বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
আড়াইহাজারে বিয়ে বাড়িতে হামলা চালিয়ে কনে অপহরনের চেষ্টা করেছে হামলাকারীরা। ঐ সময় হামলাকারীদের সাথে বর ও কনে পক্ষের সংঘর্ষে গোপালদী পৌরসভার মেয়র এম এ হালিম সিকদারকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। সংঘর্ষে ৪ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। গোপালদী পৌর মেয়রের গাড়িসহ বর পক্ষের ৫টি গাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ ৫০ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছুরে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানাগেছে, শুক্রবার (৫ আগস্ট) বিকাল ৩টার দিকে উপজেলার বিশনন্দী ইউনিয়নের বিশনন্দী মধ্যপাড়া এলাকার রিপন মিয়ার মেয়ে ছনিয়ার সাথে গোপালদী পৌরসভাধিন রামচন্দ্রদী এলাকার আলী মিয়ার ছেলে দুলালের বিয়ে চলছিল। এমন সময় বিশনন্দী ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারন সম্পাদক আরজু ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক জাকির হোসেনের নেতৃত্বে প্রায় দুই শতাধিক লোক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বিয়ে বাড়িতে হামলা চালিয়ে কনেকে অপহরন করার চেষ্টা চালায়। ঐ সময় কনে ও বর পক্ষের লোকজন বাঁধা দিতে গেলে হামলাকারীদের সাথে তাদের সংঘর্ষ বেধে যায়। ঘটনার সময় হামলাকারীরা মুহুর্মু ককটেল বিস্ফোরন ঘটায়। হামলাকারীরা বর পক্ষের অতিথি গোপালদী পৌরসভার মেয়র এম এ হালিম সিকদারের উপর ও হামলা চালিয়ে তাকে ১ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখে এবং তার গাড়িটি সহ বরযাত্রীদের ৫টি গাড়ি ভাংচুর চালায়।
খবর পেয়ে আড়াইহাজার থানার ওসির শাখাওয়াত হোসেনের নেতৃত্বে থানা ও গোপালদী পুলিশ ফাঁড়ির বিপুল সংখ্যক পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনার চেষ্টা করলে হামলাকারীরা পুলিশের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে শর্টগানে গুলি করে।
আড়াইহাজার থানার উপপরিদর্শক রাকিবুল হাসান জানান, আড়াইহাজার থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) সফিউল আজম সহ ৪ পুলিশ সদস্য হামলাকারীদের ইটের আঘাতে আহত হন। সংঘর্ষের সময় ককটেল ও গুলিবিদ্ধ হয়ে আরজু (৩৮), রুহুল আমিন(২৬), সফিকুল(৩০), আক্তার(২৮), খাইরুল(২২) ও ডালিম সিকদার কে মারাত্মক অবস্থায় মাধবদী ও নরসিংদীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়াও আরো ১০/১২জন বরযাত্রী আহত হয়ে স্থানীয় ক্লিনিকে ভর্তি হয়েছে।
কনের পিতা রিপন মিয়ান জানান, ঐ দিন বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর সন্ত্রাসীরা বিয়ে বাড়িতে হামলা চালিয়ে কনেকে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তবে কনেকে তার স্বামী দুলালের সাথে তার শ্বশুড় বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
গোপালদী পৌর মেয়র এম এ হালিম সিকদার জানান, বিয়ে বাড়ীতে বর যাত্রীদের সাথে দাওয়াতে গেলে বিশনন্দী ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারন সম্পাদক আরজু লোকজন নিয়ে হামলা চালায় এবং তার গাড়ি সহ অন্যান্য বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করে।
বিশনন্দী ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আরজু জানান, সম্প্রতি তার ভাই করিমের ছেলে রুহুল আমিন রনির সাথে ছনিয়ার বিয়ের কথা হয়। এক পর্যায়ে তাদের বিয়ের কথা পাকাপাকি হয়ে যায়। কিন্তু কনে পক্ষ তাদেরকে না জানিয়ে রামচন্দ্রদী এলাকার দুলালের সাথে বিয়ে ঠিক করে এবং বিয়ে আয়োজন করে। এ নিয়ে তাদেরকে জিজ্ঞাসা করতে গেলে সংঘর্ষ বেঁধে যায়।
আড়াইহাজার থানার ওসি সাখাওয়াত হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে এবং ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। যে কোন মূহুর্তে আবারো দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে যেতে পারে বলে স্থানীয় লোকজন আশংকা করছে।