বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
বন্দরে মদনপুরে নাগিনা জোহা উচ্চ বিদ্যালয় এবং ধামগড়ে শেখ জামাল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চলতি অর্থাৎ নভেম্বর মাস থেকে বিনা বেতনে পড়ালেখা করতে পারবে। বৃহস্পতিবার দুপুরে স্কুল দুটির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে স্কুল দুটির নির্মাতা এমপি সেলিম ওসমান স্কুল দুটিতে সম্পূর্ন বেতন ফ্রি করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। উদ্বোধন হওয়া অপর স্কুল শামসুজ্জোহা এমবি ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়টি ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারী থেকেই শিক্ষার্থীরা বিনা বেতনে পড়ালেখা করে আসছে।
এমপি সেলিম ওসমান বেতন ফ্রি করে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পূর্বে মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের নাগিনা জোহা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেছিলেন, সেলিম ওসমান তার নিজের পকেট থেকে ৩০ কোটি টাকা ব্যয় করেছেন। যেখানে সবাই বিনা বেতনে পড়ালেখা করছে। অতত্রব তোমাদেরকে এই সুযোগটা নিতে হবে। তোমাদেরকে ভালভাবে পড়ালেখা করে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। তোমাদেরকে কথা দিতে হবে তোমারা মাদকে গ্রাস হবে না। মাদককে তোমরা না বলবে, জঙ্গীবাদকে তোমরা না করবে। এ সময় মন্ত্রীর সাথে শিক্ষার্থীরা হাত উচিয়ে মাদক ও জঙ্গীবাদকে না বলে।
মন্ত্রীর বক্তব্য শেষ হওয়ায়র পর এমপি সেলিম ওসমান মাইক নিয়ে বলেন, মন্ত্রী সাহেব হয়তো বা ভুল করে বলে ফেলেছেন নাগিনা জোহা স্কুলের শিক্ষার্থীরা বিনা বেতনে পড়ালেখা করছে। কিন্তু মন্ত্রী সাহেব তো ভুল বলতে পারেন না। তাই উনার প্রতি শ্রদ্ধা এবং সম্মান রেখে আজকে থেকে নাগিনা জোহা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য বেতন ফ্রি করে দেওয়া হলো। একইভাবে তিনি শেখ জামাল উচ্চ বিদ্যালয়ের উদ্বোধন কালেও স্কুলটির শিক্ষার্থীদের বিনা বেতনে পড়ালেখা করার ঘোষণা দেন।
বেতন ফ্রি করে দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, সেলিম ওসমান যেমন আমাকে সম্মান দিয়ে সবার বেতন ফ্রি করে দিলো। তখন আমিও সেলিম ওসমানকে সম্মান জানিয়ে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে হাজীগঞ্জ-নবীগঞ্জ দিয়ে ফেরী চলাচল করার ব্যবস্থা করে দিবো। সেতু না হওয়া পর্যন্ত এই ফেরী সার্ভিস চলবে। আর আপনাদের সেতু দাবী করতে হবে না। আগামী ৬ মাসের মধ্যে সেতুর কাজ দৃশ্যমান হবে।
এ সময় উপস্থিত শিক্ষার্থী সহ সবাই একত্রে শ্লোগান তুলেন ‘সেলিম ভাই আবারো এমপি চাই’। মন্ত্রী তখন সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আপনারা সেলিম ওসমানকে আবারো এমপি চান’? সকলে একত্রে ‘হ্যাঁ’ বলেন জবাব দেন।
এরপর মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি এখানে এসে মানুষের ভালবাসা পেয়ে মুগ্ধ। সেলিম ওসমানকে মানুষ এতো ভালবাসে, একজন মানুষ জনগনের কাছে এতো জনপ্রিয় হতে পারে নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করতাম না। মানুষের উপস্থিতি দেখে আমি অবাক হয়ে গেছি। সেলিম ওসমান আসলে কোন দলের রাজনীতি করে? সে জাতীয় পার্টির এমপি অথচ মুখে বলে বঙ্গবন্ধুর কথা আওয়ামীলীগের কথা। আসলে সেলিম ওসমানকে এমপি হিসেবে আপনাদের চাইতে হবে না। যাকে মানুষ এতো ভালবাসে সেখানে সে ছাড়া আর কে এমপি হবে। আপনাদের কথাটা আমি আপাকে ( শেখ হাসিনা) বলবো। এরশাদ সাহেবকেও বলবো। সেলিম ওসমান আবারো এমপি হবে।
বন্দর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম এ রশিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য হোসনে আরা বাবলী, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, জেলা প্রশাসক (ডিসি) রাব্বী মিয়া, জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মঈনুল হক, জেলা আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যান আব্দুল হাই, জাতীয় পার্টির জেলার সভাপতি আবু জাহের, মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি সানাউল্লাহ সানু, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি চন্দন শীল, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল, পরিচালক ফারুক বিন ইউসুফ পাপ্পু, বিকেএমইএর পরিচালক শাহাদাত হোসেন সাজনু, সহ সভাপতি শামীম আহমেদ, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি মজিবর রহমান, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন, মদনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালাম, ধামগড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আয়নাল হক, মুসাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মাকসুদ হোসেন, বন্দর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এহসানউদ্দিন আহাম্মদ, কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন প্রধান, আলীরটেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন, বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত আলী সহ ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, জাতীয় পার্টি এবং বন্দরের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।