নারায়ণগঞ্জ,বিজয় বার্তা ২৪
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দাকার বলেন, ‘আমার ভাইকে কোন ব্যক্তিগত কারণে হত্যা করা হয়নি। শুধু মাত্র সমাজসেবায় মাদক, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজের বিরুদ্ধে কথা বলার কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমার ভাই আইনশৃঙ্খলার মিটিংয়ে সন্ত্রাসী চাঁদাবাজীদের নাম উল্লেখ্য করে এবং তারা কে কত টাকা পায় এসব বলার কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে। আজও আমার ভাইয়ের হত্যা বিচার পাইনি। শুধুমাত্র টাকার কাছে হেরে গেছি। হত্যাকারীরা টাকা দিয়ে ত্রুটিপূর্ণ চার্জশীট করিয়েছে। তাই আজ বিচার পাইনি। তবে কোন হত্যাকারীদের বিচার হবেই।’
শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় নারায়ণগঞ্জ শহরের মাসদাইর এলাকার সিটি করপোরেশনের কবরস্থানে নিহত সাব্বির আলম খন্দকারের ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়াও মিলাদ মাহফিল শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
সাব্বির আলম খন্দাকার গার্মেন্ট মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফেকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ) এর সাবেক সহ সভাপতি ও ব্যবসায়ী নেতা ছিলেন।
শহীদ সাব্বির আলম খন্দকারের ১৩ তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে খুনিদের গ্রেফতার ও বিচার এবং নারায়ণগঞ্জকে সন্ত্রাস ও মাদক মুক্ত করার দাবীতে আজ শুক্রবার ১৯ শে ফ্রেবুয়ারী সকাল ৯.৩০ টায় বিকেএমইএ অফিসের (প্রেস ক্লাব ভবন) সামনে থেকে শোক র্যালীর আয়োজন করা হয়। শহীদ সাব্বির আলম খন্দকার ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে আয়োজিত উক্ত শোক র্যালীতে দল-মত, জাতি-র্ধম নির্বিশেষে শত শত নারায়ণগঞ্জবাসী যোগ দেয়।শোক র্যালী নিয়ে মাসদাইড় পৌর কবরাস্তানে গিয়ে শহীদের কবর জেয়ারত,দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে সকালে ১০টায় নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়া প্রেসক্লাব সামনে সাব্বির আলম খন্দকারের স্মরণে ও খুনিদের গ্রেপ্তার এবং বিচার দাবিতে নারায়ণগঞ্জ সর্বস্তরের সন্ত্রাস বিরোধী জনগণ ব্যানারে মানববন্ধন করে বিএনপির নেতারা। ওই মানববন্ধন থেকে হত্যাকারীদের ফাঁসি ও নারায়ণগঞ্জকে সন্ত্রাস ও মাদক মুক্ত করার দাবি জানান বক্তারা।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন খাঁন সভাপতির বকত্ব্যে বলেন, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কাথা বলায় খুন হয় সাব্বির আলম খন্দকার। কিন্তু সেই সাব্বির আলমের স্বপ্ন আজও বাস্তবায়ন হয়নি। আজ নারায়ণগঞ্জের সব জায়গায় মাদক সন্ত্রাসে ছড়িয়ে গেছে। সাব্বির আলমের হত্যার শোক আমাদের শক্তি। ঐক্যবদ্ধ শক্তিকে কাজে লাগিয়ে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আন্দোলন করবো। মাদক সন্ত্রাস মুক্ত করতে যারা এগিয়ে আসবে তার পক্ষে আমরা কাজ করবো।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন খাঁনের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সংগঠনিক সম্পাদক ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস, নগর বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি মো. সুরুজ্জামান, সংগঠনিক সম্পাদক হাসান আহম্মেদ,জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হামিদ খাঁন ভাষানী ভূঁইয়া, প্রকৌশলী মোস্তফা কামাল, নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের প্রথম যুগ্ম আহবায়ক সানোয়ার হোসেন, মহানগর ছাত্রদলের আহবায়ক মনিরুল ইসলাম সজল, যুগ্ম আহবায়ক রশিদুর রহমান রশু, শ্রমিকদল নেতা শেখ সেলিম, বিএনপি নেতা খোরশেদ আলম মোল্লা, অ্যাডভোকেট শরীফুল ইসলাম শিপলু, অ্যাডভোকেট সামসুজ্জামান খোকা, যুবদল নেতা আমির হোসেন, রফিজ, ছাত্রদল নেতা আপন প্রমুখ।
উল্লেখ্য যে ২০০২ সালের ২২ শে অক্টোবর নারায়ণগঞ্জকে সন্ত্রাস, চাঁদা ও মাদক মুক্ত করার লে নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কর্মাসে অনুষ্ঠিত জেলার ৩২ টি ব্যবসায়ী সংগঠনের সাথে সেনাবাহিনীর মত বিনিময় সভায় শহীদ সাব্বির আলম খন্দকার ”আমার জানাযায় অংশ গ্রহন করার আহবান জানিয়ে বক্তব্য শুরু করছি“ বলে নারায়ণগঞ্জের সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ীদের নাম, ঠিকানা ও তাদের গডফাদারদের নাম প্রকাশ করেন এবং সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্দে জিহাদ ঘোষনা করে নারায়ণগঞ্জবাসীকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্ঠা করেন। তখন শহীদ সাব্বিরের ব্যাপক তৎপরতায় ঝুট সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও মাদক ব্যবসায়ীদের হাতে জিম্মি গার্মেন্টস ব্যবসায়ী, চুন ফ্যাক্টরী ও নারায়ণগঞ্জ বাসী নিস্তার লাভ করে।
চাঁদাবাজ সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ীরা কোনঠাসা হয়ে পরলে তাদের গডফাদারদের ষড়যন্ত্রে সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজরা প্রাতঃকালীন ভ্রমনকালে শহীদ সাব্বির আলম খন্দকারকে গুলি করে হত্যা করে।তৎসময়ে সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ীদের গডফাদাররা প্রভাবশালী হওয়ায় মামলা দায়ের থেকে শুরু করে তদন্ত সহ সকল ক্ষেত্রে অবৈধ হস্তক্ষেপ করে। ফলে দীর্ঘ ১০ বছরেও একটি গ্রহন যোগ্য চার্জশীট প্রসাশনের পক্ষ থেকে পাওয়া যায়নি।