বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
২০০৩ সালের ৩ নভেম্বর ফতুল্লার বিসিকে প্যানটেক্স ড্রেস লিঃ এর শ্রমিকদের ৮ ঘন্টা কাজ, ওভারটাইমে দ্বিগুন মজুরী, দুই বোনাসসহ ১৮ দফা দাবীতে গড়ে ওঠা আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত হয় ঐ কারখানার শ্রমিক আমজাদ হোসেন কামাল। সেই থেকে নারায়ণগঞ্জের বাম ও প্রগতিশীল শ্রমিক সংগঠনগুলো প্রতি বছর ৩ নভেম্বর গার্মেন্টস শ্রমিক অভ্যুত্থান দিবস হিসেবে দিনটি পালন করে আসছে।
৪ নভেম্বর শুক্রবার বিকাল ৩টায় নারায়ণগঞ্জ জেলা শ্রমিক কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে ২নং রেলগেইটে এক শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা শ্রমিক কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদের সমন্বয়ক শ্রমিক নেতা হাফিজুল ইসলাম। বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ণ কেন্দ্রের কেন্দ্রিয় নেতা এড. মন্টু ঘোষ, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রিয় সহ-সভাপতি হিমাংশু সাহা, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি আবু নাঈম খান বিপ্লব, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের জেলা সাধারণ সম্পাদক বিমল কান্তি দাস, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি হাফিজুর রহমান, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি সেলিম মাহমুদ, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলার নেতা এইচ. রবিউলসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকার শ্রমিক শ্রেণীর সাথে বেইমানী করছে। প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, এমপিসহ সরকারী কর্মচারীদের বেতন দ্বিগুন করার সময় অবিলম্বে সকল শ্রমিকের মজুরী বাড়ানো হবে বলে ঘোষনা করেছিলেন। কিন্তু আজও পর্যন্ত তার কোন উদ্যোগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। এ কারনেই শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে। আমরা দাবী করেছি জাতীয় ন্যূনতম মজুরী ঘোষণা করতে হবে। সরকারি কর্মচারীদের বেতনের সাথে সংগতি রেখে সকল শ্রমিকের মজুরী বৃদ্ধি করতে হবে। শ্রম আইন, বিধিমালা, প্রস্তাবিত ইপিজেড আইনের শ্রমিক স্বার্থবিরোধী সকল ধারা বাতিল করতে হবে। ছাঁটাই, নির্যাতন ও দমন-পীড়ন বন্ধ করতে হবে। সকল শ্রমিকদের অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার দিতে হবে। কর্মক্ষেত্রে জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। টাম্পাকো, রানা প্লাজা ও তাজরিন ফ্যাশন দূর্ঘটনার জন্য দায়ী মালিকের সর্বোচ্চ শাস্তি এবং নিহত-আহত শ্রমিকদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র, ছুটি, বোনাসসহ সকল আইনী অধিকার দিতে হবে। শ্রমিকদের জন্য রেশন, বাসস্থান ও বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন সরকার স্বেচ্ছায় শ্রমিকদের মজুরী বাড়াবে না। আন্দোলন করেই শ্রমিকদের মজুরী বৃদ্ধি করতে হবে। গার্মেন্টস শ্রমিক সহ সকল সেক্টরের শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। সরকারী কর্মচারীদের বেতন দ্বিগুন করা হয়েছে। সে অনুপাতে দেশের সকল শ্রমিকের মজুরী বৃদ্ধি করতে হবে। শ্রমিক স্বার্থবিরোধী সকল কালো আইন বাতিল করতে হবে। আমজাদ হোসেন কামালের রক্তের উপর দাড়িয়ে আমরা আজ এই শপথ করছি। সমাবেশ শেষে একটি বিশাল লাল পতাকা মিছিল শহর প্রদক্ষিন করে।