বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
আবারও পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ডিএনডিবাসী। দীর্ঘ এক মাসেরও বেশী সময় দুর্ভোগের রেশ কাটতে না কাটতেই আবারো ডিএনডিবাসী পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। গত ৩ দিনের টানা বর্ষণে ডিএনডি অভ্যন্তরের অধিকাংশ রাস্তাঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্টান, ও ঘরবাড়িতে পানি ডুকেছে। পানিবন্দি হয়ে লাখ লাখ মানুষ সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। ২০ লক্ষাধিক লোকের বাসস্থল ডিএনডি (ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ- ডেমরা ) বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ অভ্যন্তরে দীর্ঘ ১ মাসেরও বেশী সময় ধরে লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন যাপনের রেশ কাটতে না কাটতেই আবারও পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। গত ৩ দিনের অবিরাম বর্ষণে ডিএনডির (ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ- ডেমরা) বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ অভ্যন্তরে আবারও জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এক মাসেরও বেশী কৃত্রিম জলাবদ্ধতায় থাকার পর গত সপ্তাহে ডিএনডি অভ্যন্তরের পানি ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট রাস্তাঘাট থেকে নেমে যায়। মানুষ কিছুটা হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে। কিন্তু নতুন করে ভারী বর্ষণে আবারও ডুবে গেছে সে সব এলাকা। গতকাল বুধবার ডিএনডি অভ্যন্তরের পাইনাদি, নতুন মহল্লা, মক্কীনগর, হিরাঝিল, সিআইখোলা বউবাজার, কদমতলী, দনিয়া, মাতুয়াইল, আদর্শনগর, পূর্ব নিমাইকাসারী, মুক্তিনগর, বড় ভাঙ্গা, ডগাই, রায়েরবাগ, সাদ্দাম মার্কেট, তুষার ধারা, সাহেবপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ দেখা গেছে। বর্ষণে রাস্তাঘাট, ও বাড়ি ঘরে পানি প্রবেশ করেছে। লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে চরমদুর্ভোগ পোহাচ্ছে। ঘর বাড়িতে পানি প্রবেশ করায় রান্না ঠিকমতো করতেও পারছেনা। পানি স্কুল ও ঘরবাড়িতে প্রবেশ করায় চরম দুর্ভোগের মধ্যে দিন অতিবাহিত করছেন লাখ লাখ মানুষ। গতকাল বুধবার দুপুরে নাসিক ১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরের পাইনাদির কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় হাঁটু পানিতে ডুবে রয়েছে। নাসিক ১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী ওমর ফারুক জানায়, ১ নং ওয়ার্ডে ২ লক্ষাধিক লোকের বসবাস। ভারী বর্ষণে ওয়ার্ডের বিভিন্ন পাড়া মহল্লার রাস্তা ঘাট ডুবে বাড়ি ঘরে পানি প্রবেশ করেছে। অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন ১ নং ওযার্ডবাসী। ঘর বাড়ি থেকে মানুষ বের হতে পারছেনা, কর্মজীবি মানুষ , শিক্ষার্থীরা হাঁটু কোমর পানি ভেঙ্গে যাতায়াত করতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন বলে কাউন্সিলর হাজী ওমর ফারুক জানায়। কাউন্সিলর আরও বলেন ডিএনডির ভরাট ও দখলকৃত খাল উদ্ধার ও পুনঃ খনন করে পানিবন্দি জীবন যাপন মানুষকে উদ্ধারের জন্য সরকারের কাছে জোরালো দাবি জানান তিনি। পূর্ব নিমাই কাসারীর স্থানীয় এক সংবাদকর্মী বলেন, পানিতে রাস্তা ঘাটতো ডুবে গেছেই সে সাথে ঘর বাড়িতেও হাঁটু পানিতে তলিয়ে গেছে। ঘর থেকে বের হওয়ার কোন ব্যবস্থা নেই। পানির নিচে শত শত নার্সারীসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ইস্কু- মাদ্রাসাও ডুবে গেছে ।হিরাঝিল এলাকার আরেক প্রখৌশলী আসিফ রানা বলেন, হাঁটু ও কোমর সমান পানিতে হিরাঝিলের ৪ নং রোডের দোকানপাট, ঘর বাড়ি ও রাস্তা ঘাট ডুবেগেছে, এছাড়া মক্কীনগরসহ আশপাশ এলাকাও পানিতে ডুবেগেছে বলে আসিফ রানা জানান। মানুষ সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন পানিবন্দি হয়ে। ডিএনডির সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইলস্থ সেচ পাম্প হাউজে গিয়ে দেখা যায়, ডিএনডি পানি সেচ পাম্প হাউজ মুখে পানির উচ্চতা রয়েছে ৪ দশমিক ২০ মিটার অর্থাৎ সাড়ে ১৩ ফুট। স্বাভাবিকের চেয়ে সাড়ে ৩ ফুট পনি বেশী রয়েছে ডিএনডি অভ্যন্তরে। ৫১ বছরের পুরানো সেচ পাম্প হাউজের বড় ৪ টি সেচ মোটরের মধ্যে ১ টি নষ্ট গত ২০ দিন যাবত ৩ টি চালু রয়েছে এ ছাড়া ছোট ২২ টি স্যালো ইঞ্জিন চালিত মোটরের মধ্যে ১৯ টি নষ্ট এবং ৩ টি চালু রয়েছে । সেচ পাম্পের উপ- বিভাগীয় প্রকৌশলী আব্দুর জব্বার বলেন, প্রতি সেকেন্ডে ডিএনডির ভেতর থেকে ৩ হাজার কিউসেক পানি সেচ করে শীতলক্ষায় ফেলা দরকার, কিন্তু সেখানে আমরা ৬০০ কিউসেক পানি সেচ করতে সক্ষম । তিনি আরও বলেন ডিএনডি অভ্যন্তরে এখন যে পানি রয়েছে সে পানি সেচ করে শীতায় ফেলতে ১০ দিন সময় লাগবে। উপসহকারী প্রকৌশলী রাম প্রসাদ বাছের জানায়, অর্ধশতাব্দীর পুরানো ৫১২ কিউসেক পানি সেচ করার কার্যকারিতা ওই মোটরের নেই, তাছাড়া একটি মোটর গত ৬ জুলাই থেকে বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে, মেরামতের চেষ্টা করে চালু করার উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ডিএনডি অভ্যন্তরের জলাবদ্ধ পানি প্রধান নিষ্কাশন খালে পানি চলাচলের ব্যবস্থা না করে অপিরিকল্পিতভাবে বাড়িঘর, শিল্প প্রতিষ্টান গড়ে তোলা ও শাখা খাল দখল ও ভরাট করার কারণে জলাবদ্ধ পানি সেচ পাম্প হাউজ মুখেআাসতে না পারার কারণে বৃষ্টি হলেই ডিএনডিবাসী পানিবন্দি হয়ে পড়ছে।