দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মাধ্যমে সাইফুর’স কোচিং সেন্টারের অনিয়ম-দুর্নীতির তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
পাশাপাশি আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মামলা দায়ের ও গোয়েন্দা সংস্থাকে বিষয়টি জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
ইংরেজি শিক্ষার নামে বিজ্ঞাপন দিয়ে দক্ষ হ্যাকার বানানোর প্ররোচনার অভিযোগ ওঠার পর এই কোচিং সেন্টারটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দেয় সরকার। তার পরপরই সরকারের সাথে সমঝোতার জন্য সাংবাদিক পরিচয়ধারী চার শিবিরকর্মীর সাথে প্রতিষ্ঠানটির বৈঠকের অভিযোগ ওঠে।
কোচিং সেন্টারটির এসব কর্মকাণ্ডের পর সোমবার (২৮ মার্চ) শিক্ষাসচিব মো. সোহরাব হোসাইনকে নির্দেশনা দেন শিক্ষামন্ত্রী।
শিক্ষাসচিবকে দেওয়া লিখিত ওই নির্দেশনায় বলা হয়, ‘এই বিষয়টি মারাত্মক। এ বিষয়ে সিরিয়াসলি ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নথিতে সিদ্ধান্ত নিয়ে অগ্রসর করা প্রয়োজন।
শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশনায় ‘থানায় জিডি (সাধারণ ডায়েরি) করা, মামলা দায়ের করা, দুদককে চিঠি দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করার’ কথা বলা হয়।
‘অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার জন্য বলা প্রয়োজন’, বলা হয় নির্দেশনায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরির পর গত ১৩ মার্চ একটি সংবাদপত্রে ‘হ্যাকারদের হাতছাড়া’ শিরোনামে বিজ্ঞাপন প্রকাশ করে সমালোচনায় আসে সাইফুর’স কোচিং সেন্টার। ওই বিজ্ঞাপনে হ্যাকার বানানোর কথা বলে ইংরেজি শেখায় প্রলুব্ধ করে সাইফুর’স।
হ্যাকার বানানোর প্ররোচনা দেওয়ায় গত ২৩ মার্চ সচিবালয়ে এক সভায় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ কোচিং সেন্টারটির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আইন-শৃঙ্খলার ওই সভায় ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের বলা হয়েছে উল্লেখ করে সচিবকে দেওয়া নির্দেশনায় বলা হয়, ‘নথি উপস্থাপন ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক’।
ইতোমধ্যে গত ২৪ মার্চ রাজধানীর রমনা থানায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা কোচিং সেন্টারটির বিরুদ্ধে জিডি দায়ের করেছেন।
সাংবাদিক পরিচয়ধারী চার শিবিরকর্মী কোচিং সেন্টারটির জিএম ও ম্যানেজারের সাথে বৈঠক করে টাকার বিনিময়ে সরকারের সাথে সমঝোতা করার প্রস্তাব দিয়েছে বলে অভিযোগ এসেছে।
হ্যাকার বানানোর বিজ্ঞাপন দেওয়ার পর এই সমঝোতার চেষ্টা নিয়ে আবারও তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, অনিয়ম-দুর্নীতি করে আবার সরকারের সাথে সমঝোতার চেষ্টার বিষয়টি নিয়ে ক্ষিপ্ত হয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
কোচিং সেন্টারটির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য শিক্ষামন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে কোচিং সেন্টারটির বিরুদ্ধে জিডির পর কীসের ভিত্তিতে ওই বিজ্ঞাপন দিলো- তার তথ্যপ্রমাণ চেয়েছে রমনা থানা পুলিশ।
সেই তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে পরবর্তীতে আইন ব্যবস্থা নিয়ে আদালতে উপন্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন রমনা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোকাম্মেল।