বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
উৎপাদনের স্বক্ষমতায় বাংলাদেশের পোশাক শিল্প অনেক এগিয়ে গিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহম্মেদ। তবে ইউরোপ সহ প্রধান বাজার গুলোতে মন্দাভাব বজায় থাকায় বাংলাদেশ তৈরি পোশাকের মূল্য কম পেয়েছে বলে উল্লেখ্য করেন তিনি। পাশাপাশি ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বাণিজ্যমন্ত্রী নীটওয়্যার সেক্টরের জন্য যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করেছেন তা অর্জনে বিকেএমইএ নিরলস ভাবে কাজ করবে। সেই সাথে আগামী ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিনত করতে বিকেএমইএ অগ্রনী ভূমিকা পালন করবে বলে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংগঠনটির সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের সম্মেলন কক্ষে ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে বাংলাদেশের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারনী সভায় বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহম্মেদ এমন মন্তব্য করেন। ওই সভায় বিকেএমইএ ছাড়াও বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি কারক সংগঠনগুলো অংশগ্রহণ করে।
সভায় বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহম্মেদ বলেন, বিগত অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়ে ছিল ৩৩ দশমিক ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার । অর্থবছর শেষে বাংলাদেশের রপ্তানি হয়েছে ৩৪ দশমিক ২৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ দশমিক ২১ শতাংশ এবং গত বছরের তুলনায় ৯ দশমিক ৭২ শতাংশ বেশি। বরাবরের মতো এবারো রপ্তানি আয়ের শীর্ষে ছিল তৈরী পোশাক খাত। যা মোট রপ্তানি আয়ের ৮২ দশমিক ০৫ শতাংশ।
মন্ত্রী আরো বলেন, তৈরী পোশাকের রপ্তানিতে পরিমানের ভিত্তিতে প্রবৃদ্ধি রপ্তানি মূল্যের প্রবৃদ্ধির চেয়ে অনেক বেশি হয়েছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে তৈরী পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৩ হাজার ৫৩৩ দশমিক ২৫ মিলিয়ন ইউনিট যা আগের বছরের তুলনায় ১২৪ দশমিক ৮২ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে নীটওয়্যার রপ্তানি হয়েছে ২ হাজার ৩৬২ দশমিক ৬৩ মিলিয়ন ইউনিট । যা আগের বছরের তুলনায় ১৯০ দশমিক ১৩ শতাংশ বেশি। এ থেকে আমরা বুঝতে পারি উৎপাদনের সক্ষমতায় বাংলাদেশের পোশাক শিল্প অনেক এগিয়ে গিয়েছে কিন্তু ইউরোপ সহ প্রধান বাজারগুলোতে মন্দাভাব বজায় থাকায় আমরা তৈরী পোশাকের মূল্য কম পেয়েছি।
২০১৬-১৭ অর্থবছরের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারনের ঘোষণায় মন্ত্রী বলেন, সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমরা ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জন্য রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ৩৭ দশমিক ০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার নির্ধারণ করছি। এর মধ্যে নীট পণ্যের রপ্তানির প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ০৯ শতাংশ ধরে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করছি ১৪ দশমিক ১৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ওভেন পণ্যের জন্য লক্ষ্যমাত্রা ১৬ দশমিক ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহম্মেদ এর রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে বিকেএমইএ এর সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান বলেন, বাণিজ্যমন্ত্রী ২০১৫-১৬ অর্থবছরের জন্য নীট খাতের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিলেন ১৩ দশমিক ২৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আমরা বাণিজ্যমন্ত্রীর দেয়া সেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছি এবং ১৩ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার নীট পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে ৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছি। এ প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহযোগীতা প্রদানের জন্য বাণিজ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। পাশাপাশি ২০১৬-১৭ অর্থবছরে নীটওয়্যার সেক্টরের জন্য যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তা অর্জনে বিকেএমইএ নিরলস ভাবে কাজ করবে। আমরা বিশ্বাস করি, আমরা এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে সক্ষম হবো এবং ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে নীটওয়্যার সেক্টর অগ্রনী ভূমিকা পালন করবে।
সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, বিকেএমইএ’র ২য় সহ-সভাপতি মনসুর আহমেদ, বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি ও এফবিসিসিআই এর সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ শফিউল ইসলাম, বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি (অর্থ) মোহাম্মদ নাসির, বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন, শিল্প মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সচিব মোঃ মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া এবং ইপিবি’র ভাইস চেয়ারম্যান মাফরুহা সুলতানা সহ আরো অনেকে।