নারায়ণগঞ্জ,বিজয় বার্তা ২৪
আগামী ১৬ ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ৩’শ যুবককে সাবলম্বী করার ঘোষণা দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান। আর তাদেরকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে তাদেরকে চলতি মূলধন হিসেবে প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। যার পরিমান দাড়ায় ৭৫ লাখ টাকা। এছাড়াও তিনি তার নির্বাচনী এলাকায় সিটি করপোরেশনের ১৭টি ওয়ার্ডে ২৫ লাখ টাকা করে উন্নয়ন বরাদ্দের পাশাপাশি ৭টি ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় উন্নয়নের জন্য প্রত্যেক ইউনিয়নে ৩০ লাখ টাকা করে বরাদ্দ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। সরকারী বরাদ্দ না আসলেও নিজস্ব তহবিল এবং ব্যবসায়ীদের সহযোগীতা যে কোন ভাবেই তিনি এ ঘোষিত অর্থ বরাদ্দ প্রদান করবেন।
শনিবার(৫ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের গ্রীণলন গ্রাউন্ডে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর ও আই এফ আই সি ব্যাংক লিমিটেড এর সাথে ৩’শ যুবকের সাথে মত বিনিময় সভায় সেলিম ওসমান এ ঘোষণা দেন। সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান একই সাথে নীট গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বিকেএমইএ ও নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কর্মাস এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।
তাদেরকে উদ্যোক্তা হিসেবে তৈরি করতে যার যার পছন্দ এবং যোগ্যতা অনুযায়ী কারিগরী প্রশিক্ষন দিতে সহযোগীতা করবেন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর। যার ব্যবস্থা সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান নিজেই করে দিবেন এবং এসব কাজে সার্বিক সহযোগীতা করবেন নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কর্মাস এন্ড ইন্ডাস্ট্রি।
সেলিম ওসমান ৩’শ যুবককে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে ঘোষিত চলতি মূলধন আইএফআইসি ব্যাংকের যার যার ব্যক্তিগত একাউন্ডে প্রদান করবেন। প্রদত্ত ২৫ হাজার টাকা থেকে ১ হাজার টাকা দিয়ে তারা নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কর্মাস এন্ড ইন্ডাস্ট্রি এর সদস্য পদ গ্রহন করবেন। বাকি ৪ হাজার টাকা যুবককের বিভিন্ন মিল কারখানা পরির্দশনে যাওয়ার জন্য খরচ করার স্বাধীনতা থাকবে। বাকি ২০ হাজার টাকা তারা আগামী ৩ মাসের মধ্যে তাদের প্রশিক্ষন শেষ হওয়ার পর পরই নিজ নিজ একাউন্ট থেকে তুলে নিতে পারবে। সেলিম ওসমানের দেওয়া চলতি মূলধনের টাকা ছাড়াও আইএফআইসি ব্যাংক থেকে তাদের ঋনের সার্বিক ব্যবস্থা করে দিবেন ব্যাংকটি।
৩’শ যুবক উদ্যোক্তার উদ্যোগে সেলিম ওসমান বলেন, তোমাদের আমি রাজনীতি করার জন্য ডাকি নাই। আমরা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা এবং বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে পরিনত করার স্বপ্ন পূরনের জন্য অর্থনৈতিক মুক্তির যুদ্ধের জন্য আহবান জানিয়েছি। নারায়ণগঞ্জে তোমাদের রাজনীতি করার আপাতত কোন দরকার নেই। তোমাদের কাজটি হবে উন্নয়নের। তোমরা আগে তোমাদের নিজেদের সাবলম্বী করে নিজেদের কোমর শক্ত করে পরিবারের পাশে দাড়াও এরপর তোমাদের মাধ্যমে আরও মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে। রাজনীতিটা আপাতত আমরা যার ৫০ থেকে ৬০ বছরের আছি উনারাই করুক।
যুবকদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, তোমাদের নিজেদের চেষ্টা থাকলে অবশ্যই তোমরা একেক জন একজন করে সেলিম ওসমান গড়ে উঠবে। নিজের টাকা না থাকলেও ব্যবসা করা যায়। তোমরা ব্যাংকের সাথে বন্ধুত্ব গড়ে তুলবে। ব্যাংকের সাথে হাত মেলাবে। ব্যাংককে তোমার ব্যবসায়ীক পার্টনার বানাবে। তাহলে তোমার ব্যবসার আয় উপার্জনের হিসাব তোমার নিয়ন্ত্রনে রাখতে সাহায্য করবে। তোমাকে মিতব্যয়ী করে একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে গড়ে তুলতে সহযোগীতা করবে।
৭টি ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় উন্নয়ন বরাদ্দের কথা উল্লেখ করে সেলিম ওসমান বলেন, আমি আমার নির্বাচনী এলাকায় সিটি করপোরেশনের ১৭টি ওয়ার্ডে ২৫ লাখ টাকা করে উন্নয়ন বরাদ্দ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছি। সরকারী বরাদ্দ না এলেও আমি ব্যক্তিগত তহবিল এবং ব্যবসায়ীদের সহযোগীতায় আমি এ টাকা বরাদ্দ দিবো। পাশাপাশি আমি আমার নির্বাচনী এলাকার ৭টি ইউনিয়নেও ৩০ লাখ টাকা করে উন্নয়ন বরাদ্দ দেওয়ার ঘোষণা দিচ্ছি। আমরা রক্ত বিক্রি করে হলেও আমি এই টাকা জোগাড় করে এলাকার উন্নয়ন করবো। আমি সুনিশ্চিত আমার ৭টি ইউনিয়নের মধ্যে ৬ টি চেয়ারম্যানই পুনরায় বিজয়ী হবে এবং আমার সাথে কাজ করবে।
মত বিনিময় সভায় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের হাতে নৌকা প্রতীক দিয়ে তাকে শুভেচ্ছা জানান নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ফয়সাল সাগর, সাইফুদ্দিন আহম্মেদ দুলাল প্রধান, আনোয়ার হোসেন আনু, মোহাম্মদ হোসেন, কামরুল হাসান মুন্না, ইসরাত জাহান খান স্মৃতি, রেজওয়ানা হক সুমি, কাজী ইফাত জাহান মায়া, খোদেজা খানম নাসরিন।
এ সময় সেলিম ওসমান কাউন্সিলর সহ সকলের উদ্দেশ্যে বলেন, আমি তো লাঙ্গল মার্কা নিয়ে নির্বাচন করেছি। কিন্তু আমি বন্দরের সমরক্ষেত্রে ঘোষণা দিয়েছি আমার মার্কা ধানের শীষ, আমার মার্কা আনারস, আমার মার্কা নৌকা, আমার মার্কা লাঙ্গল আমি সবার। আপনারা জনপ্রতিনিধি আপনাদের এলাকায় একে অপরের দোষারোপ করার রাজনীতি করার দরকার নাই। আপনারা উন্নয়নের রাজনীতি করুন। বন্দরে আমাকে উপজেলার চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল সব থেকে বেশি সহযোগীতা করছে যার রাজনৈতিক পরিচয় একজন বিএনপি নেতা, কাউন্সিলর শওকত হাসেম শকু সহযোগীতা করছে সেও বিএনপি নেতা। এছাড়াও অনেক বিএনপি নেতা আছে যারা আমাকে উন্নয়নের কাছে প্রত্যক্ষভাবে সহযোগীতা করছে। আমি সকলকে নিয়ে উন্নয়নের কাজ গুলো করতে চাই। একটি আধুনিক নারায়ণগঞ্জ গড়তে চাই।
নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কর্মাস এন্ড ইন্ডাস্ট্রি এর সিনিয়র সহ সভাপতি মঞ্জুরুল হকের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর এর উপ পরিচালক আতিকুর রহমান, আইএফআইসি ব্যাংক লিমিটেড এর প্রথম সহ সভাপতি জুলফিকার আলী চাকলাদার। আরও উপস্থিত ছিলেন, জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক আবুল জাহের, বিকেএমইএ এর সহ সভাপতি(অর্থ) জিএম ফারুক, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শওকত হাশেম শকু, ১৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্না, গোগনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নওশেদ আলী, বন্দর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন, কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন প্রধান, মদনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালাম, মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন প্রমুখ।