স্টাফ রিপোর্টার,বিজয় বার্তা ২৪
নারায়ণগঞ্জের পিয়ার সাত্তার লতিফ হাই স্কুলের কানধরে উঠবস করা প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে স্বপদে পুনর্বহাল করা হয়েছে। এছাড়া স্কুলের বর্তমান পরিচালনা কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচার আন্তর্জাতকি মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের সম্মেলন এবং শিক্ষার মানোন্নয়নে আয়োজিত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা জানান।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ওই শিক্ষককে বরখাস্তের আদেশ অবৈধভাবে দেওয়া হয়েছে। ওই আদেশ বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। শিক্ষকদের অপমান বরদাস্ত করা হবে না। এটা জাতির জন্য অপমানজনক।
পরিচালনা পর্ষদ ‘এজেন্ডাবহির্ভূতভাবে’ ওই শিক্ষককে বরখাস্ত করেছিল জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, স্কুল কমিটিও বাতিল করা হয়েছে। আপাতত নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে স্কুল পর্ষদ পরিচালনার জন্য একটি কমিটি করে দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, সভ্য সমাজে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনা ন্যক্কারজনক।… তিনি পদে বহাল আছেন এবং দায়িত্ব পালন করে যাবেন।
সম্মেলনে শিক্ষা সচিব মো. সোহরাব হোসাইন, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের মহাসচির ফাহিমা খাতুন বক্তব্য রাখেন। শিক্ষামন্ত্রী সম্মেলনে শিক্ষক লাঞ্ছিতের ঘটনায় নারায়ণগঞ্জের ডিসির নেতৃত্বাধীন তদন্ত কমিটির দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদন পড়ে শোনান।
সরকার দলীয় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের উপস্থিতিতে গত শুক্রবার নারায়ণগঞ্জ বন্দরের পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে কানধরে উঠবস করানো হয়।
প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ, গত ৮ মে স্কুলের এক ছাত্র মারধরের সময় আল্লাহ-রাসুলের নাম মুখে নিলে তিনি ধর্ম নিয়ে কটূ কথা বলেন। পরে নির্যাতনের শিকার ওই ছাত্রের মা স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির কাছে লিখিত অভিযোগ করলে শুক্রবার এ বিষয়ে স্কুলে বৈঠকের আয়োজন করা হয়। ওই বৈঠকের সময় ধর্ম নিয়ে কটূক্তির বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী স্কুলে গিয়ে প্রধান শিক্ষকের ওপর চড়াও হয়। তারা শিক্ষককে মারধর করে অবরুদ্ধ করে রাখে।
পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করতে ব্যর্থ হলে স্থানীয় এমপি সেলিম ওসমানকে খবর দেয়া হয়। তিনি সেখানে গিয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে তার কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চাইতে বলেন। ওই সময় শ্যামল কুমার ভক্ত প্রকাশ্যে কানে ধরে ওঠ-বস করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। পরে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
সেলিম ওসমান বলছেন, অভিযোগের সত্যতা মেলার পর ওই শিক্ষককে জনরোষ থেকে বাঁচাতে এভাবে মাফ চাওয়ানো ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না।