বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
নারায়ণগঞ্জ শহরের ১৬নং ওয়ার্ডস্থ বাবুরাইলে ঋষি পাড়া কালিপূজার গেইট ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর আফসানা আফরোজ বিভার অনুগতদের বিরুদ্ধে। গুঞ্জন রয়েছে, বিভার ইনন্ধেই এমন ন্যাক্কারজনক হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। এ নিয়ে ঋষিপাড়ায় আতঙ্ক বিরাজ করলেও আরো ক্ষয়ক্ষতির ভয়ে প্রকাশ্যে কেউ কিছু বলতে পারছেন না।
ঘটনাস্থলে গিয়ে একাধিক প্রত্যক্ষদর্শীর সাথে কথা বলে জানা যায়, ১ নভেম্বর রাতে সিটি করপোরেশনের ১৬,১৭,১৮ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর বিভার লোকজন ওই হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটায়। চিহ্নিত ওই সন্ত্রাসী বাহিনী এসময় সনাতন ধর্মাবলম্বী একাধিক ব্যক্তিকে মারধর ও গালিগালাজ করে। হামলাকারীরা সকলেই ওই নারী কাউন্সিলরের নিকটজন হিসেবে পরিচিত৷ প্রভাবশালী মহলের ভয়ে ঋষিপাড়ার নিরীহ জনসাধারণ রয়েছেন চাপা আতঙ্কে। আবারও হামলা হতে পারে, এমন ভয়ও চেপে ধরেছে তাদের৷ রাত জেগে মণ্ডপ পাহারা দিতে দেখা মহল্লার সনাতন ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষদের। হামলাকারী সন্ত্রাসী ও তাদের আশ্রয়দাতাদের চেনা সত্বেও কেউই প্রকাশ্যে মুখ খুলতে পারছেন না। ঘটনা চাপা দিতে নিরহ হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকে নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, এমন তাণ্ডব ঋষিপাড়ায় নতুন নয়। ওই সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরের বাহিনী প্রায়ই এমন ঘটনা ঘটিয়ে এলাকায় ত্রাস ও ভয়ের রাজত্ব কায়েম রাখে। মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের মদের অর্থ সরবরাহ করে ওই কাউন্সিলরের লোকেরা তাদের দিয়ে নিয়মিত বিতর্কিত এমন কর্মকান্ড পরিচালনা করে থাকেন বলে অভিযোগ রয়েছে৷
আফসানা আফরোজ বিভার ঘনিষ্ঠজন ও বাবুরাইল এলাকার আবু তাহেরের ছেলে মো আরমান ও তার লোকজন এই বীভৎস এই তাণ্ডব চালিয়েছে বলে জানান স্থানীয় লোকজন। মূলত আরমানকে এলাকাবাসী বিভার ঘনিষ্টলোক হিসেবেই চেনেন সবাই৷ বিভার বিভিন্ন মিছিল-সমাবেশে লোকবল নিয়ে আরমানের সরব উপস্থিতি দেখা যায়৷
ঘটনার খবর পেয়ে নারায়ণগঞ্জ পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তারা হামলা ও ভাঙচুরের বিষয়ে খোঁজ খবর নেন ও স্থানীয় জনসাধারণের সাথে কথা বলেন। এ বিষয়ে মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপন বলেন, ‘এমন ঘটনা নিঃসন্দেহে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের জন্য বড় হুমকি। যেখানে সকল ধর্মের মানুষের সহাবস্থান নিশ্চিত করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে, সেখানে এই ধরনের ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। অন্যান্য ধর্মের মানুষের মতো সনাতন ধর্মাবলম্বীদেরও নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব স্থানীয় জনপ্রতিনিধির। এই দায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধির উপর বর্তায়। এমন ঘটনায় আমরা গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করছি।’
এ বিষয়ে জানতে স্থানীয় কাউন্সিলর আফসানা আফরোজ বিভার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলে তিনি তা রিসিভ করেননি।
প্রসঙ্গত, নারায়ণগঞ্জে পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী বিএনপি নেতা হাসান আহমেদ কাউন্সিলর বিভার স্বামী। গত ২২ অক্টোবর রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা, সহিংসতা, হেফাজতের তাণ্ডব মামলাসহ ও বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডের অভিযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। জেলা পুলিশ তথ্য মতে , সন্ত্রাসী হাসান আহমেদ নারায়ণগঞ্জের দক্ষিণাংশের ত্রাস হিসেবে পরিচিত।