বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
নারায়ণগঞ্জ-বন্দরের প্রানের দাবী ও এলাকা দুটিকে একত্রিত করতে শীতলক্ষ্যা নদীর উপর দিয়ে আরো একটি সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সেতু ও যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আগামী এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে নির্মিত হতে যাওয়া সৈয়দপুর-মদনগঞ্জ খেয়াঘাট সহ নারায়ণগঞ্জ থেকে বন্দরে যাতায়াতের সব গুলো খেয়াঘাট সরেজিমনের পরিদর্শন করবেন তিনি।
রোববার ৫ মার্চ সকালে যোগাযোগ মন্ত্রনালয়ের সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের সাথে নারায়ণগঞ্জ ও বন্দরের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে আলাপচারিতায় মন্ত্রী এ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
আলাপচারিতায় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান শীতলক্ষ্যা ৩য় সেতুর নির্মাণ কাজের চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ সেতু ও যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তাকে ধন্যবাদ জানান। সেই সাথে তিনি শীতলক্ষ্যা নদী পারাপারে সাধারণ যাত্রীদের দুর্ভোগের কথা তুলে ধরে সাধারণ মানুষের দুর্দশা লাগবে এবং নারায়ণগঞ্জ-বন্দরকে একত্রিত করার লক্ষ্যে শীতলক্ষ্যা নদীর উপর দিয়ে আরো একটি সেতু নির্মাণের কথা তুলে ধরেন। বিগত দিনে বন্দর সেন্ট্রাল খেয়াঘাট দিয়ে নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খান এবং পরিকল্পনা মন্ত্রী আ.হ.ম মোস্তফা কামালের সরেজমিনে পরিদর্শন এবং তাদের প্রতিশ্রুতির কথা তুলে ধরেন।
এ সময় সেলিম ওসমান নারায়ণগঞ্জ-বন্দরের সাধারণ মানুষের যাতায়াতের সুবিধার্থে শীতলক্ষ্যা সেতুর উপর দিয়ে আরো একটি সেতু নির্মাণের জন্য সম্ভাব্য ৪টি স্থানের কথা উল্লেখ করেন। যার মধ্যে রয়েছে বন্দর সেন্ট্রাল খেয়াঘাট, ৫নং খেয়াঘাট, বরফকল খেয়াঘাট এবং নবীগঞ্জ খেয়াঘাট। তবে নবীগঞ্জ খেয়াঘাট দিয়ে সেতু নির্মাণের ব্যাপারে বেশি জোর দিয়েছেন তিনি।
এ ব্যাপারে সেতু ও যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের শীতলক্ষ্যা নদীর উপর দিয়ে আরো একটি সেতু নির্মাণের ব্যাপারে পুরোপুরি আশ্বস্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, যেভাবেই হোক শীতলক্ষ্যা নদীর দিয়ে আরো একটি সেতু নির্মাণ করে নারায়ণগঞ্জ-বন্দর বাসীর দীর্ঘ দিনের দুর্দশার সমাপ্তি ঘটানো হবে। পাশাপাশি সেতুটি নির্মাণের মধ্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জ এবং বন্দরকে একত্রিত করে উন্নয়নকে তরানিত্ব করা হবে। সেই লক্ষ্যে আগামী এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে মদনগঞ্জ-সৈয়দপুর দিয়ে নির্মাণ হতে যাওয়া সেতুর কাজের অগ্রগতি দেখতে তিনি সরেজমিনে সেখানে উপস্থিত হবেন। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের ইঞ্জিনিয়ারদের সাথে নারায়ণগঞ্জ-বন্দরে যাতায়াতের প্রতিটি খেয়াঘাট তিনি সরেজমিনে পরিদর্শন শেষে সেতু নির্মাণের ব্যাপারে তিনি চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন। তবে তিনি সেলিম ওসমান সহ নারায়ণগঞ্জবাসীর কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে করেই হোক নারায়ণগঞ্জ এবং বন্দরের মানুষের যাতায়াতের দুর্ভোগ লাগবে তিনি আরো একটি সেতু নির্মাণ করে দিবেন।
প্রসঙ্গত, বন্দর খেয়াঘাট দিয়ে যাত্রীদের পারাপারের সুবিধার্থে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান ২০১৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকে নিজ উদ্যোগে বন্দর সেন্ট্রাল খেয়াঘাটটি টোল ফ্রি করে দিয়েছেন। যার জন্য প্রতি মাসে তার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে সাড়ে ৯লাখ টাকা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। পাশাপাশি গত ২৬ ফেব্রুয়ারী থেকে একই ভাবে তিনি নবীগঞ্জ খেয়াঘাটটিও জনসাধারণের জন্য টোল ফ্রি করে দিয়েছেন।
উল্লেখ্য ২০১৫ সালের ৩১মে নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খান সরেজমিনে বন্দর সেন্ট্রাল খেয়াঘাট পরিদর্শন করে খেয়াঘাটের যাত্রীসেবার মানোন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছিলেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে বন্দর সেন্ট্রাল খেয়াঘাট দিয়ে বেশ কিছু উন্নয়ন কাজ লক্ষনীয় হয়েছে। অপরদিকে ২০১৫ সালের ২৩ জুলাই পরিকল্পনা মন্ত্রী আ.হ.ম মোস্তফা কামাল সরেজমিনে বন্দর সেন্ট্রাল খেয়াঘাট পরিদর্শন করেন। সে সময় তিনি বন্দর সেন্ট্রাল খেয়াঘাট দিয়ে একটি ফুটওভার ব্রিজ ও নবীগঞ্জ খেয়াঘাট দিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছিলেন।