বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
রূপগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং কায়েতপাড়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের (চনপাড়া) সদস্য বজলুর রহমানকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১। তার বিরুদ্ধে হত্যা, গুম, মাদক, অস্ত্র, চাঁদাবাজিসহ এক ডজনেরও বেশি মামলা রয়েছে। চনপাড়ায় মাদকবিরোধী অভিযানে র্যাবের ওপর হামলা মামলারও আসামি তিনি।
আজ শুক্রবার বিকেলে বজলুর রহমানকে গ্রেফতারের তথ্য জানায় র্যাব।
র্যাব-১ এর বিশেষ অভিযানে বজলুর রহমানকে গ্রেফতারের তথ্য নিশ্চিত করলেও কোথা থেকে এবং কখন তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে সে বিষয়ে কিছু জানায়নি র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখা।
বালু নদ ও শীতলক্ষ্যা নদীসংলগ্ন ১২৬ একর জমির ওপর ১৯৭৪ সালে একটি পুনর্বাসন কেন্দ্র (চনপাড়া) গড়ে তোলা হয়। পুলিশ বলছে, দ্বীপের মতো এই এলাকায় ঢাকা ও আশপাশের এলাকার অপরাধীদের আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর রাতে মাদক উদ্ধার ও মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করতে চনপাড়া পুনর্বাসনকেন্দ্র এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে র্যাব-১। সে সময় ইউপি সদস্য বজলুর রহমানের ভাই হাসানসহ বেশ কয়েকজন মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করা হয়।
পরে মাদক কারবারিরা র্যাব সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে আসামিদের ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করলে উভয় পক্ষের মাঝে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা র্যাবের গাড়িও ভাঙচুর করে। এ সময় র্যাব সদস্যরা আত্মরক্ষার্থে ৭৭ রাউন্ড গুলি ও কার্তুজ ফায়ার করেন। প্রায় ২৫ থেকে ৩০ মিনিট গোলাগুলি হয়।
খবর পেয়ে র্যাব-১১, র্যাব-১ এর পূর্বাচল ক্যাম্প ও রূপগঞ্জ থানা পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে র্যাব সদস্যদের উদ্ধার করে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। এ ঘটনায় বজলুর রহমানসহ অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা করে র্যাব।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, তিন বছর আগে রূপগঞ্জের কায়েতপাড়া ইউনিয়নের চনপাড়া ওয়ার্ডের নিয়ন্ত্রক ছিলেন দুজন। একজন কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সংরক্ষিত নারী সদস্য বিউটি আক্তার ওরফে কুট্টি এবং অন্যজন ইউপি সদস্য বজলুর রহমান। চনপাড়ায় মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধের নিয়ন্ত্রণ ছিল তাদের কাছে।
আধিপত্য বিস্তারের দ্বন্দ্বে ২০১৭ সালের নভেম্বরে প্রথমে বিউটির স্বামী এম এ হাসান এবং ২০১৯ সালের জুন মাসে বিউটি খুন হলে বদলে যায় পরিস্থিতি। চনপাড়ার নিয়ন্ত্রণ চলে আসে বজলুর কাছে। তিনি রূপগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং কায়েতপাড়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের (চনপাড়া) সদস্য। একই সঙ্গে তিনি কায়েতপাড়া ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান। পুলিশের হিসাবে হত্যাসহ ৯টি মামলার আসামি বজলুর।
সর্বশেষ গত বছরের জুলাই মাসে তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা হয়। পুলিশের করা এই মামলায় তিনি জামিনে আছেন। বজলুর রহমানের বিরুদ্ধে পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগও রয়েছে।
সম্প্রতি শীতলক্ষা নদী থেকে বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিনের মৃতদেহ উদ্ধারের পর থেকেই আলোচনায় রয়েছে চনপাড়া বস্তি।