বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি আবু তালেব মাসুমকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। ভিডিও ফুটেজ দেখে তাকে শনাক্ত করা হয়। মাসুম ১৫টি মামলার পলাতক আসামি ছিলেন। শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) রাতে কক্সবাজার থেকে একজন ঘনিষ্ঠ সহযোগীসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ শনিবার (১৮ নভেম্বর) সকালে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকাসহ বিভিন্ন মহাসড়কে অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করে কতিপয় দুস্কৃতিকারী ও সন্ত্রাসী কর্তৃক গণপরিবহন, ব্যক্তিগত পরিবহণসহ বিভিন্ন যানবাহনে অগ্নিসংযোগ, হামলা ভাংচুরসহ বিভিন্ন ধরণের নাশকতা ও সহিংসতা চালায়। দুস্কৃতিকারী ও সন্ত্রাসী কর্তৃক এ সকল নাশকতা ও সহিংসতার সিসিটিভি ফুটেজ ও ভিডিও ফুটেজ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। র্যাব উক্ত নাশকতা ও সহিংসতার সাথে জড়িত দুস্কৃতিকারী ও সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।
এতে বলা হয়, এরই ধারাবাহিকতায় গত রাতে র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা, র্যাব-১ ও র্যাব-১৫ এর একটি আভিযানিক দল কক্সবাজারে যৌথ অভিযান পরিচালনা করে গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশে উপস্থিত থেকে নাশকতায় সরাসরি অংশগ্রহণকারী এবং পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন মহাসড়কসহ নারায়ণগঞ্জ এলাকায় বিভিন্ন যানবাহন ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজ দেখে সনাক্তকৃত নাশকতার অন্যতম মূলহোতা এবং প্রায় ১৫টি মামলার পলাতক আসামি নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি আবু তালেব মাসুম (৩৭) এবং তার ঘনিষ্ঠ সহযোগি নারায়ণগঞ্জ জেলা জিয়া মঞ্চের সভাপতি জজ মিয়াকে (৩৯) গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃতরা তাদের দলীয় শীর্ষ স্থানীয় নেতৃবৃন্দের নির্দেশনায় মাসুমের পরিকল্পনা ও নেতৃত্বে সাম্প্রতিক সময়ে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকায় সহিংসতা ও নাশকতা চালায়। মাসুম গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীর পল্টন এলাকায় সমাবেশে যোগ দেওয়ার জন্য নেতাকর্মীদের নিয়ে ঢাকায় আসে। পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃতরা রাজধানীর পল্টন ও এর আশপাশের এলাকায় গণপরিবহন, ব্যক্তিগত যানবাহনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ, রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে নাশকতা সৃষ্টি করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির অপচেষ্টা চালায়। এসময় তারা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও গণমাধ্যমকর্মীদের ওপরও হামলা চালায়। পরবর্তীতে তারা নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ফিরে আসে। গ্রেফতারকৃত মাসুম শীর্ষ স্থানীয় নেতৃবৃন্দের নির্দেশে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকার বিভিন্ন মহাসড়কে অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে রাস্তা অবরোধ করে নাশকতা ও সহিংসতার পরিকল্পনা করে। গ্রেফতারকৃত মাসুমের পরিকল্পনা মোতাবেক তার অনুসারীরা লাঠিসোটা হাতে মিছিল করে সোডাউন দিয়ে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকায় মহাসড়কে অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে জনমনে আতংক ও ত্রাসের সৃষ্টি করে রাস্তা অবরোধ করে গণপরিবহন, ব্যক্তিগত পরিবহনসহ বিভিন্ন যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করে নাশকতা ও সহিংসতার তান্ডব লীলা চালায়। তারা যানবাহনে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের পর ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন গ্রুপে শেয়ার করে তাদের সমমনা অন্যান্য অনুসারীদের নাশকতা সৃষ্টিতে প্ররোচিত করতো। তাদের দলের নিকট নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি ও দলের প্রতি নিজেদের আস্থার প্রতিদান দিতে তারা এ সকল নাশকতা ও সহিংসতার ভিডিও ধারণ করে তাদের দলের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দের নিকট প্রেরণ করতো বলে জানা যায়।
গ্রেপ্তার জজ মিয়া মাসুমের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। সে মাসুমের নির্দেশে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও মহাসড়কে গণপরিবহন, ব্যক্তিগত যানবাহন ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে রাস্তা অবরোধ করে নাশকতা ও সহিংসতা চালিয়েছে বলে জানা যায়। তার বিরুদ্ধে নারায়নগঞ্জ ও রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ৪টির অধিক মামলা রয়েছে বলে জানা যায়। এছাড়াও সে গ্রেফতারকৃত মাসুমের নির্দেশনায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গ্রেপ্তার এড়াতে মাসুমের সাথে কক্সবাজারে আত্মগোপনে চলে যায়।