বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার গুলশান এলাকায় হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার একমাস পূর্ণ হয়েছে সোমবার। দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ এই জঙ্গি হামলায় ১৭ জন বিদেশি নাগরিকসহ মোট ২০ জনকে হত্যা করা হয়।
বাংলাদেশে বিভিন্ন সময় সন্দেহভাজন জঙ্গিদের আটক করার দাবি করা হলেও গুলশান হামলা ঠেকাতে পারেনি নিরাপত্তা বাহিনী। গুলশান হামলার ধরন ছিল বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য একবারেই নতুন।
এ ধরনের একটি জিম্মিদশার তৈরি হতে পারে সেটি নিরাপত্তা বাহিনীর কল্পনাতেও ছিলনা।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন মনে করেন, সেই হামলার পর বাংলাদেশের সন্ত্রাসবাদ কিংবা জঙ্গি তৎপরতার বিষয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে নতুন চিন্তা তৈরি করেছে।
তিনি বলেন, আগের তুলনায় নিরাপত্তা বাহিনীগুলো এ বিষয়ে তৎপরও হয়েছে।
পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, গুলশান হামলার ঘটনা তাদের সামনে যে কয়েকটি বিষয় পরিষ্কার করেছে তার মধ্যে একটি হচ্ছে- অনেক উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানদের জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়া।
সে ঘটনার পর জঙ্গিবাদ নিয়ে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর তৎপরতাও বেড়েছে বলে তারা উল্লেখ করছেন।
কর্মকর্তারা বলছেন, দৃশ্যমান নিরাপত্তার চেয়ে তারা এখন গোয়েন্দা নজরদারীর দিকেই বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন।
সর্বশেষ ঢাকার কল্যাণপুরে আটজন জঙ্গি নিহত হওয়ার ঘটনা সেটিই প্রমাণ করে বলে তারা মনে করেন।
আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ নিয়ে গবেষণা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের শিক্ষক এএসএম আলী আশরাফ।
তিনি মনে করেন, গুলশান হামলার মতো এতো বড় ঘটনা হলে নিরাপত্তাবাহিনীর চিন্তা-ধারায় পরিবর্তন আসতো কিনা সন্দেহ।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করেন বাংলাদেশের জঙ্গিবাদের শেকড় কতটা বিস্তৃত হয়েছে সেটি ফুটে উঠেছে গুলশান হামলার মাধ্যমে।
এ হামলার পরে জঙ্গিবাদ মোকাবেলার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে তথ্য আদান-প্রদানের ওপরও জোর দেয়া হচ্ছে।
এর মূল লক্ষ্য হচ্ছে হামলার আগেই সেটি প্রতিহত করা।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, গত একমাসে তারা মাঠ পর্যায়ে গোয়েন্দা নজরদারী যেমন বাড়িয়েছেন তেমনি ইন্টারনেটে এ ধরনের কার্যক্রমের উপরও নজর রাখছেন।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, গুলশান হামলার ঘটনা আপাত:দৃষ্টিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টিভঙ্গিতে খানিকটা হলেও পরিবর্তন এনেছে।
এদিকে পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, এ মুহূর্তে জঙ্গি কার্যক্রমের সাথে জড়িত সন্দেহভাজনদের গ্রেফতার অভিযান জোরালো করার পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও পাড়া-মহল্লায় এনিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য নানা প্রচারণা চালানো হচ্ছে।