বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
হিন্দু মুসলিম সকলে সম্মিলিত ভাবে মহাতীর্থ স্থান লাঙ্গলবন্দের উন্নয়নের ঘোষণা দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান। তিনি বলেছেন, সরকার লাঙ্গলবন্দের উন্নয়নের জন্য ৩’শ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। নারায়ণগঞ্জে আমরা হিন্দু, মুসলিম, সকলে মিলে পারস্পারিক সহযোগীতা মাধ্যমে এই তীর্থস্থানটি উন্নয়ন ঘটাবো। যাতে করে বিশ্বের অন্যান্য দেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা একবারের জন্য হলেও লাঙ্গলবন্দে ¯œান করতে আসেন।
বৃহস্পতিবার ১৪ জুলাই সন্ধ্যা ৬টায় নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের ৩য় তলা শীতলক্ষ্যা কমিউনিটি সেন্টারে মহাতীর্থ লাঙ্গলবন্দের উন্নয়নে হিন্দু ধর্মের নেতৃবৃন্দের সাথে মত বিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সেলিম ওসমান এসব কথা বলেন। এ বছর শান্তিপূর্ন পরিবেশে লাঙ্গলবন্দ ¯œান উদযাপিত হওয়ায় তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার সহ জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সকলকের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
মহাতীর্থ লাঙ্গলবন্দ ¯œান উদযাপন পরিষদের সভাপতি সরোজ কুমার সাহার সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন, জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক আবুল জাহের, মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কর্মাস এন্ড ইন্ডাস্ট্রির এর নব নির্বাচিত সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল, বাংলাদেশ ক্লথ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রবীর কুমার সাহা, বাংলাদেশ ইয়ার্ন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি লিটন সাহা, মহানগর আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি রবিউল হোসেন, কলাগাছিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন প্রধান, বন্দর ইউনিয়নের সভাপতি এহসান উদ্দিন, ধামগড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুম আহম্মেদ, লাঙ্গলবন্দ পূজা উদযাপন পরিষদের সাবেক সভাপতি পরিতোষ কান্তি সাহা, শংকর কুমার সাহা, পূজা উদযাপন পরিষদ নারায়ণগঞ্জ জেলা সাধারণ সম্পাদক সুজন সাহা সহ অন্যান্য সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
সভা পরিচালনা করেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ নারায়ণগঞ্জ মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক শিপন সরকার শিখন।
হিন্দু সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে সেলিম ওসমান বলেন, এই শহরটির নাম নারায়ণগঞ্জ, নদীটি শীতলক্ষ্যা। এই নাম এখনো কেউ বদলিয়ে দেয়নি। কিন্তু হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষেরা তাদের ঐতিহ্যকে হারিয়ে ফেলছেন। নারায়ণগঞ্জের তোলারাম কলেজ, অধ্যক্ষ খগেন্দ্র নাথ চক্রবর্তীর অবদান, খানপুর ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের জমি রনদা প্রসাদ সাহা দান করে গেছেন। কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোথাও অধ্যক্ষ খগেন্দ্র নাথের নাম নেই। উনারা তো শুধু হিন্দুদের জন্য শিক্ষার ব্যবস্থা করেননি। সেখানে মুসলমানের সন্তানেরাও লেখাপড়া করে শিক্ষার আলোয় আলোকিত হয়েছেন। ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল কেমন নাম? কেন হাসপাতালটির নাম আরপি সাহা হাসপাতাল হলো না? আপনাদের ঐতিহ্যকে আপনাদের ধরে রাখতে হবে। লাঙ্গলবন্দ উন্নয়নের জন্য আপনারা নবীনদের এগিয়ে নিয়ে আসুন। যাদের ধর্ম সম্পর্কে ভাল জ্ঞান রয়েছে, শিক্ষিত, ভদ্র, কম্পিউটারে পারদর্শী সেই সকল যুবকদের এগিয়ে নিয়ে আসুন। ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য কাজ করে তাদের হাতে নেতৃত্ব তুলে দিন।
তিনি বলেন, কোন ধর্মই অন্যের ধর্মের উপর আঘাত করার কথা বলে না। যেমন হিন্দু ধর্মে বলে না তেমনি ইসলাম ধর্মেও বলেন না। ইসলাম শান্তির কথা বলে। আমরা আগে শুনতে পেতাম মাদ্রাসায় জঙ্গী প্রশিক্ষন দেওয়া হয়। কিন্তু গুলশানের ঘটনায় দেখা গেছে জঙ্গীরা প্রাইভেট বিশ্ব বিদ্যালয়ের ছাত্র। গুলশানের ঘটনায় যারা জড়িত তারা সবাই উচ্চ শিক্ষিত ও বিত্তশালী পরিবারের সন্তান। তাই প্রতিটি অভিভাবকের উচিত তাদের সন্তানদের প্রতি খেয়াল রাখা। তাদেরকে শুধু মা বাবার মত শাসন করলেই চলবে না। তাদের সাথে বন্ধুর মত মিশতে হবে। তাদের হতাশার কথা গুলো জানতে হবে। তাদেরকে সঠিক পরামর্শ দিয়ে তাদের হতাশা দূর করতে হবে যাতে করে তারা বিপদগামী না হয়ে উঠে। তাই আমি আহবান রাখবো প্রত্যেকে নিজেদের সন্তানদের প্রতি নজর রাখবেন।
তিনি আরো বলেন, গত দুই বছরে আমার সব থেকে বড় পাওয়া আমি সকল রাজনৈতিক দল ও সকল ধর্মের মানুষদের নিয়ে কাজ করতে পেরেছি। সবাইকে নিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করাই হচ্ছে উন্নয়নের প্রথম কাজ আমি সেটা করতে পেরেছি। আপনারা খুব শীঘ্রই নারায়ণগঞ্জ কলেজে ১০ তলা ভবন দেখতে পাবেন। বন্দরে কদম রসুল কলেজকে সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে দেখতে পাবেন। আর নবীগঞ্জ দিয়ে শীতলক্ষ্যা সেতু হয়ে গেলে আমাদের বন্দরের সন্তানেরা নিবিঘের্œ তাদের লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারবে। তাদেরকে আর কষ্ট করে জঙ্গী তৈরি করা প্রাইভেট বিশ্ব বিদ্যালয়ে গিয়ে পড়তে হবে না।