স্টাফ রিপোর্টার,বিজয় বার্তা ২৪
রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মতি ছাড়াই তাদের বার্ষিক আয়ব্যয়ের হিসাব যে কোনো নাগরিকের আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রকাশ করতে বাধ্য থাকবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
বৃহস্পতিবার এক রিট আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে রুল মঞ্জুর করে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ড. শরীফ ভূঁইয়া ও ব্যারিস্টার তানিম হোসেইন। তথ্য কমিশনের পক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমাতুল করীম। ইসির পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট তৌহিদুল ইসলাম।
ড. শরীফ ভূঁইয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘হাইকোর্টের এ রায় হওয়ার পর এখন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর বার্ষিক আয়-ব্যয়ের হিসাব প্রকাশের ক্ষেত্রে দলগুলোর সম্মতির প্রয়োজন হবে না।
২০১৩ সালের ১২ জুন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার নির্বাচন কমিশনের কাছে তথ্য অধিকার আইনের আওতায় নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলসমূহের বছরভিত্তিক আয়-ব্যয়ের বিবরণী চেয়ে আবেদন করেছিলেন।
আবেদনের পর ইসি রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে তথ্য নেয়ার জন্য বদিউল আলম মজুমদারকে বলেন। পরে বদিউল আলম মজুমদার তথ্য কমিশনে আবেদন করেন। তথ্য কমিশন ২০১৪ সালের ১৬ জুলাই তৃতীয়পক্ষের (রাজনৈতিক দলের) মতামত ছাড়া হিসাব দেওয়া যাবে না বলে জানিয়ে দেন।
এ আদেশের বৈধতা নিয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন বদিউল আলম মজুমদার, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দিন খান ও এ এস এম শাহজাহান, কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. তোফায়েল আহমেদ এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সাবেক সচিব আলী ইমাম মজুমদার।
হাইকোর্ট এ আবেদনের শুনানি নিয়ে রুল জারি করেন। বৃহস্পতিবার রুল মঞ্জুর করে হাইকোর্ট রায় দেন।
রায়ের পর ড.বদিউল আলম মজুমদার বলেন, এটি একটি যুগান্তকারী রায়।
২০১৩ সাল থেকে এ নিয়ে লড়ছি। এর মধ্যে নির্বাচন কমিশন ৪০টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের কাছে তথ্য প্রকাশের বিষয়ে মতামত চেয়েছে। ২১টি দল এতে সাড়া দিয়েছে। কিন্তু ২১ দলের মধ্যে মাত্র ৩টি দল হিসাব প্রকাশ করতে অনাপত্তি দিয়েছে। এখন আদালতের এ রায়ের ফলে হিসেব আর গোপন করার সুযোগ নেই। যে কোনো নাগরিক নির্বাচন কমিশনে রাজনৈতিক দলের বার্ষিক হিসাব চেয়ে আবেদন করলে নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলের সম্মতি ছাড়াই হিসাব দিতে বাধ্য থাকবে।