নারায়ণগঞ্জ,বিজয় বার্তা ২৪
জেলার সিদ্ধিরগঞ্জে মা হাসপাতাল নামে একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশন কালে ডাক্তারের ভূলের কারনে অতিরিক্ত রক্তক্ষরনে আন্না বেগম (২৩) নামে এক প্রসুতির মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ খবরে প্রসুতির স্বজনরা হাসপাতালে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্বজনদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। পরে হাসপাতালের ব্যবস্থাপক হযরতকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। নিহত প্রসুতি আন্না সিদ্ধিরগঞ্জের সিআইখোলা বালুর মাঠ এলাকার সুমনের স্ত্রী।
জানাযায়, নিহত আন্না মা হসপিটাল এন্ড ল্যাব এর প্রাইভেট ডাক্তার নিলুফার আক্তারের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধিন ছিল। হাসপাতালের প্রশাসনিক সচিব মোঃ মাসুদ খানের পরামর্শে গত রোববার রাতে আন্নাকে সন্তান প্রসব করার জন্য মা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সোমবার বেলা ১১ টায় হাসপাতালে কর্মরত অদক্ষ নার্স শিউলি ও রুনার সহায়তায় আন্নাকে সিজার করা হয়। প্রথমে ২ ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করে সিজার শুরু করা হলেও পরে রক্ত লাগে মোট ৫ ব্যাগ। ভুল সিজারে সন্তান প্রসব হলেও মা-র অবস্থা হয়ে পড়ে খুবই খারপ। নার্সরা সন্তানের নাড় কাটার সময় প্রসুতির রক্ত চলাচলের রগ কেটে ফেলে। এতে কোন ভাবে রক্ত করণ বন্ধ না হলে মূমূর্ষ আবস্থায় বিকেল ৫ টায় রোগীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। সেখানে আইসিইউ খালি না থাকা ও রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় প্রাইভেট ক্লিনিকে আইসিইউতে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। পরে স্বজনরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ধানমন্ডি প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়ার পথে রোগী মারা যায়।
এদিকে নিহতের স্বজনরা উত্তেজিত হয়ে রাত ৭’টায় মা হাসপাতালে ছুটে গিয়ে ম্যানেজার হযরত ছাড়া আর কাউকে পায়নি। ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় প্রসুতি মারা যাওয়ার খবর পেয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই মোজাম্মেল সঙ্গীয় ফোর্সসহ মা হাসপাতালে ছুটে যায়। পরে রাত সাড়ে ৮ টায় ঢাকা থেকে লাশ নিয়ে আসার পর উত্তেজিত লোকজন মা হাসপাতালে হামলা ভাংচুর চালায়। মা হাসপাতালের সামনে লাশ রেখে ডাক্তারের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করতে থাকে স্বজনরা। তখন হাসপাতালের ম্যানেজার হযরত ও কর্মকর্তা কর্মচারিরা ভয়ে একটি কক্ষে গিয়ে আশ্রয় নেয়। এসময় হাসপাতালের অন্যান্য রোগী ও তাদের স্বজনদের মাঝে দেখা দেয় চরম আতঙ্ক। রোগীরা হাসপাতাল ছেড়ে চলে যায়। এসআই মোজাম্মেলের পক্ষে একা পরিস্থিতি সামাল দেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে। পরে এসআই ফারুক সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে হাসপাতালে ছুটে গিয়ে উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করে। ঘটনার বিস্তারিত শোনে রাত ৯ টায় পুলিশ হাসপাতালের ম্যানেজার হযরতকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, এর আগেও মা হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় একাধিক রোগী মারা গেছে। অদক্ষ হাতুড়ে ডাক্তার দিয়ে পরিচালিত এ হাসপাতালটি চিকিৎসার নামে রোগীদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে।
এদিকে জেলা সিভিল সার্জন বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ রহস্য জনক কারণে হাসপাতালটির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহন করছে না বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।