বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
নারায়ণগঞ্জে সিটি কপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সিদ্ধিরগঞ্জে ১০টি ওয়ার্ডে ক্ষমতাশিন দলের কাউন্সিল প্রার্থী ছাচাইবাচাই প্রক্রিয়া চালু করেছে দলটি। ইতোমধ্যে কয়েকটি ওয়ার্ডে প্রার্থী প্রাথমিকভাবে চুড়ান্ত করা হয়েছে। তবে মেয়র প্রার্থী চুড়ান্ত হওয়ার পর সময় নিয়ে কাউন্সিলর প্রার্থীদের নাম ঘোষনা করা হতে পারে বলে এমন আভাস দিয়েছে মহানগর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের র্শীষ নেতারা। এদিকে কয়েকটি ওয়ার্ডে একাধিক প্রার্থী দলীয় সমর্থন নিতে জোর প্রচেষ্ঠা করছে বলে তারা মত প্রকাশ করেছেন।
জানা গেছে, আগামী ডিসেম্বর মাসের নাসিকের নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে চায় নির্বাচন কমিশন। এজন্য নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে তফছিল ঘোষনা করতে পারে এমন আভাস দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। দলের মধ্যে কোন্দল বা বিদ্রোহ প্রার্থী না থাকে তার জন্য আগেভাগে ক্ষমতাশিন দলটি তাদের কাউন্সিল প্রার্থী চুড়ান্ত করে চালু করছে প্রার্থী বাচাই। ইতোমধ্যই ২, ৪, ৬, ৭ নং ওয়ার্ডে প্রার্থী চুড়ান্ত করেছে। তবে তাদের নাম এখনিই প্রকাশ হচ্ছেনা। অন্যান্য ওয়ার্ডে প্রার্থী বাচাই প্রক্রিয়া সময় নিয়ে করতে চায় বলে জানায় নেতারা।
একটি সূত্র জানায়, ৬ নং ওয়ার্ডে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের সভাপতি আলহাজ্ব মতিউর রহমান মতি ও ৭ নং ওয়ার্ডে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সহ সাধারন সম্পাদক বর্তমান কাউন্সিলর আলী হোসেন আলা চুড়ান্ত। তবে ৭নং ওয়ার্ডে যুবলীগ নেতা রফিকুল ইসলাম বাবুও রয়েছে নেতাদের চোখে। ২নং ওয়ার্ডে জেলা যুবলীগের সহ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক হাজী সুমন কাজী ও আওয়ামীলীগ নেতা আলহাজ্ব আঃ হেকিম এগিয়ে রয়েছে। তাদের মধ্যে আলহাজ্ব আঃ হেকিমকে ওয়ার্ডে আওয়ামীলীগে, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, কৃষকলীগসহ সকল সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সমর্থন দিয়েছে। তবে এই ওয়ার্ডে থানা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারন সম্পাদক আমিনুল হক রাজু নির্বাচনে অংশ গ্রহনের প্রস্ততি নিলেও থানা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ইয়াছিণ মিয়ার গোপন বিরােধিতার কারনে তিনি অনেকটা কোনঠাসা হয়ে পড়েছেন। তাই এ ওয়ার্ডে আলহাজ্ব আঃ হেকিম কিম্বা সুমন কাজি চুড়ান্ত তালিকায় রয়েছেন। আর ৪ নং ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর আরিফুল হক হাসান চুড়ান্ত বলে সূত্রটি জানায়। পর দিকে ১, ৩, ৫, ৮, ৯ ও ১০ ওয়ার্ডে একাধিক প্রার্থী থাকায় সময় নিয়ে ঘোষনা করা হবে প্রার্থীদের নাম।
তবে অপর একটি সুত্র জানায়, ১নং ওয়ার্ডে প্রবীন আওয়ামীলীগ নেতা ও শিল্পপ্রতি আলহাজ্ব আনোয়ার ইসলাম, ৩নং ওয়ার্ডে যুবলীগ নেতা তোফায়েল হোসেন, ৫ নং ওয়ার্ডে সিদ্ধিরগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আলহাজ্ব আব্দুল মতিন প্রধান, ৮নং ওয়ার্ডে জেলা যুবলীগের সদস্য ও বর্মমান কাউন্সিলর রুহুল আমিন মোল্লা ও ১০নং ওয়ার্ডে কাজি নাজমুল ইসলাম বাবুল প্রায় চুড়ান্ত। তবে মেয়র প্রার্থী চুড়ান্ত হওয়ার পর এ সময় নিয়ে ঘোষনা করা হতে পারে তাদের নাম।
অন্য একটি সূত্র জানায়, মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেনকে যদি দলীয় ভাবে মেয়র প্রার্থী ঘোষনা করা হয় তাহলে কাউন্সিলর প্রার্থী পরির্বতন করা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ৮নং ওয়ার্ডে যুবলীগ নেতা মহসিন ভূঁইয়া, ১০ ওয়ার্ডে ইফতেখার আলম খোকন, ৩নং ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর ছাত্রলীগে নেতা শাহজালাল বাদল দলীয় ভাবে কাউন্সিলর প্রার্থী করা হবে।
অন্যদিকে সংরক্ষিত মহিলা আসনের ক্ষেত্রে ১, ২ ও ৩ নং ওয়ার্ডে শ্রমিক লীগ নেত্রী শামীম আরা লাভলী জনপ্রিয়তায় বেশ এগিয়ে আছেন। প্রতিটি পাড়া মহল্লায় নিয়মিত উঠান বৈঠক ও জনসংযোগ করছেন। তবে বর্তমান কাউন্সিলর বিএনপি সমর্থিত মাকসুদা মোজাফ্ফর থানা আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের আতœীয় বলে এ বিষয়ে তারা নিশ্চুপ রয়েছেন। এ নিয়ে আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দের মধ্যে মনস্তাত্ত্বিক বিরোধ চলছে। তবে কাউন্সিলর মাকসুদা মোজাফ্ফর তিনি সাধারন মানুষ থেকে নিজেকে দুরে রাখায় এবার এলাকাবাসী এ ওয়ার্ডে নতুন মুখ দেখতে চায়।
১নং ওয়ার্ডের সম্ভাব্য কাউন্সিল প্রার্থী আলহাজ্ব আনোয়ার ইসলাম বলেন, ওয়ার্ড বাসির ভালোবাসা ও দোয়া নিয়ে প্রার্থী হয়েছে। তাদের চাওয়া পাওয়াকে মূল্য দিয়ে ওয়ার্ড সাজাতে চাই। দলীয় ভাবে সমর্থন পাবো বলতে পারি। কারন জীবনের চলার পথে বন্ধবন্ধুর আদর্শ বুকে লালন করেছি। তার কন্যা মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটার বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে কাজ করেছি।দলীয় সকল কর্মসূত্রি গুলোপালন করেছি। তাই আশা করছি দলীয় ভাবে আমাকেই দল সমর্থন দিবে।
২ নং ওয়ার্ডের সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থী আলহাজ্ব আঃ হেকিম জানান, দলীয় ভাবে আমাকে সমর্থণ দিলে আমি দলের সম্মান ধরে রাখতে কাউন্সিলর নির্বাচিত হব। আমি আশাবাদি দল আমাকেই সমর্থন দিবে।
২নং ওয়ার্ডের অপর সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থী হাজী সুমন কাজী জানান, দলের দুঃসময় দলের কান্ডাড়ী হিসাবে দলের আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। দল আমাকেই সমর্থন দেব। ইতোমধ্যে থানা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সমর্থন দিয়েছে। তিনিই আমাকে নির্বাচন করতে বলেছে। আমিই পাবো দলের সমর্থন।
নাসিক ৬নং ওয়ার্ডে সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থী সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের সভাপতি আলহাজ্ব মতিউর রহমান মতি বলেন, নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব একেএম শামীম ওসমানের নির্দেশে আওয়ামীলীগের রাজনীতি করি। তাই তার দোয়া নিয়ে নির্বাচন করার ইচ্ছ প্রকাশ করিছি। আর ওয়ার্ডবাসির সমর্থন নিয়েই তাদের উন্নয়নের কথা চিন্তা করে প্রার্থী হচ্ছি। দল আমাকেই সমর্থন দেবে এটা বিশ্বাস করি।
৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিল প্রার্থী তরুন প্রজন্মের অহংকার রফিকুল ইসলাম বাবুকে স্থানীয় আওয়ামীলীগ, যুবলীগ,ছাত্রলীগ, কৃষকলীগ, শ্রমিকলীগ, মহিলালীগ ইতোমেধ্যই সমর্থন দিয়েছে বলে ওয়ার্ডের অনেক নেতাই বলেছে। বাবু সৎ ন্যায়পরায়ন ও কর্মীবান্ধব বলে জানায় তারা। ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিল প্রার্থী তরুন রফিকুল ইসলাম বাবু বলেন, নেতাকর্মী ও ওয়ার্ড বাসির ভালোবাসা নিয়ে নিবার্চনের প্রার্থী হচ্ছি। আশা করি দলীয়ভাবে আমাকেই সমর্থন দেবে নেতারা।
৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী মহসিন ভূঁইয়া জানান, সারা জীবন দলের জন্য সময় দিয়েছি। দল যাকে সমর্থন দেবে তার জন্যই নির্বাচন করবো। তবে আমি মাননীয় সংসদ সদস্যের কথার বাহিরে যাবোনা। তিনি নির্বাচন করতে বলেলে করবো না বলে করবো।
৮নং ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর হুরুল আমিন মোল্লা বলেন, জনগনের সেবা করেছি ৫টি বছর। ইতোমধ্যে তারাই জেনে গেছে আমার উন্নয়নের চিত্র। আমি কথা দিয়েছিলম নির্বাচিত হতে পারলে ৮নং ওয়ার্ডে অন্যান্য ওয়ার্ড থেকে বেশী কাজ করবো । আমার কথা রেখেছি। আরো কাজের টেন্ডার হয়েছে। তাই আমি মনে করি দল আমাকেই সমর্থন দেবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করা জন্যই আমাকে সমর্থন দেবে।
নাসিক ১,২ও ৩ নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সম্ভাব্য কাউন্সিলন প্রার্থী ঢাকা বিভাগ শ্রমিকলীগের মহিলা সম্পাদিকা শামীম আরা লাভলী জানান, থানা আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতামর্কীরা দলীয় ভাবে কাউকে না কাউকে সমর্থন দিবে। যেহেতু দলের জন্য কাজ করি তাই আমি আশা করছি দলের সমর্থন পাবো। তাছাড়া ওয়ার্ড বাসী আমাকে নির্বাচন করতে বলেছে তাই প্রার্থী হচ্ছি। ওয়ার্ড বাসীর চাওয়াকে মূল্য দিয়ে তাদের মত করে ওয়ার্ডের উন্নয়নে কাজ করবো।