রতিযোগীতায় হেরে গেয়ে সালাউদ্দিন ও শাহাজালাল কাউন্সিলর আলা হোসেনের শেল্টারে জোর করে টোল আদায় ও চাঁদাবাজি করার জন্য ষ্ট্যান্ড দখলের পাঁয়তারা শুরু করে। মারামারি করে মামলা দিয়ে কাউন্সিলর আলার ক্ষমতার জোরে সিটির টোল ও চাঁদা আদায় করার জন্য মিথ্যা নাটক সাজিয়ে আমাকে মামলার ৭ নং আসামি করা হয়েছে। সিটি কাউন্সিলর হয়েও আলা হোসেন বৈধ ইজারাদারকে তাড়িয়ে নিজ স্বার্থ হাসিল করতে পরিকল্পিত ভাবে সংঘর্ষ ঘটিয়েছে বলে মতুর অভিযোগ।