স্টাফ রিপোর্টার,বিজয় বার্তা ২৪
কে বা কারা অভিজিৎ রায়কে হত্যা করলো সে প্রশ্নের উত্তর গত এক বছরেও মেলেনি। গত এক বছর ধরে ছেলের হত্যাকান্ডের বিচার চেয়ে অভিজিৎ রায়ের বাবা এখন কান্ত। ছেলের হত্যাকান্ডের তদন্তে অগ্রগতি কতোটুকু হয়েছে সেটি জানতে তিনি বার বার গিয়েছেন গোয়েন্দা অফিসে।
কিন্তু বিচার নিয়ে আশাবাদী হওয়ার মতো কোনো উত্তর পাননি অভিজিৎ রায়ের বাবা অধ্যাপক অজয় রায়।
গত বছর বইমেলার কাছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় রাতে শত শত মানুষের সামনে অভিজিৎ রায়কে প্রকাশ্যে কুপিয়ে মারা হয়।
এ সময় অভিজিৎ রায়ের স্ত্রী রাফিদা বন্যা আহমেদ ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত হন।
ঢাকায় তার বাসায় বিবিসি বাংলার সাথে এক সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক অজয় রায় বলেন, একজন ক্ষতিগ্রস্ত পিতা হিসেবে বিচার নিয়ে তার আশার জায়গা ক্রমশ সংকুচিত হয়ে আসছে।
তিনি বলেন, সত্যিই কি আমি অভিজিৎ হত্যার বিচার পাবো? আমাদের দেশে যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি গড়ে উঠছে, এটা বিপজ্জনক। তিনি বলেন, তদন্তে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না।
সেজন্য তদন্তকারীদের অফিসে গিয়ে অধ্যাপক রায় আর কোনো খোঁজ-খবর করেন না। এমন প্রেক্ষাপটে অভিজিৎ রায়ের বাবা অধ্যাপক অজয় রায় ক্রমশ হতাশ হয়ে পড়ছেন।
অধ্যাপক অজয় রায় বলেন, তদন্তে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হওয়ার পেছনে দুটি কারণ থাকতে পারে। হয়তো তদন্তের বিষয়ে তদন্তকারীদের অনীহা রয়েছে, নতুবা তদন্ত কাজে তারা অদক্ষ।
অভিজিৎ হত্যাকান্ডের জন্য সন্দেহবশত যাদের আটক করা হয়েছে তাদের সম্পৃক্ততা এখনো প্রমাণিত নয়। তদন্তকারীরা ইতোমধ্যে বেশ কয়েকবার জানিয়েছেন যে, তদন্তে অগ্রগতি হয়েছে।
এক বছর পার হলেও এখনো তদন্ত শেষ করতে পারেনি পুলিশ। তদন্তে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই সহায়তা করছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের কর্মকর্তারা।
অভিজিৎ হত্যাকান্ডের বিচারের বিষয়ে সরকারের দিক থেকেও আশার বানী শোনানো হচ্ছে।
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলছেন, অভিজিৎসহ অন্যান্য ব্লগার, প্রকাশক হত্যাকারীদের বিচারের বিষয়ে সরকার বদ্ধপরিকর। কিন্তু এতে খানিকটা সময় লাগাছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, অভিজিৎ হত্যাকারীরা রেহাই পাবে না। কারণ এ ধরনের চোরাগোপ্তা হামলাকারীদের বিভিন্ন সময় শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে।
পুলিশ বিভিন্ন সময় জানিয়েছে, আনসারউল্লাহ বাংলা টিম নামের গোপন একটি উগ্রপন্থী সংগঠন লেখক, প্রকাশক এবং ব্লগার হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত।
২০১৩ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ২ বছরে ৫ জন ব্লগার এবং একজন প্রকাশককে হত্যা করা হয়েছে।
এর মধ্যে ব্লগার আহমদে রাজিব হায়দার হত্যাকান্ডের বিচার শেষ হয়েছে নিম্ন আদালতে। বাকি হত্যাকান্ডগুলোর বিচার এখনো অনিশ্চিত।