বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
কর্মব্যস্ততার চাপে মনযোগের অভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশে দেরি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এর পাশাপাশি তিনি বলেছেন, প্রতিশ্রুত সময়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করতে না পারলেও ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা রেহাই পাবেন না। তাদেরকে আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে।
রোববার সচিবালয়ে নিজ কার্যালয় থেকে বের হওয়ার সময় অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। তবে অন্য একটি সূত্রে জানা গেছে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ হলে চুরি হওয়া অর্থ ফিলিপাইন থেকে ফেরত আনতে সমস্যা হতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এমন যুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে অর্থমন্ত্রী তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশে বিলম্ব করছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এত বড় একটি ঘটনা। এর তদন্ত প্রতিবেদন এখন আমাদের হাতে। তদন্ত কমিটি যেসব সুপারিশ করেছে সেগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে। তাদের ছাড় দেওয়ার কোন ধরনের সুযোগ নেই। এর পাশাপাশি ফিলাপাইন থেকে অর্থ ফেরত আনার প্রক্রিয়াও চলছে বলে তিনি জানান।
তদন্ত কমিটি রিজার্ভ চুরির সঙ্গে জড়িত যাদের চিহ্নিত করেছে তাদের আইনের আওতায় আনার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক মোটামুটি প্রস্তুত। অর্থমন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে নির্দেশনা পেলেই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গত ফেব্রুয়ারিতে সুইফট মেসেজিং সিস্টেমের মাধ্যমে ভুয়া বার্তা পাঠিয়ে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে রক্ষিত বাংলাদেশের রিজার্ভের আট কোটি ১০ লাখ ডলার ফিলিপাইনে সরিয়ে নেওয়া হয়, যাকে বিশ্বের অন্যতম বড় সাইবার চুরির ঘটনা বলা হচ্ছে।
রিজার্ভ চুরির এই ঘটনা বাংলাদেশের মানুষ জানতে পারে ঘটনার এক মাস পর, ফিলিপাইনের একটি পত্রিকার খবরের মাধ্যমে। বিষয়টি চেপে রাখায় সমালোচনার মুখে গভর্নরের পদ ছাড়তে বাধ্য হন আতিউর রহমান; বড় ধরনের রদবদল করা হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ে।
এ ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়ের করা মামলার তদন্তে থাকা বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ বলেছে, সুইফটের টেকনিশিয়ানদের ‘অবহেলার কারণেই’ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুইফট সার্ভার হ্যাকারদের সামনে অনেক বেশি উন্মুক্ত হয়ে পড়ে।
ঘটনা তদন্তের জন্য পরে প্রাক্তন গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের গঠন করা তদন্ত কমিটির প্রধান হচ্ছেন প্রাক্তন গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। গত ৩০ মে সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রীর কাছে এ সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়।
এর আগে গত ২২ জুন অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন ঈদের পর প্রকাশ করা হবে। এরপর তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন খুব শিগগির প্রকাশ করা হবে বলে জানালেও এখন পর্যন্ত ওই প্রতিবেদন জনসম্মুখে প্রকাশ হয়নি।