বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
নারায়ণগঞ্জের বহুল আলোচিত সাত খুনের মামলার দ্বিতীয় তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ পুলিশের ৫ সদস্যের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। সাক্ষ্য প্রদানকারীরা হলো- সাত খুন মামলার দ্বিতীয় তদন্তকারী কর্মকর্তা ওই সময়ের ডিবির এস আই (বতর্মান পরিদর্শক) আবদুল আউয়াল, পুলিশের এসআই আবুল খায়ের, মহিবুল্লাহ ও হারুন মিয়া এবং এএসআই আতাউর রহমান। এ সময় আসামীপক্ষের আইনজীবিরা তাদের জেরা করেন। শুনানী শেষে আদালত আগামী ২২ আগস্ট পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেছেন। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সাত খুনের ঘটনায় গ্রেফতার নূর হোসেন, তারেক মুহাম্মদ সাঈদ সহ ২৩ আসামীর উপস্থিতিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালতে ওই ৫ জনের সাক্ষ্য ও জেরা গ্রহণ করা হয়।
নারায়ণগঞ্জ জেলা আদালতের পিপি (পাবলিক প্রসিকিউটর) অ্যাডভোকেট ওয়াজেদ আলী খোকন জানান, সাক্ষ্য প্রদানকারী এই পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তা সাত খুনের ঘটনার পর বিভিন্ন সময়ে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসামীদের গ্রেফতারের পর তাদের ঠিকানা ও বিস্তারিত পরিচয় শনাক্তসহ যাবতীয় ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহের দায়িত্ব পালন করেছেন। এদের মধ্যে এস আই আবদুল আউয়াল খন্ডকালীন তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন।
জানা গেছে, সাত খুনের পর প্রথমে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা হয়। তখন মামলাটি তদন্ত করেন থানার এস আই ফজলুল হক। ইতোমধ্যে তিনি মারা গেছেন। পরে মামলাটি ডিবিতে হস্তান্তর করা হলে ২০১৪ সালের ৩ মে হতে ৭ মে পর্যন্ত তদন্ত করেন ডিবির তদন্তকারী কর্মকর্তা আউয়াল তদন্ত করেন। শেষে তিনি বদলী হলে মামলাটির তদন্তভার দেওয়া হয় ওসি মামুনুর রশিদ মন্ডলকে। তিনিই মামলাটি তদন্ত করে ২০১৫ সালের ৮ এপ্রিল চার্জশিট দাখিল করেন। এখন পর্যন্ত সাতখুন মামলার দুই মামলায় মোট ১০৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে।
সাত খুনের ঘটনায় দুটি মামলা হয়। একটি মামলার বাদী নিহত আইনজীবী চন্দন সরকারের মেয়ে জামাতা বিজয় কুমার পাল ও অপর বাদী নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি। দুটি মামলাতেই অভিন্ন সাক্ষী হলো ১২৭ জন করে।
প্রসঙ্গত ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, তার বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন ও গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম এবং আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তাঁর গাড়িচালক ইব্রাহীম অপহৃত হন।
পরে ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ছয়জনের ও ১ মে একজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তদন্ত শেষে প্রায় এক বছর পর গত ৮ এপ্রিল নূর হোসেন, র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। গত ৮ ফেব্রুয়ারি সাত খুনের দুটি মামলায় নূর হোসেন ও র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এ মামলায় নূর হোসেন ও র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ মোট ২৩ জন কারাগারে আটক রয়েছেন। আর চার্জশিটভুক্ত আসামিদের মধ্যে এখনো ১২ জন পলাতক রয়েছে।