বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
নারায়ণগঞ্জের বন্দরে একটি গবাদি পশুর খামার উদ্দেশ্যমূলকভাবে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে দূর্বৃত্তরা। আগুনে খামারে থাকা ৩৯টি ছাগল ও দুম্বার মধ্যে ঘটনাস্থলেই একটি ভেড়ার মৃত্যু হয়েছে। বাকীগুলো মূমূর্ষু অবস্থায় বেঁচে রয়েছে। শুক্রবার রাত দুইটার দিকে উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের লাঙ্গলবন্দের বাগবাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ক্ষতিগ্রস্ত খামারটির মালিক আনোয়ার বেপারী জানান, ব্যাংক থেকে ৫ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ও বিভিন্নজনের কাছ থেকে ধারদেনা করে তিনি এ খামারটি গড়েছেন। বর্তমানে খামারের অবস্থার উন্নতি হওয়ায় স্থানীয় প্রভাবশালী সন্ত্রাসীদের নজরে পড়ে যায়। শুক্রবার রাত একটার দিকে তিনি খামার থেকে বাড়িতে খেতে যান। পৌনে দুইটার সময় তিনি জানতে পারেন কে বা কারা তার খামারে প্রেট্রোল দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দিয়ে গেছে। পরে গ্রামবাসীর সহযোগিতায় আগুন নেভানো হলেও খামারটি পুড়ে ভস্ম হয়ে যায়। আগুনে ঘটনাস্থলেই একটি দুম্বার মৃত্যু হয়। বাকীগুলো ঝলসে গিয়ে মূমূর্ষু অবস্থায় রয়েছে। সেগুলোও বাঁচার কোন সম্ভাবনা নেই। আগুনে তার কমপক্ষে ১২ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তার অভিযোগ শত্রুতা ও প্রতিহিংসাবশত: পরিকল্পিতভাবেই তার খামারে আগুন দেয়া হয়েছে। নিজের ও পরিবারের স্বজনদের প্রাণভয়ে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না। তিনি প্রশাসনের কাছে এর সুষ্ঠু বিচার দাবী করেন।
এলাকাবাসী ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের স্বজনরা জানান, এর আগেও সন্ত্রাসীরা বিষ প্রয়োগ করে এই খামারের আটটি পশুকে হত্যা করেছে এবং দুইটি লুট করে নিয়ে গেছে। ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায়নি। পরিবারটি সহায় সম্বলহীন হয়ে পড়ার পাশাপাশি নিজেদের নিরাপত্তা নিয়েও আতংকিত হয়ে পড়েছেন। গ্রামবাসী এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দোষীদের বিচার দাবী করেন।
আনোয়ার বেপারীর স্ত্রী রাশিদা বেগম হতাশ কন্ঠে বলেন, আমার সব শেষ হয়ে হয়ে গেছে। আমরা সর্বস্বান্ত হয়েছি। ব্যাংক লোন বাবদ প্রতি মাসে আমাদের ৬০ হাজার টাকা কিস্তি পরিশোধ হয়। এই টাকা কোথা থেকে দেব ? ছেলে মেয়ের লেখাপড় বন্ধ হয়ে যাবে। সংসারের সবাইকে না খেয়ে মরতে হবে।
মুছাপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড মেম্বার খািলল প্রধান জানান, বিষয়টি উইনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে জানানো হয়েছে। চেয়ারম্যান বর্তমানে ঢাকার বাইরে আছেন। মোবাইল ফোনে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন গ্রামের মাতবর শ্রেণীর লোকদের নিয়ে জড়িতদের শনাক্ত করতে। আমরা সেই অনুযায়ী কাজ করছি। জড়িতদের ধরতে পারলে সামাজিকভাবে উপযুক্ত বিচার করা হবে। তবে পুলিশ প্রশাসনের কাছেও এ ব্যাপারে তিনি সহযোগিতা চান।
বন্দর থানা পুলিশের আওতাধীন কামতাল পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মোস্তাফিজুর রহমান শনিবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানান, বিষয়টি দূর্ঘটনা নাকি নাশকতা তা তদন্ত করে বের করার চেষ্টা চলছে। তদন্তের পর ব্যবস্থা নেয়া হবে। খামার মালিক অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। পশুগুলোকে যদি কেউ আগুন দিয়ে পুঁড়িয়ে থাকে তাহলে তারা পশুর চেয়ের অধম। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।