বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী নেতা সাব্বির আলম খন্দকার হত্যা মামলায় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির খানের বিরুদ্ধে ২য় পর্যায়ে আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করা হয়েছে।
সোমবার (৬ মার্চ) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (প্রথম) আদালতের বিচারক উম্মে সরাবন তহুরার আদালতে এই সাক্ষ্য প্রদান করা হয়।
আজ আদালতে মামলার বাদী বিএনপির চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা ও নিহত সাব্বির আলমের বড় ভাই অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার ২য় দফায় এই সাক্ষ্য প্রদান করেন। এসময় আসামি পক্ষের আইনজীবীরা তৈমূর আলম খন্দকারকে জেরা করেন। এদিকে জাকির খানের পক্ষের আইনজীবী তার জামিন আবেদন করে। এসময় আদালত জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণে নির্দেশ প্রদান করেন এবং ৭ মে পরবর্তী শুনানীর দিন ধার্য্য করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জানান জানান, সাব্বির আলম হত্যা মামলায় জাকির খানের বিরুদ্ধে ২য় পর্যায়ে সাক্ষগ্রহনের সময় বাদীকে জেরা করা হয়েছে। আসামী পক্ষের আইনজীবী জাকির খানের জামিন আবেদন করলে আদালত আবেদন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেন। সেই সাথে ৭ মে পরবর্তী শুনানীর দিন ধার্য্য করেন।
আদালতের এডিশনাল পিপি আব্দুর রহিম বলেন, নিহত সাব্বির আলমের বড় ভাই তৈমূর আলম খন্দকারকে আসামি জাকির খানের বিরুদ্ধে জেরা করেন আসামী পক্ষের আইনজীবীরা। এর আগে তাকে প্রথম দফায় আংশিক জেরা করেন। তবে আজকেও আসামী পক্ষের আইনজীবীরা পূর্ণাঙ্গ জেরা করতে পারেনি। আদালত আগামী ৭ মে সাক্ষ্যগ্রহণের পরবর্তী তারিখ ধার্য করেছেন আদালত।
এদিকে বাদী পক্ষের আইনজীবী ও হত্যার শিকার ব্যবসায়ী নেতা নিহত সাব্বির আরম খন্দকারের মেয়ে ফাতেমা-তুজ-জোহরা খন্দকার সবনম অভিযোগ করে বলেন, আসামী পক্ষের আইনজীবী স্বাক্ষীদের আংশিক জেরা করে কালক্ষেপন করছেন। তবে এতদিন পর আসামি ধরা পড়ায় বিচারিক কার্যক্রম পূনুরুজ্জিবিত হয়েছে। আমার বাবার খুনের বিচারের ব্যাপারে আশাবাদী।
মামলার বাদী ও নিহতে বড় ভাই তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, আমার ভাইকে হত্যার দিন একটি সরকারী একটি প্রতিষ্ঠানের কাজে দেশের বাইরে ছিলাম। পরে খবর পেয়ে দেশে ছুটে এসে আমার ভাইয়ের ময়না তদন্ত শেষে দাফন সম্পন্ন করি। পরে সে দিন রাতে এজহার দায়ের করি। এই ঘটনায় সাব্বির তার জীবদ্দশায় আমাকে যা বলেছে এবং পরিবার থেকে যা জানতে পেরেছি সেই কথাগুলো আদালতকে জানাই। তবে আসামি পক্ষেল আইনজীবীরা তাদের জেরা শেষ করতে পারেনি। আমার ভাই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে মারা গেছে। সেতো আর ফিরে আসবে না, তবে আমরা যেন সুবিচার পাই এব্যপারে সকলের সহযোগীতা কামনা করি।
আসামী জাকির খানের পক্ষের আইনজীবী রবিউল হোসেন বলেন, জাকির খানের বিরুদ্ধে তৈমূর আলম খন্দকার সাক্ষ্য দিয়েছেন। আমরা ইতিপূর্বে জেরা করেছিলাম। আজকে পুনরায় জেরা করেছি। সাব্বির হত্যা মামলাটি চাঞ্চলকর মামলা। এই মামলাটি রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। আদালতকে জাকির খানের পক্ষে আমরা এই বিষয়টা প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছি।
আরো জেরা হবে এবং পরবর্তী সাক্ষ্য শুনানীতে মামলার প্রকৃত বিষয় বুঝ যাবে। আজকে জাকির খানের জামিন আবেদন করেছিলাম আদালত না মঞ্জুর করেছেন। পরবর্তী শুনানীতে জামিন মঞ্জুর হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করছি।
প্রসঙ্গত, জাকির খান নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী সাব্বির আলম হত্যা মামলার আসামি ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি। তিনি দীর্ঘদিন ধরে পলাতক ছিলেন। তার নামে একাধিক হত্যা, চাদাবাজী ও অস্ত্র মামলা মামলা রয়েছে। পরিচয় গোপন করে গত এক বছর পরিবারসহ বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় বসবাস করছিলেন। পরে গত ৩ সেপ্টেম্বর ভোরে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তাকে আগ্নেআস্ত্র সহ গ্রেপ্তার করে র্যাব।