স্টাফ রিপোর্টার,বিজয় বার্তা ২৪
পুলিশের বেপরোয়া আচরণের জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে দায়ী করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, শুক্রবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন- পুলিশ সব সময় ভালো কাজ করে। তার এই ধরনের ঢালাও লাইসেন্স দেওয়ার ফলেই তারা (পুলিশ) সীমা অতিক্রম করেছে।
শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে অল কমিউনিটি ফোরাম আয়োজিত এক সেমিনারে হাফিজউদ্দিন আহমেদ এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, গণতন্ত্র না থাকায় অরাজকতা বিরাজ করছে বাংলাদেশে। পুলিশ কেন এত বেপরোয়া? কারণ কোনো গণতন্ত্র নেই। এই পুলিশ আওয়ামী লীগ সরকারকে রক্ষা করে যাচ্ছে। জনগণকে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের সময় বাধা দিচ্ছে। এভাবেই তারা বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় রেখেছে। এজন্যই তারা তোয়াক্কা করে না কারোর।
বিএনপির এই নেতা বলেন, এজন্যই পুলিশ নিজেরাই ঘোষণা দিয়েছে, দেশের রাজা পুলিশ। যেহেতু তারা একটি দলের পুলিশ বাহিনী। তাদের রাজনৈতিক কাজে নিয়োগ করা হচ্ছে। অথচ আমাদের পুলিশ বাহিনী এ রকম ছিল না।
এ সময় সরকারকে দায়ী করার পাশাপাশি নাগরিক সমাজের প্রতিবাদী হয়ে না ওঠার সমালোচনাও করেন তিনি।
হাফিজউদ্দিন বলেন, আজকের বাংলাদেশ দুঃশাসনের প্রতিচ্ছবি। এদেশ পুলিশ স্টেট। সামপ্রতিককালে চায়ের দোকানদার বাবুল মাতুব্বর যেভাবে নিহত হয়েছেন, তা অত্যন্ত দুঃখজনক। কোথায় দেশের সেই সুশীল সমাজ? তাদের কোনো প্রতিবাদ দেখি না।
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলার সমালোচনা করে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা যদি ৩০ লাখের থেকে কমও হয়, তাতে পাকিস্তানের প্রতি ঘৃণা আমাদের কমবে না। যদি বেশি হয়, সেটা ইতিহাসবিদরা বের করে নেবেন। সেজন্য দেশনেত্রীকে কেন মিথ্যা মামলার সম্মুখীন হতে হবে?
তিনি দাবি করেন, রাজনৈতিক কারণেই খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমানের শাশুড়ি ইকবাল মান্দ বানুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা করা হয়েছে।
বিএনপির সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা হওয়া উচিত, যাদের বিরুদ্ধে মাদক সেবনের কারণে মামলা হওয়া উচিত, তারা সব মুক্ত। যারা দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা ধ্বংস করল, সোনালী ও বেসিক ব্যাংক থেকে ৭,০০০ কোটি টাকা লুটপাট করল, তাদের তো গ্রেপ্তার করা হয় না। গ্রেপ্তারের হুমকি শুধু বিএনপি ও জাতীয়তাবাদী শক্তির নেতাদের বিরুদ্ধে।
নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস থাকায় এক অনুষ্ঠান থেকে মন্ত্রীদের চলে আসার খবরের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, বিশ্ব যাকে সম্মান দেয়, নিজ দেশে তার সম্মান নেই। শুক্রবার তিনি একটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে গিয়েছেন দাওয়াত পেয়ে। সরকারের মন্ত্রীরা অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেছেন। কী জন্য? তাদের নেতাকে খুশি করার জন্য!
শেখ হাসিনার উদ্দেশে হাফিজ বলেন, দেশকে আর ধ্বংস করবেন না। আপনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা, অনেকদিন ক্ষমতায় থেকেছেন, এবার গণতন্ত্রকে বিকশিত হতে দিন।
তিনি বলেন, যদি গণতন্ত্র না থাকে প্রতিটি রাজনৈতিক দল ধীরে ধীরে অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলবে। সেখানে জঙ্গিবাদ আস্তে আস্তে শক্তিশালী হয়ে উঠবে। নইলে বাংলাদেশ কাশ্মিরের অবস্থা হবে।
এ সময় জঙ্গিবাদের উত্থান ঠেকাতে অবিলম্বে নিরেপক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনেরও দাবি জানান হাফিজউদ্দিন আহমেদ।
‘কাশ্মিরে জাতিসংঘের ভূমিকা ও দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তির বাধাসমূহ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন আশরাফ উদ্দিন বকুল।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আহমেদ আজম খান, সহ-তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব, তাঁতী দলের সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।