বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
শুক্রবার ছুটির দিনেরও দিনভর কর্মব্যস্ত ছিল নারায়নগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান। ৩ ফেব্রুয়ারী সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সেলিম ওসমান বন্দর ও সদর উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের তার বক্তিগত অর্থায়নে নির্মানাধীন স্কুল গুলো সরেজমিনে পরিদর্শন কনের তিনি। এ সময় স্কুল গুলো পরিদর্শন করে তিনি আগামী ২৬শে মার্চের মধ্যেই স্কুল গুলো আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন করার আশা প্রকাশ করেন। স্কুল গুলোতে থাকতে মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুম, আধুনিক কম্পিউটার ল্যাব, সিসি টিভি ক্যামেরা, আধুনিক সাইন্সল্যাব ও লাইব্রেরী। এ ব্যাপারে তিনি নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী সহ বিত্তবানদের কাছে সহযোগীতা কামনা করেছেন।
স্কুল গুলোর মধ্য থেকে পুরান বন্দর এলাকার নাসিম ওসমান মডেল হাইস্কুল, কলাগাছিয়া ইউনিয়নের মাধবপাশা এলাকায় আলহাজ্ব খোরশেদুনেচ্ছা উচ্চ বিদ্যালয় ও মুছাপুর ইউনিয়নের শামসুজ্জোহা এমবি ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪র্থ তলার কাজ শেষ পর্যায় রয়েছে। এছাড়াও মদনপুর ইউনিয়নের নাগিনা জোহা উচ্চ বিদ্যালয়ের ও ধামগড় ইউনিয়নের হালুয়াপাড়া এলাকায় শেখ রাসেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩য় তলার কাজ শেষ পর্যায়ের রয়েছে। এছাড়াও নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলাধীন গোগনগর ইউনিয়নের পুরান সৈয়দপুর বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়ের কাজ ৪র্থ তলা সম্পন্ন হয়েছে এবং আলীরটেক ইউনিয়নের কুড়েরপাড় এলাকায় শেখ রাসেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩য় তলার কাজ শেষ পর্যায় রয়েছে। তবে প্রতিটি স্কুলই ৬ তলা ফাউন্ডেশন দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে প্রয়োজন মোতাবেক প্রতিটি স্কুল ৬ তলায় রূপান্তর করা হবে। উক্ত ৭টি স্কুল ছাড়াও তিনি আলীরটেক ইউনিয়নের গোপচর এলাকার পুরান গোগনগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজের পরিদর্শন করেন। এছাড়াও তিনি গোগনগর ইউনিয়নের গোগনগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়েও ব্যক্তিগত ও সরকারী অর্থায়নে উন্নয়ন কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
পরিদর্শনকালে সেলিম ওসমান সাংবাদিকদের জানান, এখন পর্যন্ত স্কুল গুলো নির্মাণের জন্য আমার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে করে আসছি। স্কুল গুলোর ভবন ইতোমধ্যে নির্মাণ প্রায় শেষ পর্যায় রয়েছে। এখন আমি নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ীদের কাছে সহযোগীতা চাইছি। ব্যবসায়ীদের সহযোগীতার পাশাপাশি সরকারী অর্থায়ন নিয়ে আমি স্কুল গুলো সব দিক থেকে স্বয়ংসম্পূর্ন করতে চাই। ইতোমধ্যে একজন ব্যবসায়ী প্রায় ২৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয় করে নাসিম ওসমান মডেল হাইস্কুলের শিক্ষার্থীদের বসার সুব্যবস্থা করে দিয়েছেন আধুনিক টোল টেবিল প্রদান করে। এছাড়াও একজন ব্যবসায়ী স্কুলটিতে মাল্টিমিডিয়া করে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। অপর একজন স্কুলের সাইন্সল্যাব ও কম্পিউটার ল্যাব করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ঠিক এমনি ভাবে ৭টি স্কুল সহ বন্দর ও সদর উপজেলার প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নের জন্য আমি নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ীদের সহযোগীতা কামনা করছি। ইতোমধ্যেই আমি নারায়ণগঞ্জ রাইফেল ক্লাব প্রাঙ্গনে দৈনিক শীতলক্ষ্যা পত্রিকার ২২ বছরে পর্দাপন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে নারায়ণগঞ্জের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোর উন্নয়নের সহযোগীতা চেয়ে ব্যবসায়ী সহ নারায়ণগঞ্জের বিত্তবানদের কাছে দুই হাত পেতে ধরেছি।
স্কুল গুলো পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক ও জেলা পরিষদের ৬নং ওয়ার্ডের সদস্য আবুল জাহের, বন্দর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন, কলাগাছিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন প্রধান, মুছাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন, মদনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম এ সালাম, ধামগড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুম আহম্মেদ, গোগনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নওশেদ আলী, আলীরটেক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান মতি, শামসুজ্জোহা এমবি ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি মহিদউদ্দিন, নাগিনা জোহা উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও মদনপুর ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সভাপতি গোলাপ হোসেন, পুরান সৈয়দপুর বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি আলী আকবর সহ প্রতিটি ইউনিয়নের মেম্বার ও এলাকার গন্যামান্য ব্যক্তিরা।
উল্লেখ্য সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ৭টি ইউনিয়নে ৭টি নতুন স্কুল নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। স্কুল নির্মাণে ইতোমধ্যেই তিনি ২১ কোটি ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা অনুদান হিসেবে প্রদান করেছেন। স্কুল গুলোর মধ্যে সদর উপজেলার আলীরটেক ইউনিয়নে কুড়েরপাড় শেখ রাসেল উচ্চ বিদ্যালয়ে ২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, গোগনগর ইউনিয়নে পুরান সৈয়দপুর বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়ে ২ কোটি ৬৫ লাখ, বন্দর উপজেলার বন্দর ইউনিয়নের পুরান বন্দর এলাকায় নাসিম ওসমান মডেল হাইস্কুলে, ২ কোটি ৯৫ লাখ, মুছাপুর ইউনিয়নের ত্রিবেনী এলাকায় শামসুজ্জোহা এমবি ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ে ৫ কোটি ৩২ লাখ ৫০ হাজার, মদনপুর ইউনিয়নের বাগদোবাড়িয়া এলাকায় নাগিনা জোহা উচ্চ বিদ্যালয়ে ২ কোটি ৯৫ লাখ টাকা, ধামগড় ইউনিয়নের হালুয়াপাড়া দশদোনা এলাকায় শেখ জামাল উচ্চ বিদ্যালয়ে ২ কোটি ৬৫ লাখ টাকা কলাগাছিয়া ইউনিয়নের মাধবপাশা এলাকায় আলহাজ্ব খোরশেদুনেচ্ছা উচ্চ বিদ্যালয়ে ১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এছাড়াও একই ইউনিয়নের কল্যান্দি এলাকায় পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ে উন্নয়নের জন্য ৫০ লাখ টাকার অনুদান দিয়েছেন।