নারায়ণগঞ্জ,বিজয় বার্তা ২৪
সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড়ে পরিবহনের টিকিট কাউন্টার ও প্রিন্টিং ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংঘর্ষ, ভাংচুর লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় উভয় পক্ষের ৬ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় শরীফ ও শাহীনকে নারায়ণগঞ্জ খানপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে মঙ্গলবার দুপুরে এ ঘটনাটি ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষ থানায় ২টি পৃথক অভিযোগ দায়ের করেছে।
জানা গেছে, শিমমরাইল মোড় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উত্তর পাশে মুক্তিস্বরণী এলাকার এশিয়া ক্লাসিক পরিবহনের টিকিট কাউন্টার মালিক কবিরের ছোট ভাই শরীফ দুপুর ১’টায় হকসুপার মার্কেটের সামনে একটি দোকানে বসে চা পান করছিল। এসময় চা দোকানদারের সাথে শরীফের বাকবিতন্ডা হলে হকসুপার মার্কেটের ইকবাল গ্রাফিক্স কম্পিউটার দোকানের মালিক ইকবাল হোসেনের পিতা মুকবুল হোসেন চা দোকানদারের পক্ষ হয়ে শরীফকে থাপ্পর মারে। এ নিয়ে সংঘর্ষের সূত্রপাত হলে হকসুপার মার্কেটের অন্যান্য ব্যবসায়ীরা মিলে শরীফ (৩০), শাহীন (২৮) ও আলীকে(৩৫) এলোপাথারি ভাবে পিটিয়ে আহত করে। এ খবর পেয়ে কাউন্টার ব্যবসায়ীরা একত্র হয়ে হকসুপার মার্কেটে গিয়ে হামলা চালিয়ে পিন্টিং ব্যবসায়ী মোশারফ, রুবেল ও হায়দারকে মারধর ও কয়েকটি দোকানে ভাংচুর চালায়।
অপরদিকে হকসুপার মার্কেটের ব্যবসায়ীরা একত্রিত হয়ে এশিয়া ক্লাসিক পরিবহনের টিকিট কাউন্টারে পাল্টা হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর, লুটপাট চালায়। খবর পেয়ে থানার এসআই মোজাম্মেল হক সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে পরিস্থিত শান্ত করে।
এশিয়া ক্লাসিক পরিবহনের টিকিট কাউন্টার মালিক কবির হোসেনের ভাই মোঃ মনির হোসেন জানায়, হকসুপার মার্কেটের প্রিন্টিং ব্যবসায়ী নামধারী সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে কাউন্টারের ক্যাশ থেকে নগদ ১ লাখ ২০ হাজার টাকা ও কোম্পানীর স্বাক্ষর করা সাড়ে ৩‘শ টাকা করে ৫‘শ টিকিট যার মোট মূল্য ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকার টিকিট লুট করে নিয়ে যায়। এছাড়াও কাউন্টারের চেয়ার, টেবিল, গ্লাস ভাংচুর করে আরো আনুমানিক ৩০ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি করে। কাউন্টারে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট ও ৩ জনকে মারধর করার অভিযোগে হকসুপার মার্কেটের প্রিন্টিং ব্যবসায়ী মুকবুল হোসেন, ইকবাল হোসেন, মোশারফ, তাজু ও পিন্টুর নাম উল্লেখ ও আরো অজ্ঞাত ১০/১২ জনকে আসামি করে আবুল কাশেমের ছেলে মনির হোসেন(৩৮) বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিকেল ৫ টায় থানার এসআই সুজন বিশ্বাস সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। কাউন্টারে হামলার সত্যতা পাওয়া গেছে বলে স্বীকার করেছেন এসআই সুজন বিশ্বাস।
অপর দিকে হকসুপার মার্কেটের ব্যবসায়ী ইকবাল হোসেন জানায়, একজন চা দোকানদারের সাথে অন্যায় ভাবে বাকবিতন্ডা দেখে আমার পিতা মুকবুল হোসেন প্রতিবাদ করায় কাউন্টারম্যান শরীফের নেতৃত্বে ১৫/১৬ জন লাঠি-সোটা নিয়ে হামলা চালায়। এসময় হামলাকারীরা মোশারফ, হায়দার, রুবেলকে মারধর ও হায়দার অপসেট প্রেস দোকানের কয়েক লাখ টাকার একটি মেশিন এবং আরো ৪/৫ টি দোকানের কম্পিউটার, প্রিন্টার ভাংচুর করেছে। যার মূল্য দেড় লক্ষাধিক টাকা হবে। এ হামলা মারধরের ঘটনায় আহত প্রিন্টিং ব্যবসায়ী মোশারফ বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ করে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা এসআই সুজন বিশ্বাসের সাথে কথা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। কাউন্টারে হামলা ভাংচুরের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। তবে আসামি পক্ষের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ৩ জন আহত হয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে। কাউন্টার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শিপন ও মার্কেট মালিক পক্ষের লোকজন দু’পক্ষকে নিয়ে বসে সামাজিক ভাবে মিমাংসা করার দায়িত্ব নিয়েছে। সাত দিনের মধ্যে মিমাংসা না হলে দোষিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে বলে তিনি জানান।