আন্তর্জাতিকডেস্ক,বিজয় বার্তা ২৪
বাংলাদেশে ঘাঁটি গেড়ে বসতে চায় বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক জঙ্গী গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)। সেই সাথে ঘোষণা করা হয়েছে আইএসের বাংলাদেশ প্রধানের নামও।
আইএস বলছে, বাংলাদেশের মধ্যে শক্ত ঘাঁটি তৈরি করতে পারলে, সেখান থেকে তারা ভারত এবং মিয়ানমারে বড় ধরনের হামলা পরিচালনা করতে সমর্থ হবে।
আইএস-এর মুখপাত্র সাময়িকী ‘দাবিক’-এ প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে আইএসের বাংলাদেশ প্রধান শেখ আবু-ইব্রাহিম আল-হানিফ একথা জানান। এই প্রথমবারের মতো আইএস তার ‘বাংলার যোদ্ধা’ দলের প্রধানের পরিচয় প্রকাশ করলো।
আইএস বাংলাদেশে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো শাখা ঘোষণা করেনি। তবে এই সংগঠনের অনুসারীরা ধর্মনিরপেক্ষ লেখক এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে। এই হামলাগুলোর ব্যাপারে গর্বিত বক্তব্য দিয়ে শেখ আবু-ইব্রাহিম আল-হানিফ বলেন, ‘নাস্তিক এবং নবীকে নিয়ে উপহাসকারী এবং মুরতাদদের গলা কাটার জন্য আমাদের যোদ্ধারা এখন চাকু ধার দিচ্ছে।’
তবে আইএস-এর প্রতিদ্বন্দ্বী দল আল-কায়েদার উপমহাদেশ শাখা আকিসও এই ধরনের হামলায় দায়িত্ব স্বীকার করেছে।
দীর্ঘ এই সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের কৌশলগত অবস্থানের সুবিধের কথা ব্যাখ্যা করে আল-হানিফ ভবিষ্যতে ‘হিন্দু ভারত’ এবং ‘বৌদ্ধ বার্মা’র বিরুদ্ধে জিহাদ পরিচালনার কথা বলেন।
‘মুসলিম হত্যার প্রতিশোধ’ এবং ঐ অঞ্চলে আইএস-এর খিলাফত প্রতিষ্ঠাই এই জিহাদের লক্ষ্য বলে তিনি জানান।
আবু ইব্রাহিম আরো দাবি করেছেন, জামায়াতে ইসলামির তৃণমূল পর্যায়ের কিছু সমর্থক দলটির ‘শিরকের কারণে হতাশ হয়ে’ তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন।
এ ছাড়া তাবলিগ জামাত, জামায়াতে ইসলামি ও আহলে হাদিসকে এ অঞ্চলে আইএসের কাজের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক বলে উল্লেখ করেছেন আবু ইব্রাহিম।
‘দাবিক’-এ বাংলাদেশকে বেঙ্গল নামে অভিহিত করা হয়েছে।
চলতি সংখ্যায় আবু ইব্রাহিমের সাক্ষাৎকার ছাড়াও বাংলাদেশে সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডের একটি সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। এতে পঞ্চগড়ে ধর্মযাজক জগেশ্বর রায়কে হত্যা এবং তার দুই ভক্তকে আহত করার তথ্য দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ‘হিন্দু ব্যবসায়ী’ তরুণ দত্ত, ঝিনাইদহের খোমিনি মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসক হাফিজ আবদুর রাজ্জাককে হত্যা করে ‘নিরাপদে ঘাঁটিতে’ ফেরার তথ্য দেওয়া হয়েছে।
আইএস-এর এই আঞ্চলিক প্রধান বলেন, ভারতের পূর্বদিকে বাংলাদেশ এবং পশ্চিম দিকে পাকিস্তান। (আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে আইএস-এর শাখা পুরো অঞ্চলটিকে খোরাসান প্রদেশ নামে ডাকে।)
তিনি বলেন, এর মানে হলো বাংলাকে শক্ত ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে সেখান থেকে এবং পাকিস্তান থেকে একই সঙ্গে ভারতের মধ্যে গেরিলা যুদ্ধ চালানো সম্ভব হবে।
মিয়ানমারের প্রশ্নে তিনি জানান, বাংলাদেশে অবস্থান জোরদার করার পরই তারা সে দেশে হামলা শুরু করবেন।
ভারত মিয়ানমারে জিহাদ শুরু করতে কেন দেরি হচ্ছে তা ব্যাখ্যা করে শেখ আবু-ইব্রাহিম আল-হানিফ বলেন, কাছের শত্রু, বাংলাদেশ সরকার এবং ভুয়া মুসলমানদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কারণেই দূরের শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করা যাচ্ছে না।
‘দাবিক’-এর ১৪তম সংস্করণটি গতকাল ১৩ই এপ্রিল প্রকাশিত হয়েছে। সূত্র- বিবিসি বাংলা।