স্টাফ রিপোর্টার,বিজয় বার্তা ২৪
বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘স্বাস্থ্য’ ভালো নেই মন্তব্য করে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, দেশের আর্থিক খাত নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানটিতে ব্যাপক সংস্কার দরকার হয়ে পড়েছে।
বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন সিস্টেমস রিকোয়ার সিরিয়াস রিফর্মস। ইট ইজ নট ইন এ ভেরি হেলদি কন্ডিশন। দ্যাট ইজ ম্যাই অ্যাসেসমেন্ট দ্যাট কনডিশন ইজ নট দ্যাট হেলদি।
তবে ঠিক কীভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে ঢেলে সাজাতে চান তা স্পষ্ট না করে নতুন গভর্নর ফজলে কবিরকে সেই দায়িত্ব দেওয়ার ইংগিত দেন অর্থমন্ত্রী।
তিনি বলেন, নতুন গভর্নর সম্ভবত ১৯ অথবা ২০ মার্চ দায়িত্ব নেবেন। তিনি এখন নিউ ইয়র্কে আছেন, ১৮ মার্চ দেশে ফিরবেন। নতুন গভর্নর আসার পরে তিনি নিজেকে সেটেল করতে কিছু সময় নেবেন। তখন উনি আরো (সংস্কারের বিষয়গুলো) দেখবেন।
এছাড়া সাবেক গভর্নর ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত কমিটিও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোথায় কোথায় সংস্কার প্রয়োজন তা খতিয়ে দেখবে বলেও জানান মুহিত।
ফেব্রুয়ারির শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে রাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮১ মিলিয়ন ডলার সুইফট ‘মেসেজিং সিস্টেমে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে’ ফিলিপাইনে সরিয়ে ফেলা হলেও বাংলাদেশের মানুষ বিষয়টি জানতে পারে মার্চের শুরুতে বিদেশি পত্রিকার খবরে।
অনেকেই সন্দেহ করছেন যে বিশ্ব সবচেয়ে বড় ব্যাংক হ্যাকিং হিসেবে পরিচিত এ ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা/দের যোগসাজশ থাকতে পারে।
ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকও দাবি করছে, অনুমোদিত সুইফট কোড এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্ভার ব্যবহার করেই অর্থ স্থানান্তরের ওই নির্দেশনা যায়।
এদিকে দীর্ঘদিন ধরে লাভজনক অবস্থানে থাকা বাংলাদেশ ব্যাংক গত অর্থবছরে প্রথমবারের মত বিপুল লোকসানের শিকার হয়।
২০১৪-১৫ অর্থবছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিট লোকসান দাঁড়ায় ২,৬২২ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৪-৯৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিট মুনাফা হয় ৫৯৮ কোটি টাকা। ১৯৯৫-৯৬ অর্থবছরে ৫৩০ কোটি, ১৯৯৬-৯৭ অর্থবছরে ৬৩৪ কোটি, ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছরে ৭৭০ কোটি, ১৯৯৮-৯৯ অর্থবছরে ৭৮৬ কোটি ও ১৯৯৯-২০০০ অর্থবছরে ৭৯৫ কোটি টাকা নিট মুনাফা হয়। ২০০০-০১ অর্থবছরে ৭১৫ কোটি, ২০০১-০২ অর্থবছরে ৯৪৯ কোটি, ২০০২-০৩ অর্থবছরে ৭৬০ কোটি, ২০০৩-০৪ অর্থবছরে ৯৩৯ কোটি, ২০০৪-০৫ অর্থবছরে ১,৮৯১ কোটি, ২০০৫-০৬ অর্থবছরে ২ হাজার ৪০৪ কোটি, ২০০৬-০৭ অর্থবছরে ৩,৪৬০ কোটি, ২০০৭-০৮ অর্থবছরে ৩,১৫২ কোটি, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ২, ৫০৫ কোটি, ২০০৯-১০ অর্থবছরে ১,২৮৭ কোটি, ২০১০-১১ অর্থবছরে ৮,৮৪২ কোটি, ২০১১-১২ অর্থবছরে ৭,০৩১ কোটি, ২০১২-১৩ অর্থবছরে ৩০৪ কোটি, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৩, ৩৫১ কোটি টাকা নিট মুনাফা হয়।