নারায়ণগঞ্জ,বিজয় বার্তা ২৪
ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনায় ভেজাল বিরোধী অভিযানের মাধ্যমে ম্যাজিষ্ট্রেট রোকন-উদ্দৌলা বেশ আলোচিত হওয়ার পর দেশে আর কোন ম্যাজিষ্ট্রেটের নাম শোনা না গেলেও গাউছুল আযমের অবশ্যই শুনেছে নারায়ণগঞ্জবাসী। যার অভিযানে ডান্ডিনগরী এই নারায়ণগঞ্জের আনাচে কানাচের সকল হোটেল রেস্তোরা,বেকারী,ফলের দোকান এমনকি মিষ্টির দোকানীও পর্যন্ত ছাড় পায়নি। গাউছুল আযমের তৎপরতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে সমানভাবে এগিয়ে চলেছেন ফতুল্লা সদর উপজেলা সহকারি কমিশণার(ভূমি) নাহিদা বারিক ও বন্দর উপজেলা সহকারি কমিশণার (ভূমি) হোসনে আরা বেগম বীনা। সদ্য অনুষ্ঠিত হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় আয়োজন মহাতীর্থ লাঙ্গলবন্দ অস্টমী ¯œানোৎসবে হোসনে আরা বেগম বীনা দিনরাত পরিশ্রম করে সফল করেছেন। গত বছর এ উৎসবকে কেন্দ্র করে পদদলিত হয়ে ১০ পূণ্যার্থীর মৃত্যুর পর নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসকের কড়াকড়ি নির্দেশের প্রেক্ষিতেই এক প্রকার নাওয়া-খাওয়া ছেড়েই দিন-রাত পরিশ্রম করে অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবেই সম্পন্ন করেছেন ¯œানোৎসব। উৎসবের ৮ মাস আগে থেকেই অর্থাৎ গত বছরের জুন মাস থেকেই বিজ্ঞ ম্যাজিষ্ট্রেট হোসনে আরা বেগম বীনা লাঙ্গলবন্দ এলাকার পরিবেশ উপযোগী করার কাজে নামেন। শুরুতেই নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক আনিছুর রহমান মিঞা’র নির্দেশে খাস জমি থেকে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ এবং ব্যাক্তি মালিাদেরকেও অন্যত্র পূর্ণবাসিত করে জায়গাগুলো খালি করেন। ব্রম্মপুত্র নদীর তীরের রাজঘাটের সামনের দু’টি মালিকানা দোকান বাজারের অভ্যন্তরে থাকা খাস জায়গায় স্থানান্তর করে রাজঘাটটির সম্মুখ অংশ ফাঁকা করে দেন। বেইলী ব্রীজ হতে ডাইভারসে ঢোকার পথে একটি ব্যাক্তি মালিকানা দোকান অপসারণ করে ঢোকার পথটি প্রসস্ত করেন। জেলা পরিষদের ডাকবাংলোর পার্শ্ববর্তী একটি মালিকানা দোকান সরিয়ে জায়িগাটি খালি করাসহ লাঙ্গলবন্দ সড়কের দু’পাশের প্রায় শতাধিক দোকান-পাট উচ্ছেদ করা হয়। লাঙ্গলবন্দ বাজারের অভ্যন্তরের ডাইভারসন রোডটি’র বিদ্যমান দোকানগুলোর বাড়তি অংশ ভেঙ্গে রাস্তা প্রসস্ত করা হয়। রাজঘাটের সম্মুখস্থ বটগাছের গোঁড়াটি বাধিয়ে দেয়া হয়। তৎসংলগ্ন জরাজীর্ণ মন্দিরটি টিন দিয়ে নিরাপত্তা বেষ্টনী করে দেয়া হয়। সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদের উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সর্বাতœক সহায়তায় ব্রম্মপুত্র নদের কচুরিপানা পরিস্কার করানো হয় এবং সতর্কবানী সম্বলিত ব্যানার ও লাল নিশান সাঁটিয়ে প্রতিটি ঘাটের ২৫/৩০ ফুট দূরত্ব বজায় রেখে বাঁশ দিয়ে নিরাপত্তা বেষ্টনী দেয়া হয়। সর্বোপরি বিআইডব্লিউটিএ,সড়ক ও জনপথ বিভাগের,জনস্বাস্থ্য ও প্রকৌশল বিভাগের,পল্লী বিদ্যুসহ সকল বিভাগের কাজ সার্বক্ষনিকভাবে মনিটরিং করেন। মেলার জন্য নির্ধারিত ৩টি স্থান ছাড়াও অন্য কোথাও যাতে মেলা বসতে না পারে ¯œানের আগমুহুর্ত পর্যন্ত তা মনিটরিং করা,ক্ষেত্র বিশেষ উচ্ছেদাভিযান পরিচালনা,ব্রম্মপুত্র নদে বালুবাহী বাল্কহেড বন্ধে ¯œানের পূর্বে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। যে সকল মিল-ফ্যাক্টরীর দূষিত বর্জ্যের কারণে ব্রম্মপুত্র নদের পানি দূষিত হয়েছে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে তাদের মাধ্যমেই ওই নদীতে জীবানুনাশক দেয়া হয়। সর্বোপরি যে সকল অসহায় পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়েছে তাদের মধ্যে কয়েকজনকে পূর্ণবাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং বাকীদের পূর্ণবাসনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। দীর্ঘ দিনের পরিশ্রম হলেও ঐতিহাসিক ¯œানোৎসব অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হওয়ায় কৃতজ্ঞাতা প্রকাশ করেন হোসনে আরা বেগম। একান্ত আলাপচারিতায় হোসনে আরা বেগম জানান,মহাতীর্থ লাঙ্গলবন্দ ¯œানোৎসবকে ঘিরে দীর্ঘ ৮ মাস ধরে যত কিছুই করে থাকিনা কেনো আমি মনে করি আমি আমার দায়িত্ব পালণ করেছি। ডিসি স্যারের নির্দেশ পালণ করতে পারাটাই আমাদের কাজের স্বার্থকতা। যদিও এই উৎসবকে কেন্দ্র করে দীর্ঘ দিন সময় দিতে হয়েছে তারপরও কাজের মধ্যে থাকাতে অনেক ভাল লেগেছে। কাজটাকে আমি বেশি ভালবাসি।