নারায়ণগঞ্জ,বিজয় বার্তা ২৪
নারায়নগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়নের জিন্দা উত্তরপাড়া এলাকায় জনতার গণপিটুনিতে তিন ডাকাত নিহত হয়েছে। ডাকাতদলের হামলায় একই পরিবারের নারীসহ চার জন আহত হয়েছে। এসময় ৩০ ভরি স্বর্ণ ও নগদ এক লাখ টাকাসহ মালপত্র লুটে নিয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ধারালো অস্ত্রসহ তাজা ককটেল উদ্ধার করেছে। ১৩ ফেব্রুয়ারী শনিবার ভোরে উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়নের জিন্দা উত্তরপাড়া (কামতা মনহরপুর) এলাকায় ঘটে এ ঘটনা।
নিহতদের মধ্যে দুই জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। এরা হলেন, নড়াইল জেলার সদর উপজেলার জরুলিয়া এলাকার আব্দুর রহমানের ছেলে এজাজুল ইসলাম (২৩), যশোর জেলার কতোয়ালী উপজেলার বারিন্দাপাড়া এলাকার আবু মিয়ার ছেলে নাশির উদ্দিন (৩৮)। অজ্ঞাত আরেক জনের পরিচয় এখন পর্যন্ত নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ। নিহত এজাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে মাগুরা জেলার শালিকা থানায় চুরিসহ একাধিক অভিযোগে মামলা রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, ভোর পৌনে ৩টার দিকে প্রথমে জিন্দা উত্তরপাড়া (কামতা মনহরপুর) এলাকার ব্যবসায়ী রাজ্জাক সিকদারের বাড়িতে অশসস্ত্র অবস্থায় ১৫ থেকে ২০ জনের একদল ডাকাতদল প্রবেশ করে। এসময় ঘরের দরজা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে পরিবারের সকলকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বেঁধে ফেলে। পরে রাজ্জাক সিকদারের ভাই আব্দুল কুদ্দুস সিকদারের ঘরে প্রবেশ করে তাদেরকে ও অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বেঁধে ফেলে। এক পর্যায়ে ঐ দুই পরিবারের ঘর থেকে ৩০ ভরি স্বর্ণ ও নগদ এক লাখ টাকাসহ অন্যান্য মালপত্র লুটে নেয়। প্রতিবাদ করায় বাড়ি মালিক ব্যবসায়ী রাজ্জাক সিকদার (৫৫), আব্দুল কুদ্দুস সিকদার (৬৫), ইয়াকুব সিকদার (৩০), দোলন বেগম (২৬) কে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে, আহতরা ডাকাত ডাকাত বলে আতœ চিৎকার করতে শুরু করলে স্থানীয় জনতা ডাকাতদের ধাওয়া করে। এসময় ডাকাতরা দুটি ককটেল ফাটিয়ে আতঙ্কের সৃষ্টি করে। পরে তিন ডাকাতকে আটক করে গনপিটুনি দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুই ডাকাত নিহত হন। অপর ডাকাতকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ডাকাতির ঘটনায় গণপিটুনিতে তিন জন মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল ইসলাম বলেন, লাশ উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যপারে রূপগঞ্জ থানায় পৃথক দুটি মামলার প্রস্তুতি চলছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানিয়েছেন, গত বছর খানেক আগেও স্থানীয় ইউপি সদস্য বিল্লাল হোসেনের বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ডাকাতদল ২৯ ভরি স্বর্ণসহ নগদ টাকা লুট করা হয়ে। এক সপ্তাহ আগে তুহিন মিয়া নামে অপর এক জনের বাড়িতে ডাকাতির চেষ্টা চালানো হয়েছিলো। পুলিশ ও স্থানীয় এলাকাবাসীর কারনে ডাকাতি করতে পারেনি ডাকাতদল। এসব ঘটনার পর থেকে বেশ কয়েক দিন ধরে এলাকাবাসী রাত জেগে পাহাড়া দিয়ে আসছিলো। শুক্রবার মধ্যে রাতে এলাকাবাসী পাহাড়ায় ছিলোনা। আর এ সুযোগে ডাকাতরা ডাকাতি করে।