স্টাফ রিপোর্টার,বিজয় বার্তা ২৪
জ্বালানি তেলের মূল্য কমায় গণপরিবহনের ভাড়া কমাতে সরকারকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দল।
শুক্রবার রাজধানীর ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে ১৪ দলের সভায় এই আহ্বান জানান ক্ষমতাসীন জোটের শরিক নেতারা।
বৈঠক শেষে গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন রাইজিংবিডিকে বলেন, সরকার বৈশ্বিক জ্বালানি তেলের বাজারমূল্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জনগণের কথা বিবেচনা করে তেলের দাম কমিয়েছে। কিন্তু এতে কতিপয় শ্রেণী সুবিধাভোগী হচ্ছে। জ্বালানি তেলের মূল্যহ্রাসের সুবিধা দেশের আপামর জনগণকে দিতে হবে।
একই প্রসঙ্গে ১৪ দলের আরও কয়েকজন নেতাও কথা বলেন বৈঠকে। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) একাংশের সভাপতি শরীফ নূরুল আম্বিয়াও বৈঠকে সরকারের জ্বালানি তেলের মূল্য কমায় গণপরিবহনে ভাড়া কমানোর দাবি জানান।
এর আগে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে জ্বালানি তেলের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত হয়। গত রোববার দিবাগত রাত ১২টার পর নতুন এই দাম কার্যকর হয়। এতে অকটেন ও পেট্রল প্রতি লিটারে ১০ টাকা এবং ডিজেল ও কেরোসিন প্রতি লিটারে তিন টাকা করে কমানো হয়েছে। এ ছাড়া ২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে মূল্য সমন্বয়ের সময় বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছিল। তখন প্রতি লিটার অকটেন ৯৯ টাকা, পেট্রল ৯৬ টাকা, কেরোসিন ও ডিজেল ৬৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এরপর বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের ব্যাপক দরপতন হলে জ্বালানি তেলের দাম কমানোর দাবি উঠলেও সরকার তা কমায়নি। এরই মধ্যে গত ৩১ মার্চ ফার্নেস তেলের দাম প্রতি লিটার ৬০ টাকা থেকে ৪২ টাকায় নামিয়ে আনা হয়।
বৈঠক সূত্র আরও জানান, এ ছাড়া দেশে সম্প্রতি গুপ্তহত্যা বেড়ে যাওয়ায় শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। বৈঠকে দুই ভাগে বিভক্ত জাসদ নিয়েও আলোচনা হয়। তবে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে ১৪ দলের মুখপাত্র নাসিম বলেন, বিষয়টি নিয়ে এখানে আলোচনা না করে পরবর্তী বৈঠকে আলোচনা করা হবে। তার আগে ১৪ দলের জোট নেত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে উভয় গ্রুপের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। যা পরবর্তীতে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বৈঠক শুরুর আগে সাংবাদিকদের সামনে ১৪ দলের মুখপাত্র এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, গুপ্তহত্যার মাধ্যমে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখলের ষড়যন্ত্র হচ্ছে। কিন্তু ১৪ দল অতীতের মতো বিএনপি-জামায়াত জোটের এ সকল ষড়যন্ত্রকে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিহত করবে।
হত্যা-খুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে রাজধানী এবং রাজশাহীতে পৃথক সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ১৪ দল। আগামী ৮ মে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এবং ১৪ মে রাজশাহী মহানগরীতে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠক শেষে ১৪ দলের দপ্তর সমন্বয়ক ও আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে ১৪ দলের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. বদিউজ্জামান ভুঁইয়া ডাবলু, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, কার্যনির্বাহী সদস্য সুজিত রায় নন্দী, জাসদ (আম্বিয়া-বাদল) অংশের সভাপতি শরীফ নূরুল আম্বিয়া, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, জাসদ (ইনু-শিরীন) অংশের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আকতার, নাদের চৌধুরী, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, গণতন্ত্রী পার্টির শাহাদাত হোসেন, বাসদের রেজাউর রশিদ খান প্রমুখ।