স্টাফ রিপোর্টার,বিজয় বার্তা ২৪
ধর্ম অবমাননার মিথ্যে অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে কান ধরে ওঠবস করানোর জন্য সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের শাস্তির দাবি করেছেন সারা দেশের শিক্ষকরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে এক ঘণ্টার মানববন্ধন ও সমাবেশে তারা এই দাবি জানান।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তারা বলেন, মানুষ গড়ার কারিগর হচ্ছেন শিক্ষকরা। আজ সেই শিক্ষককে প্রকাশ্যে লাঞ্ছিত করা হচ্ছে। একজন সম্মানিত শিক্ষককে এভাবে অপমান করা জঘন্য অপরাধ। এই অপমান ও লাঞ্ছনা শুধু শ্যামল কান্তি ভক্তের নয়। সমগ্র শিক্ষক সমাজের। শিক্ষকদের প্রতি এমন আচরণ কখনো মেনে নেওয়া যায় না। শিক্ষক লাঞ্ছনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। সেলিম ওসমানকে সংসদ থেকে বহিষ্কার করতে হবে। অন্যথায় আগামীতে কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
গত ১৩ মে শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নারায়ণগঞ্জের পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনের একটি মসজিদ থেকে হঠাৎ করেই মাইকে ঘোষণা করা হয়, স্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত ইসলামের বিরুদ্ধে কটূক্তি করেছেন। এ সময় সেখান থেকে এলাকাবাসীকে স্কুল মাঠে জড়ো হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই দলে দলে স্কুলে ঢোকে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। তারা স্কুলের দরজা ভেঙে ঢুকে প্রধান শিক্ষককে মারধর করে এবং তাকে অবরুদ্ধ করে রাখে।
পরে সেখানে পুলিশ উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হওয়ার পর বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানকে ঘটনাস্থলে আসার জন্য অনুরোধ করা হয়। সংসদ সদস্য উপস্থিত হয়ে প্রধান শিক্ষককে প্রকাশ্যে কান ধরে ওঠবস করার শাস্তি দেন।
কান ধরে ওঠবসের পর সমবেত জনতার কাছে করজোড়ে মাফ চাইতেও বাধ্য করা হয় ওই প্রধান শিক্ষককে। পরে সংসদ সদস্যের নির্দেশে প্রধান শিক্ষককে পুলিশের হেফাজতে স্কুল থেকে বের করা হয়। এরপর পুলিশ চিকিৎসার জন্য তাকে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করে।