বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
সংকট নিরসনে ওআইসি আলোচনার উদ্যোগ নিতে পারে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার দুপুরে গণভবনে ওআইসি মহাসচিব ইয়াদ বিন আমিন মাদানি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতকালে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, বাইরের কারো হস্তক্ষেপ ছাড়াই মুসলিম বিশ্বের বিবাদপূর্ণ দলগুলোর সংকট নিরসনে ওআইসি আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিতে পারে।
বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অভিমত ব্যক্ত করে বলেন, বাইরের কোনরূপ হস্তক্ষেপ ছাড়াই মুসলিম বিশ্বের দেশগুলো একত্রিত হয়ে তাদের সংকট নিরসনে আলোচনায় বসতে পারে।
মানবাধিকারের বিষয়টিও তাদের আলোচনায় উঠে এলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বিষয়ে বলেন, ফিলিস্তিনে ইসরাইলিরা নিরীহ নিরাপরাধ নারি-শিশু হত্যা করলেও অতীতে দেখা গেছে কোন মানবাধিকার সংস্থাই এনিয়ে কথা বলেনি।
ইহসানুল করিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী এবং ওআইসি মহাসচিব পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় ছাড়াও মুসলিম বিশ্বের বিবদমান বিভিন্ন সমস্যাবলী নিয়ে আলোচনা করেন।
ওআইসি মহাসচিবের বাংলাদেশে আগমনকে স্বাগত জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ সমগ্র বিশ্বের জন্যই একটি সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান খুব স্পষ্ট, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ তা যে রূপেই আসুক না কেন তার বিরুদ্ধে আমাদের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথা ঘোষণা করেছি।
তার নিজের পরিবারও সন্ত্রাসবাদের শিকার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এরা (সন্ত্রাসীরা) ইসলামের নামে সন্ত্রাসের মাধ্যমে মানুষ হত্যা করে প্রকৃতপক্ষে ইসলামেরই বদনাম করছে।
তিনি বলেন, ‘এরা মানুষ হত্যার নামে বিচার নিজের হাতে তুলে নিচ্ছে, যদিও কোরআনে বলা আছে আল্লাহপাকই একমাত্র বিচারক।’
আগে দরিদ্র পরিবার এবং মাদ্রাসা ছাত্রদের সন্ত্রাসে জড়ানোর প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা গেলেও আজকাল বেশ অবস্থাপন্ন ঘরের উচ্চশিক্ষিত তরুণ-যুবকেরাও এপথে ঝুঁকছে, অভিমত ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।
এ সময় সন্ত্রাস মোকাবেলায় ওআইসি মহাসচিব মাদানি বাংলাদেশসহ ওআইসি সদস্য রাষ্ট্রগুলোর কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহবান জানান।
ইহসানুল করিম বলেন, মহাসচিব ইয়াদ বিন আমিন মাদানি বাংলাদেশের সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার প্রেক্ষিতে জানমালের ক্ষয়-ক্ষতিতে গভীর দুঃখ প্রকাশ করেন।
বর্তমানে বিশ্বে সন্ত্রাসী ঘটনা এবং সাইবার অপরাধ বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে ওআইসি মহাসচিব বলেন, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে ওআইসি সব সময়ই দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ।
তিনি বলেন, ‘১৯৯০ সালের পর থেকেই বিশ্বে সন্ত্রাসী ঘটনা এবং সাইবার অপরাধ বৃদ্ধি পেতে থাকে যদিও আমরা এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে চাই।’
এ সময় ওআইসি সদস্য রাষ্ট্র বাংলাদেশের সন্ত্রাস বিরোধী কর্মকান্ডে কার্যকর ভূমিকা পালনের বিষয়টিও তিনি উল্লেখ করেন।
মাদানী সন্ত্রাসের শেকড় খুঁজে বের করার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, যুবকদের পরকালের মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে আত্মত্যাগের এই ভুল পথে কারা পরিচালিত করছে তা আমাদেরকে খুঁজে বের করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম, বেলজিয়ামে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং ওআইসির রাষ্ট্রদূত ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে স্থায়ী ওআইসির স্থায়ী প্রতিনিধি ইসমত জাহান, প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন এ সময় উপস্থিত ছিলেন। সূত্র : বাসস