স্টাফ রিপোর্টার,বিজয় বার্তা ২৪
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, মহাকাশেও ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে এগিয়ে যেতে আগ্রহী।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত পরষ্পর বন্ধুপ্রতিম দুটি দেশ যেভাবে জলে, স্থলে এবং ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডে পারষ্পরিক সহযোহিতা অব্যাহত রেখেছে সেভাবে মহাশূন্যেও সেই সহযোগিতার ক্ষেত্রকে ভারত সম্প্রসারিত করতে চায়।
‘ভারতের দৃঢ় ইচ্ছা জল, সড়ক ও আকাশ পথে ভারত যেমন বাংলাদেশের পাশে ছিল তেমনি মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটেও ভারত বাংলাদেশের পাশে থাকতে আগ্রহী।’
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বুধবার সকালে দিল্লী থেকে ঢাকায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে ভারতের ত্রিপুরা থেকে বাংলাদেশে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি এবং বাংলাদেশ থেকে ত্রিপুরায় ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ রপ্তানি (শেয়ারিং) কার্যক্রমের যৌথ উদ্বোধন করেন। এতে ত্রিপুরা থেকে যুক্ত হন ওই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার।
মোদি বলেন, দুই দেশের অভ্যন্তরীণ উন্নয়নে পার্শ্ববর্তী দুটি দেশ কী করে বোঝাপরার মাধ্যমে একই পথে এগিয়ে যেতে পারে তার দৃষ্টান্ত হলো আজ।
তিনি সবাইকে হোলির শুভ কামনা জানিয়ে বলেন, ‘হোলি রংয়ের উৎসব। হোলির এই পবিত্র উৎসবের দিনে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে ভারতের ত্রিপুরা থেকে বাংলাদেশে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি এবং বাংলাদেশ থেকে ত্রিপুরায় ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ রপ্তানি (শেয়ারিং) কার্যক্রমের উদ্বোধন হওয়ায় বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নতুন রঙে রাঙানো হলো।’
মোদি বক্তৃতার শুরুতেই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনের (১৭মার্চ) শুভেচ্ছা জানান এবং আসছে ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে ভারতবাসীর পক্ষ থেকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও জনগণকে অভিনন্দন জানান।
বাংলাদেশের মুক্তির সংগ্রামে ভারতের সহযোগিতার কথা সশ্রদ্ধ চিত্তে সব সময় স্মরণ রাখার জন্য তিনি শেখ হাসিনার কাছে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের আগুনঝরা দিনগুলোর কথা স্মরণ করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের সেই দুঃখের দিনগুলোতে যেমন ভারত এবং ভারতের জনগণ বাংলাদেশের পাশে থেকেছে এখন বাংলাদেশ যেমন উন্নতির শিখরে আরোহন করছে তখনও ভারত তাদের পাশে রয়েছে।
তিনি বলেন, প্রতিবেশির সঙ্গে সম্পর্ক কেমন হবে তাঁর দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করে আমরা সমগ্র বিশ্বের সামনে অনন্য নজীর স্থাপন করতে সমর্থ হয়েছি।
তিনি প্রযুক্তির উৎকর্ষের সাহায্যে দুটি দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং একজন মুখ্যমন্ত্রী সহযোগে প্রকল্প উদ্বোধনের ঘটনা বিশ্বে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে উল্লেখ করে ভবিষ্যতে দুদেশের যোগাযোগের আরো নতুন নতুন ক্ষেত্র সৃষ্টি হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন।
সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিবিআইএন (বাংলাদেশ-ভারত-ভুটান-নেপাল) সম্পর্কের নতুন মাত্রা যোগ করবে উল্লেখ করে মোদী বলেন, বাংলাদেশ ত্রিপুরায় ব্যান্ডউইথ প্রদান করায় আমাদের পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলো নতুনভাবে ডিজিটাল বিশ্বে সংযুক্ত হবার সুযোগ পেয়েছে। ভারতের দুটি ইন্টারনেট গেটওয়ের একটি পশ্চিমাঞ্চলে এবং অপরটি দক্ষিণাঞ্চলে থাকায় পূর্বাঞ্চলের তরুণ সমাজ ডিজিটাল বিশ্বে প্রবেশের সুযোগ লাভে বঞ্চিত হচ্ছিল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশ সে সুযোগ করে দিয়েছে বলে তিনি শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি বাংলাদেশের প্রয়োজনে আরো অধিক পরিমাণ বিদ্যুৎ সরবরাহে ভারত প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানান।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এবং ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
তথ্যসূত্র: বাসস