বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের দড়িকান্দি চকে কৃষকদের শতশত বিঘা কৃষি ও আবাদি জমিতে ড্রেজার বসিয়ে বালু ভরাট করে ফেলছে এমন অভিযোগে উপজেলা প্রশাসন ৪টি ড্রেজার ও পাইপ জব্দ করেছে।
কৃষি জমিতে বালু ফেলা বন্ধে চুড়ান্ত নোটিশ করা হয়েছে পূর্বাচল প্রিমিয়াম সিটি নামক একটি আবাসন কোম্পানীকে। কৃষি জমিতে বালু ভরাট বন্ধে দুর্ণীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ও পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালকসহ ১১ দফতরে লিখিত অভিযোগ করেছেন স্থানীয় কৃষকেরা।
বিভিন্ন দপ্তরে দেয়া কৃষকের অভিযোগ থেকে জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরে ওএসডিতে থাকা পুলিশের তিনজন কর্মকর্তা রূপগঞ্জের গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের দড়িকান্দি চকে কৃষকদের শত শত বিঘা জমিতে ড্রেজার বসিয়ে বালু ভরাট করছে। প্রতিবাদ করলেই হামলা, মামলার ভয় দেখিয়ে বালু ভরা করছে। এ বিলের মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে তিতাস গ্যাস ও বিদ্যুতের জাতীয় গ্রিড। প্রায় আধা কিলোমিটার এলাকা জুড়ে জাতীয় গ্রিডের গ্যাস পাইপ ও বিদ্যুত লাইন থাকার পরও বালু ভরাট করে প্লট বিক্রি শুরু করেছে। ওএসডিতে থাকা পুলিশের এসপি কাজী ফজলুল করিম, এসপি গাজী জসিম উদ্দিন, এসপি মনির হোসেন যৌথভাবে পূর্বাচল প্রিমিয়ার সিটি নাম দিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এদিকে কৃষকরা তাদের আবাদি জমি হারিয়ে সরকারের বিভিন্ন দফতরে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
সম্প্রতি উপজেলার গোলাকান্দাইল ও দড়িকান্দি এলাকার কৃষকরা কৃষি ও আবাদি জমিতে বালু ভরাট করা বন্ধের দাবিতে ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে দুর্ণীতি দমন কমিশন (দুদক), বাংলাদেশ পুলিশ সদর দপ্তরের মহা পরিচালক, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক, পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক, র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র্যাব)-১১, জেলা পুলিশ সুপার, ঢাকা জাতীয় প্রেসক্লাব, রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি), রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
উপজেলার বালিয়াপাড়া এলাকার ভুক্তভোগী কৃষক রঞ্জিত চন্দ্র মোহন ও দড়িকান্দি এলাকার কৃষক সিরাজুল ইসলামের দায়ের করা পৃথক দুটি অভিযোগ থেকে জানা গেছে, ঢাকা বিজয়নগর এলাকার স্কাই ভিউ টাওয়ারে প্রিমিয়াম হাউজিং স্টেট লিমিটেডের কর্পোরেট অফিস চালু করেন ওএসডিতে থাকা এসপি কাজী ফজলুল করিম, এসপি গাজী জসিম উদ্দিন, এসপি মনির হোসেন।
এদিকে রূপগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কৃষি ও আবাদি জমিতে বালু ভরাট বন্ধে নোটিশ করা হলেও রাতের আধারে বালু ভরাট অব্যাহত রাখে। খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন ৪টি ড্রেজার ও পাইপ জব্দ করে। অভিযুক্তদের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম জানান, কৃষকদের অভিযোগের ভিত্তিতে বালু ভরাট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ৪টি ড্রেজার ও পাইপ জব্দ করা হয়েছে। পূনরায় বালু ভরাট করা হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।