নারায়ণগঞ্জ,বিজয় বার্তা ২৪
নারায়ণগঞ্জ-৫(শহর-বন্দর) আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের ব্যক্তিগত তহবিল থেকে নির্মানাধীন বন্দরের মুছাপুরে শামসুজ্জোহা এমবি ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ে ৫০ লাখ টাকার চেক প্রদান করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত স্কুলটি জন্য সর্বমোট ৪ কোটি ৪২ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং সেলিম ওসমানের ব্যক্তিগত তহবিল থেকে নির্মানাধীন ৭টি স্কুলে মোট ১৫ কোটি ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা প্রদান করা হলো। চেক প্রদানের পূর্বে সেলিম ওসমান স্কুলটিকে বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর করা তার স্বপ্ন বলে ঘোষণা দেন।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় বন্দরের মুছাপুর ইউনিয়নের কাইকারটেক এলাকায় অবস্থিত শামসুজ্জোহা এমবি ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্কুল পরিচালনা পর্ষদ ও এলাকাবাসীর সাথে মত বিনিময় শেষে সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান স্কুল পরিচালনা পর্ষদের নেতৃবৃন্দের হাতে চেক তুলে দেন।
শামসুজ্জোহা এমবি ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি মোহাম্মদ মহিদউদ্দিন এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের সহ ধর্মিনী নাসরিন ওসমান।
এ সময় সেলিম ওসমান বলেন, আমি কোন রাজনীতি বুঝি না। আমার একটাই কাজ এলাকার সবাই একত্রিত থাকা। একত্রিত ভাবে এলাকার ভবিষ্যত প্রজন্মকে শিক্ষিত হিসেবে গড়ে তোলা, জনসাধারণের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা এবং শিল্পায়নের মাধ্যমে বেকারত্ব দূর করা।
তিনি আরও বলেন, এই স্কুলটিকে আধুনিক একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা হবে। প্রতিটি শ্রেনীকক্ষকে মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুম, অত্যাধুনিক কম্পিউটার ল্যাব, সাইন্সল্যাব স্থাপন করা হবে। প্রয়োজনে আমি বিভিন্ন মানুষের কাছে সহযোগীতা চাইবো। এই স্কুলটিকে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করা আমার স্বপ্ন।
এলাকাবাসীর উদ্দেশ্যে তিনি, সামনে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন। নির্বাচন নিয়ে এলাকায় কোন প্রকার বিশৃঙ্খা হলে আমার থেকে কঠোর কেউ হবে না। আমার কাছে মার্কা কোন বিষয় না। জনগন যাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন সেলিম ওসমান তার সাথেই কাজ করতে পারবে। তবে আমি একজন গোলাম আমার সাথে কাজ করতে হলে জনগনের গোলামী করতে হবে। যে জনগনের গোলামি করবে আমি তার সাথেই কাজ করবো। যে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে কাজ করবে আমি তার সাথেই কাজ করবো।
জামায়াতের উদ্দেশ্যে সেলিম ওসমান বলেন, ২১টি বছর আপনারা ভুল তথ্য জেনেছেন। আপনারা যদি ভুল স্বীকার করে উন্নয়নের কাজ করতে চান তাহলে আমি হাত বাড়িয়ে দিলাম আসেন সবাই মিলে উন্নয়নের কাজে অংশ নিন।
তিনি আরও বলেন, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ আমার বাবার মত। উনি আমাকে লাঙ্গল প্রতীক দিয়েছে। নাসিম ওসমানের মৃত্যুতে তার শূন্য আসনটি আমাকে পূরণ করে দিতে বলেছেন। উনি আমাকে রাজনীতি করতে বলেননি। উনি বলেছেন নারায়ণগঞ্জের উন্নয়ন নিয়ে উনার পরিকল্পনা ছিল। যা উনি বাস্তবায়ন করতে পারেনি। আমি যেন উনার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করি সেভাবেই আমাকে কাজ করতে বলেছেন। আমি উনার সেই পরিকল্পিত আধুনিক নারায়ণগঞ্জ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। আপনারা যাকে নির্বাচিত করবেন আমি তাদের নিয়েই কাজ করবো। তবে আমি বলবো আমি এতোদিন যাদের নিয়ে কাজ করেছি। তাদের নিয়ে কাজ করতে পারলে আরও দ্রুত বন্দরের উন্নয়ন করা সম্ভব হবে। আমি আপনাদের সকলের সহযোগীতা ও দোয়া প্রার্থনা করছি।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক আবুল জাহের, বন্দর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম এ রশিদ, জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম আহবায়ক আফজাল হাসেন, বন্দর উপজেলার চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল, মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন, বন্দর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন, কলাগাছিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন প্রধান, মদনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম এ সালাম সহ মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্রতিটি ওয়ার্ডের সদস্য সহ এলাকার প্রায় সহ¯্রাধিক নারী-পুরুষ সহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিরা।
উল্লেখ্য সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান ২০১৪ সালের ২৬ জুন উপনির্বাচনে নির্বাচিত হওয়ার পর শিক্ষারমানোন্নয়নে তার নির্বাচনী এলাকার আওতাধীন ৭টি ইউনিয়নে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে সাড়ে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৭টি স্কুল নির্মানের ঘোষণা দেন। ঘোষণা মোতাবেক এখন পর্যন্ত ১৫ কোটি ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। যার মধ্যে বন্দরে মুছাপুর ইউনিয়নে শামসুজ্জোহা এমবি ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ে ৪ কোটি ৪২ লাখ ৫০ হাজার, বন্দর ইউনিয়নে নাসিম ওসমান মডেল হাইস্কুলে ২ কোটি ৭০ লাখ, কলাগাছিয়া ইউনিয়নে আলহাজ্ব খোরশেদুন্নেছা হাইস্কুলে ১ কোটি ২৫ লাখ, পিআর সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ে ৫০ লাখ টাকা, মদনপুর ইউনিয়নে নাগিনা জোহা উচ্চ বিদ্যালয়ে ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা, ধামগড় ইউনিয়নে শেখ জামাল উচ্চ বিদ্যালয়ে ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা, সদর উপজেলার গোগনগর ইউনিয়নের পুরান সৈয়দপুর বঙ্গবন্ধু হাইস্কুলে ২ কোটি ১০ লাখ, আলীরটেক ইউনিয়নের কুড়েপার শেখ রাসেল উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬৫লাখ টাকা। এছাড়াও তিনি বন্দরে কদমরসুল কলেজের উন্নয়নে ব্যক্তিগত তহবিল ও ব্যবসায়ীদের সহযোগীতায় ১০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করার ঘোষণা দিয়েছেন।