মোখলেসুর রহমান তোতা, বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
ভালবাসার নিবিড় মোহনায় এসো আবদ্ধ হই দু’জনায়। আগামীকাল ১৪ই ফেব্রুয়ারী বিশ্ব ভালবাসা দিবস। হ্যাপি ভ্যালেন্টাইন্স ডে। প্রতি বছরের ন্যায় অন্যান্য দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশেও এ দিবসটি ব্যাপক উৎসাহ আর উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালন করা হচ্ছে। এ দিবসটির উৎপত্তি খ্রিষ্টীয় ও প্রাচীন রোমান প্রথা থেকে। কে এই সেন্ট ভ্যালেন্টাইন? তা আজও রহস্যাবৃত। ক্যাথলিক এনসাইক্লোপিডিয়া অনুসারে তিনজন ভ্যালেন্টাইন বা ভ্যালোন্টিনাস এর সন্ধান পাওয়া যায়। তারা সবাই ১৪ই ফেব্রুয়ারী আত্মদান করেন। প্রথম ভ্যালেন্টাইন তৃতীয় শতাব্দীতে রোমের যাজক ছিলেন তৎকালীন সম্ভ্রাট দ্বিতীয় ক্লাডিয়াসের ঘোষনা অমান্য করে গোপন প্রেমিক তরুন তরুনীদের বিয়ের ব্যবস্থা করায় তাকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়। ২য় জন ২৭০ সালে অত্মদান করেন তার নাম বিশপ ভ্যালেন্টাইন। তার স্মরনে তার মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষ্যে প্রতি বছর মধ্য ফেব্রুয়ারীতে ভ্যালেন্টাইন্স ডে পালন করা হয়। তৃতীয় ভ্যালেন্টাইন উত্তর আফ্রিকার একটি রোমান সাম্রাজ্যে আত্ম উৎস্বর্গ করেন। ১৪ ফেব্রুয়ারী প্রথম সেন্ট ভ্যালেন্টাইন ডে উৎসব পালনের প্রথম ঘোষনা দেওয়া হয় ৪৯৮ সালে। পোপ প্রথম জেলসিয়াম এ ঘোষনা দেন। রোমে লটারীর মাধ্যমে রোমান্টিক জুটি গঠনকে বেআইনী ও খ্রিষ্টীয় আচার বর্হিভূত মনে করা হতো। চর্তুদশ শতকে ইংল্যান্ডে ও ফ্রান্সে মনে করা হতো ১৪ ফেব্রুয়ারী পাখিদের মধ্যে যুগল হয়। ১৪১৫ সালে জেলখানায় আইন থাকার সময় ডিউক অব অরলিন্সের চালর্স তার স্ত্রীর কাছে ভালবাসার নিদর্শন স্বরূপ একটি কবিতা লিখেছিলেন। এর কয়েক বছর পর ইংল্যান্ডের রাজা পঞ্চম হেনরী ক্যাথরিনের কাছ থেকে ভ্যালেন্টাইন নোট পাঠানোর জন্য জনলিড গেট নামের এক লেখককে আমন্ত্রন জানান। ১৯ শতকে পোপ ষোড়শ গ্রেগরীর অর্থানুকুল্যে আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে হোয়াইট ফ্লেয়ার ক্রিষ্ট কারমিলিট চার্চে ভ্যালেন্টাইন ডে পালন করা হয়। ১৪ ফেব্রুয়ারী সেখানে এখন নিয়মিত মিলন মেলা হয়। বৃটিশ অভিবাসীদের মাধ্যমে ১৯ শতকেই উত্তর আমেরিকায় ভ্যালেন্টাইন ডে পালিত হয়। চীনে বছরে দুই দিন ভালবাসা দিবস পালন করা হতো। এখন প্রতি বছর ১৪ ফেব্রুয়ারী একদিন ভালবাসা দিবস পালন করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের আদিবাসীরা কার্ড মিষ্টি ও ফুল বিনিময় এবং ডিনারের মাধ্যমে বিশ্ব ভালবাসা দিবস পালন করে। এ দিবসে সেখানে প্রতিবছর ১৬ কোটি কার্ড ও ১৩ কোটি গোলাপ বিনিময় হয়। ব্রিটেনে ১৪ ফেব্রুয়ারী বিশ্ব ভালবাসা দিবসে ব্যাপক বানিজ্যকরণ হয়। ২০০১ সালে বিশ্ব ভালবাসা দিবস উপলক্ষে ব্রিটেনের বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গুলো প্রতি বছর বিশেষ প্যাকেজ ঘোষনা করে। প্যাকেজে বিভিন্ন উপহারের পাশাপাশি খাবারেরও ব্যবস্থা থাকে। জাপানেও ঝাকজমকপূর্ন ভাবে বিশ্ব ভালবাসা দিবস পালন করা হয়। এ দিবসটি উপলক্ষে সেখানকার মহিলারা তাদের পছন্দের পুরুষকে চকলেট উপহার দেয়। যেসব মহিলারা অফিসে কাজকর্ম করেন তাদেরকে তাদের সহকারী পুরুষদের চকলেট উপহার দিতে হয়। বাংলাদেশে বিশ্ব ভালাবাসা দিবস উদযাপন পরিষদ ১৯৯৪ সাল থেকে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে এ দিবসটি পালন করে আসছে। মানুষের জীবনের চিরায়ত এক অনুষঙ্গের নাম ভালবাসা। সৃষ্টির পর থেকেই মানুষে মানুষে ভালবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হচ্ছে। জীবন মানেই ভালবাসা, ভালবাসা মানেই জীবন। আজ ১৪ই ফেব্রুয়ারী শুধুই ভালবাসার দিন। হারিয়ে যাওয়ার দিন। সুন্দর এক স্বপ্নের দিন। যে স্বপ্ন শুধুই ডানা মেলে পালায় এদিক ওদিক। স্বপ্নবাজদের স্বপ্ন পূরন হোক, সেটাই প্রত্যাশা। শুভ হোক সবার জন্য হ্যাপি ভ্যালেন্টাইন্স ডে।