বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিক মৃত্যুর গুজবে বিক্ষোভ করেছে ওই কারখানার শ্রমিকেরা। এসময় তারা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহসড়ক অবরোধ করে কয়েক গাড়ি ভাঙচুর শুরু করে। পরিস্থিত নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ চেষ্টা করলে শ্রমিকদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে পুলিশ সহ অন্তত ১৫জন আহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার ত্রিপুরদী এলাকার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহসড়কের পাশে চৈত্রী গ্রুপের ‘চৈতী নীট কম্পোজিট লিমিটেড’ নামে কারখানায় এঘটনা ঘটে। এতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহসড়কের উভয় পাশে ১০কিলোমিটার রাস্তায় যানজট সৃষ্টি হয়। পরে বিকেল সাড়ে ৩টায় যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
পুলিশ ও শ্রমিকেরা জানান, দুপুরে কারখানার সুইং সেকশনের শ্রমিক রিনা আক্তার বাথরুমে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে পরে। এসময় তাকে দেখতে গিয়ে শেফালী বেগম ও নাজমা আক্তার নামে আরো দুই শ্রমিক অজ্ঞান হয়ে যায়। পরে তাদের মালিকপক্ষের লোকজন উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য অ্যাম্বুলেন্সে হাসপাতালে নিয়ে যায়। এর মধ্যে কারখানায় গুজব ছড়িয়ে পড়ে তিন নারী শ্রমিক মারা গেছে। এ খবর পেয়ে শ্রমিকেরা কারখানার ভেতরে বিক্ষোভ শুরু করে। পরিস্থিত শান্ত করতে কারখানা ছুটি দিয়ে দেয় মালিকপক্ষ। কারখানা থেকে বের হয়ে শ্রমিকেরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহসড়কে বিক্ষোভ শুরু করে। এক পর্যায়ে শ্রমিকেরা বিদ্যুতে খুঁটি ফেলে রাস্তা অবরোধ করে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। এছাড়াও ৫/৬টি যানবাহন ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে সোনারগাঁ থানা পুলিশ ও শিল্পপুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিত নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। এতে শ্রমিক পুলিশের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুঁড়লে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কায়েক রাউন্ডা ফাঁকা গুলি ও টিয়ারশেল ছুঁড়ে। এতে ৬ পুলিশ সদস্য সহ অন্তত ১৫জন শ্রমিক আহত হয়।
আহত হলো, নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খ-অঞ্চল) খোরশেদ আলম, সোনারগাঁও থানা পরিদর্শক আলমগীর হোসেন, উপ-পরিদর্শক তানভীর হাসান, আব্দুল হাসান, নাজমুল হাসান, মাসুদ রানা, হাসান সহ শিল্প পুলিশের কনস্টেবল রুবেল ও জুলহাস। আর শ্রমিকদের তাৎক্ষনিক কোন নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি। তাদেরকে কারখানার ভেতর ও স্থানীয় বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এছাড়া আহত তিন নারী শ্রমিকে সোনারগাঁয়ের আল বারাকা ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খ-অঞ্চল) খোরশেদ আলম বলেন, অতিরিক্ত গরমে তিন নারী শ্রমিক হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন শ্রমিকদের কাছে খবর যায় ওই তিন নারী শ্রমিক মারা গেছে। এতে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ গাড়ি ভাঙচুর অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করে। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিত নিয়ন্ত্রণে আনে। এসময় কয়েক রাউন্ড ফাঁকাগুলি ও কয়েকটি টিয়ারশেল ছুেড় তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরিস্থিতি এখন শান্ত ও মহাসড়কে যানচলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
‘চৈতী নীট কম্পোজিট লিমিটেড’ এর ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. মিজানুর রহমান জানান, তিন নারী শ্রমিক মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে তাৎক্ষনিক কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়। একজনের ডায়াবেটিকসের কারণে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। অন্য দুইজন ওই নারীকে দেখে অসুস্থ হয়ে যায়। তিন নারী শ্রমিককে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তারা সুস্থ্য আছে।