বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
শীতের সকালে ঘুম থেকে উঠা নিয়ে গালাগালের ক্ষোভকে কেন্দ্র করে হেলপার আকাশকে গলাটিপে হত্যা করে মহাসড়কের পাশে লাশ ফেলে পালিয়ে যায় ঘাতক ট্রাক চালক। শুরুতে পুরো ঘটনাটি ক্লুলেস থাকলেও পকেটে থাকা মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে প্রথমে পরিচয় পরে উদঘাটন হলো হত্যাকাণ্ডের কারণ। ছদ্মবেশে গ্রেফতার করা হয় সেই চালক আরিফুর রহমান টিপুকে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের মিডিয়া উইং হাফিজুর রহমান বুধবার এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ১৬ জানুয়ারি দুপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে বন্দর উপজেলার জাঙ্গাল এলাকা থেকে আকাশের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি কুমিল্লা জেলার কোতোয়ালি থানার সুজানগর এলাকার মোতালেব মিয়ার ছেলে। পেশায় একজন খণ্ডকালীন ট্রাক হেলপার।
হত্যাকাণ্ডের পর আকাশের বাবার দায়ের করা মামলার তদন্তকারী অফিসার কখনও চালক, কখনও হেলপার বা ব্যবসায়ী পরিচয়ে ছদ্মবেশে খুঁজতে থাকেন সেই চালককে। চালকের নাম পাওয়ার পর তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় পাওয়া যায় তার ঠিকানা। চাল ব্যবসায়ী সেজে কাঙ্খিত সেই চালকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। সময় অনুযায়ী ২৯ জানুয়ারি চলে আসে ট্রাকসহ চালক। গ্রেফতার করা হয় টিপুকে।
তিন দিনের পুলিশ রিমাণ্ডে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে স্বীকার করেন তিনিই খুন করেছেন ভিকটিম আকাশকে। আসামির দেয়া তথ্য ও শনাক্তমতে হত্যাকাণ্ডের সময় ব্যবহৃত ট্রাক উদ্ধার উদ্ধার করা হয়। ১ ফেব্রুয়ারি আদালতে ঘটনার আদ্যোপান্ত বর্ণনা দিয়ে দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে গ্রেফতারকৃত ট্রাক চালক আসামি আরিফুর রহমান টিপু।
টিপু জানান, ‘গত ১৩ জানুয়ারি রাতে সে ও ভিকটিম আকাশ গাঁজা সেবন করে। তাদের ট্রাকে ছিলো পুরাতন বই ও কাগজ যা রাজধানীর মাতুয়াইলে পৌঁছে দিতে হবে। কুমিল্লা থেকে রওনা হয়ে শুক্রবার রাতে তারা শিমরাইল স্ট্যান্ডে পৌঁছায়। সেখানে রাত্রিযাপন করে পরদিন ১৪ জানুয়ারি ভোরে আকাশকে ঘুম থেকে উঠে গাড়িতে থাকা মালামাল আনলোড করার নির্দেশ দেয় টিপু। কিন্তু ঘুম থেকে উঠতে অস্বীকৃতি জানায় আকাশ। এতে চালক টিপু তাকে গালাগাল করেন। প্রতিউত্তরে আকাশও গালি দিলে টিপু তার গলা চেপে ধরে। ট্রাক সিটের ভেতরেই হত্যা করে তাকে। হত্যা শেষে ট্রাক নিয়ে মাতুয়াইলে পণ্য খালাস করে পুনরায় কুমিল্লার দিকে রওনা দেন। সেখানেই চলার পথে জুম্মার নামাজের আগে মহাসড়কে আকাশের লাশ ফেলে পালিয়ে যায়।’