বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
নারায়ণগঞ্জ বিএনপির অধিকাংশ নেতার বিরুদ্ধে এখন মামলার পাহাড়। জেলা ও মহানগর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাদের বিরুদ্ধে কম-বেশি শতাধিক মামলা ঝুলে আছে। এসব মামলা আতঙ্ক নিয়ে নির্বাচনের মাঠে যেতে হচ্ছে বিএনপিকে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জে বিএনপির প্রায় হাজারের উপরে নেতাকর্মী এসব মামলার আসামি। যেগুলোর অধিকাংশই আগামী নির্বাচনের আগে চূড়ান্ত বিচার প্রক্রিয়া যেতে পারে। আবার অনেক মামলার রায় হয়ে যেতে পারে চলতি বছরেই। এসব রায়ে বিএনপির সিনিয়র বেশ কিছু নেতা সাজাপ্রাপ্ত হয়ে অযোগ্য হতে পারেন নির্বাচনে। এমন শঙ্কায় জেলা বিএনপির নেতৃত্বে এখন জেরবার অবস্থা।
দলের সূত্র জানায়, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এড.তৈমুর আলম খন্দকারসহ জেলা ও মহানগর এবং অন্যান্য থানা এলাকার বিএনপি নেতৃবৃন্দ এবং তাদের অঙ্গসংগঠনগুলোর নেতাদের উপর আছে প্রায় শতাধিক মামলা। মামলার সেঞ্চুরি-ডাবল সেঞ্চুরি পার করেছেন অন্তত দুই ডজন নেতা। প্রায় সব মামলাই করা নিশ্চিত সাজা হতে পারে এমন কিছু ধারায়। বিস্ফোরক দ্রব্য, সন্ত্রাসবিরোধী, দ্রুত বিচার ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা মামলাগুলোর বিচারের কাজ শুরু হয়েছে। মামলা দায়েরের সময় যেসব ধারা উল্লেখ করা হয় চার্জশিটের সময় আলাদা আইনে বিভক্ত হয়ে তৈরি হচ্ছে নতুন মামলা। ফলে চার্জশিটের পর বেশির ভাগ নেতার মামলায় পরিণত হচ্ছে দেড় গুণে। জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতৃবৃন্দের মধ্যে মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ এবং যুগ্ন আহ্বায়ক রানা মুজিবের বিরুদ্ধে মামলার ডাবল সেঞ্চুরি পার করেছেন। এছাড়া দলটির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ থেকে শুরু করে ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবকদল, কৃষকদল, যুবদলের নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে মামলার পাহাড়। দলটির নীতিনির্ধারকসহ জেলা ও মাঝারি সারির নেতাদের সপ্তাহে তিন-চারদিন হাজিরা দিতে হয় আদালতে।
সূত্রে জানা যায়, কেন্দ্রীয় কর্মসূচী পালনে দেশের অন্যান্য জেলার চেয়ে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতৃবৃন্দ স্ফতস্ফুত কর্মসূচী পালন করেছে। কর্মসূচী পালন কতে গিয়ে পুলিশের হামলার স্বীকার এমনকি কর্মসূচী পালনকালেই গ্রেফতার হয়েছেন একাধিক নেতা। এছাড়া জামায়াত-শিবির ক্যাডাররা দলীয় কর্মসূচী পালনকালে নারায়ণঞ্জ ব্যাপী যে নাশকতা করেছে এর দায়ভারও বিএনপি ও অঙ্গসংঠনের নেতাদের উপর পড়েছে। জামায়াত-শিবিরের নাশকতামূলক ঘটনার দায়েরকৃত মামলার আসামি হয়েছেন বিএনপির নেতৃবৃন্দ। কেন্দ্র থেকে দলীয় কোন কর্মসূচীর ঘোষনা আসার সাথে সাথেই পূর্বে দায়েরকৃত মামলার রেফারেন্স অনুযায়ী দলীয় নেতৃবৃন্দের বাড়ীতে পুলিশি অভিযান পরিচালিত হয়ে থাকে। অপরদিকে দল বেধে দলীয় নেতৃবৃন্দ আদালতে প্রাঙ্গনে হাজিরা দিতে গেলেও খোঁজে পাওয়া যায় না শরীকদল জামায়াত শিবির ক্যাডারদের। এদিকে ঘনিয়ে আসছে একাদশ জাতীয় সাংসদ নির্বাচন। নির্বাচনকে ঘিরে বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাগুলো পূনরায় চাঙা করছে সরকার। বিএনপির নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত একাধিক মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। অভিযোগপত্র পাওয়ার সাথে সাথেই আদালত পুরাতন দায়েরকৃত মামলার দ্রুত নিষ্পতির সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। আর আদালতের রায়ে বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দের দন্ড হতে পারে। আর আদাতের রায়ের উপরেই অনেক নেতৃবৃন্দের আগামি একাদশ জাতীয় সাংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহন অনিশ্চিত হতে পারে।
এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা পুলিশের এক উর্দ্ধতন কর্মকর্তা জানান, রাজনৈতিক কর্মসূচী পালনকালে জামায়াত-শিবির-বিএনপি ক্যাডারদের বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগপত্র আদালতে প্রেরন করা হচ্ছে। দীর্ঘদীন ধরে পেইন্ডিং পরে থাকা মামলাগুলো সরকারের উচ্চ মহলের নির্দেশে দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হচ্ছে।