বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
মুসলিমনগরে ডিস ব্যবসাকে কেন্দ্র করে শেষ পর্যন্ত দুই গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষে কমপক্ষে ১০ জন গুরুতর আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। আহতরা খানপুর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। এর মধ্যে সোহেল ও মোশারফকে মারাত্মক আশংকা জনক অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানায় হাসপাতাল সূত্র। গেছে। এ ঘটনায় ক্যাবল টিভি ব্যবসায়ী সেলিম মিয়া বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় আওলাদ হোসেন(৪২),আক্তার হোসেন(৩৮),জাকির হোসেন(৪৫), মামুন(৩০), মেহেদী(২৯), সুমন(৩০), ইদ্রিস আলী(৪৮), নুর হোসেন (৪৫)সহ ১০/১৫ জনকে আসামী করে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। অপরদিকে ক্যাবল টিভি ব্যবাসয়ী হাজী আওলাদ হোসেনও বাদী হয়ে সেলিম (৪০), সোহেল(৩৮), অপু(২৬), ফরহাদ(৩০)কে আসামী করে পাল্টা একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।
সেলিমের অভিযোগে উল্লেখ,মুসলিমনগর এলাকায় বেশ কয়েক বছর যাবৎ সরকারীভাবে লাইসেন্স নিয়ে মুসলিমনগর এলাকায় ক্যাবল টিভি ব্যবসা করে আসছে সেলিম। সেলিমের ক্যাবল টিভি ব্যবসাকে বন্ধ করে দিতে মৃত কালু মাদবরের ছেলে আওলাদ ও তার লোকজন চেষ্টা করছে দীর্ঘদিন ধরে। বিভিন্ন সময় আওলাদ ও তার লোকজন ১০লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে আসছিল সেলিমের কাছে। কিন্তু সেলিম ও তার ছোট ভাই সোহেল আওলাদের দাবীকৃত চাঁদা দিতে অসম্মতি জানায়। এতে ক্ষিপ্ত ছিল আওলাদ ও তার লোকজন। রোববার দুপুরে হাজী বেকারীর সামনে ক্যাবল টিভির একটি সংযোগ ঠিক করছিল কর্মচারী অপু। এসময় আওলাদ ও তার লোকজন দেশীয় ধারালো অস্ত্র ও লাঠি নিয়ে অপুর উপর হামলা করে। এসময় হামলাকারীরা চাপাতি দিয়ে অপুকে কোপ দেয়। এতে অপুর বামহাত রক্তাক্ত যখম হয়। খবর শুনে ঘটনাস্থলে ক্যাবল টিভি মালিক সেলিম,সোহেল ও মোশারফ ঘটনাস্থলে গেলে আওলাদ ও তার লোকজন ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাদের উপরও হামলা করে। এতে সোহেলের বামহাতের কব্জি ও পিঠে কোপ লাগে। ঘটনাস্থলে যাওয়া মোশারফকেও আঘাত করে হামলাকারীরা। এতে তার কপালে কোপলেগে রক্তাক্ত যখম হয়। ঘটনার পর আহত সেলিম, সোহেল,অপু ও মোশারফ খানপুর ৩’শ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে মারাত্মক আহত সোহেল ও মোশারফকে কর্তব্যরত চিকিৎসক ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে পাঠিয়ে দেয়।
হাজী আওলাদের অভিযোগে উল্লেখ,আওলাদ মুসলিমনগর এলাকায় এএসসি ক্যাবল টিভি নামের প্রতিষ্ঠান দিয়ে প্রায় ২০ বছর যাবৎ ডিস ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। তার ব্যবসা বন্ধ করে দেয়ার জন্য মুসলিমনগর এলাকার আজিমুদ্দিন মাদবরের ছেলে সেলিম,সোহেল,অপু ও ফরহাদসহ বেশ কয়েকজন বিভিন্ন ধরনের অপচেষ্টা করে আসছে অনেক দিন ধরে। এনিয়ে এলাকায় ও শহরের বিভিন্ন স্থানে একাধিক বিচার সালিও হয়। সেই সালিসে উল্লেখিতরা এলাকায় ক্যাবল টিভির ব্যবসা করবে না বলে অঙ্গিকার করে। এক পর্যায়ে বিবাদীরা ৩ লাখ টাকা দাবী করে। সালিশ পক্ষের সিদ্ধান্তনুযায়ী হাজী আওলাদ হোসেন ৩ লাখ টাকা দিয়ে দেয় বিবাদীদের। কিন্তু টাকা নেয়ার পরও বিবাদীরা এলাকায় ক্যাবল টিভি ব্যবসা করার জন্য নানা রকম চেষ্টা করে। রোববার সকাল ১১টায় সেলিম ও তার লোকজন অবৈধভাবে ক্যাবল টিভির সংযোগ দেয়ার চেষ্টা করে। এতে আওলাদ ও তার লোকজন বাধা দেয়। এসময় আওলাদ ও তার লোকজনদের সেলিম ও সোহেলের নির্দেশে মারপিট করা হয়। আহত হাজী আওলাদ হোসেন খানপুর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে এলাকাবসী বলেন, আওলাদা ও সেলিমের মথ্যে ক্যাবল টিভি নেটওয়ার্কের ব্যবসার দ্বন্ধ জিইয়ে রাখতে একটি পক্ষ কাজ করছে অনেক আগে থেকেই। একটি পক্ষের হয়ে অপর পক্ষ বিভিন্ন সময় উস্কানী দিয়ে আসছে। যার কারণে থেমে থেমে উভয় পক্ষের মধ্যে মারমারির ঘটনা ঘটছে।
এব্যাপারে ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইন চার্জ কামাল উদ্দিন বলেন,যতদুর জানা গেছে মুসলিম নগরে দুটি পক্ষই ডিসের ব্যবসা করে আসছে। দুটি পক্ষের মধ্যে বিরোধ অনেক দিনের। রোববার দুপুরে উভয় পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। উভয় পক্ষের অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তদন্ত তরে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।