বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
ঠিক এ কথাটাই লিখেছেন এক আইনজীবী। সুন্দরবনের কাছে রামপালে বাংলাদেশ এবং ভারতের যৌথ উদ্যোগে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরির চুক্তি স্বাক্ষরের পর এ কথা লিখেছেন তিনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আরো অনেকে জানিয়েছেন প্রতিক্রিয়া।
পরিবেশবাদীদের আপত্তির মুখেই মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় একটি পাঁচতারকা হোটেলে ভারতের হেভি ইলেকট্রিক্যালস লিমিটেডের (বিএইচইএল) সঙ্গে ইঞ্জিনিয়ারিং প্রকিউরমেন্ট কনস্ট্রাকশন-ইপিসি (টার্নকি) চুক্তি করেছে বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিআইএফপিসিএল)।
চুক্তি সই অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এক্সিম ব্যাংক প্রকল্পে দেড় বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থায়ন করবে যা ব্যয় করে ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম কেন্দ্র নির্মাণ সম্ভব হবে।
বাংলাদেশে ভারতীয় দূতাবাসের পক্ষ থেকে এক টুইটে রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের চুক্তিকে দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্কে এক ‘মাইলফলক’ বলা হলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দার ঝড় উঠেছে। পরিবেশবাদী এবং অ্যাক্টিভিস্টদের অণেকেই মনে করছেন, এই কেন্দ্র বিশ্বের অন্যতম বড় ম্যানগ্রোগ ফরেস্ট সুন্দরবনকে ধ্বংস করে দেবে।
অ্যাক্টিভিস্ট এবং আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া ফেসবুকে এই বিষয়ে লিখেছেন, ‘১২ জুলাই বাংলাদেশের একটি অংশের মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হলো। সুন্দরবন মরলে বাংলাদেশ বাঁচার কোনো উপায় নেই। এটা রাষ্ট্রদ্রোহিতা। সরকারদ্রোহিতাকে আইনের প্যাঁচে ফেলে রাষ্ট্রদ্রোহিতা বানিয়ে দিয়েছে।’
তিনি লিখেছেন, ‘রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে শুধু ব্যক্তি নয়, সরকারও দ্রোহ করতে পারে। রামপাল চুক্তি একটি মৃত্যু সনদ ছাড়া আর কিছুই নয়।’
অ্যাক্টিভিস্ট বাকি বিল্লাহ ফেসবুকে এক বিস্তারিত পোস্টে লিখেছেন, ‘বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন- রামপাল কয়লাবিদ্যুত প্রকল্পের বিরোধিতাকারীরা সুন্দরবনের ক্ষতি হওয়ার বিষয়টি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। সম্ভবত খনিজ কয়লা দিয়ে পানি পরিষ্কারের যে বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দিয়েছিলেন, তার অভ্রান্ততা প্রমাণ করতেই তিনি এ কথা বলেছেন। কারণ, পানি পরিষ্কার থিওরির কোনো কাউন্টার থিওরি বিরোধীরা দিতে পারেনি। পারা সম্ভবও ছিল না।’
তিনি লিখেছেন, ‘ঘটনা হচ্ছে, এইসব ধুরন্ধর শয়তানেরা নিজের বা নিজের সন্তানদের ভবিষ্যত বাসযোগ্য জায়গা হিসেবে বাংলাদেশকে অনেক আগেই বাতিল করে দিয়েছেন। এখন যত বেশি কামিয়ে নিতে পারেন, ততই সুবিধা। আর তাই জাতীয় স্বার্থ প্রশ্নে যৌক্তিক আলাপের ভাষা কথনোই তাদের বোধগম্য করা সম্ভব না। আপনি যতই তথ্য প্রমাণ দেন না কেন, তারা বলবে তালগাছ আমার …। কয়লা দিয়ে পানি পরিষ্কার করে বিজ্ঞানের চৌদ্দগুষ্ঠির কন্ট্রোল নিয়া নিছি। এখন প্রকল্পের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করা হলো।’
বাকি বিল্লাহ আরো লিখেছেন, ‘সংগ্রাম জারি রাখতে হবে। প্রকল্প এলাকার শতভাগ মানুষ এখন বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরোধী।
আর সাংবাদিক সুপ্রীতি ধর ফেসবুকে প্রশ্ন রেখেছেন, ‘…আচ্ছা, রামপাল না পরিবেশ ছাড়পত্র পায়নি? তাহলে চুক্তি হয় কী করে? গায়ের জোরে করিয়েই ছাড়লো?’ সূত্র: ডয়চে ভেলে