আন্তর্জাতিকডেস্ক.বিজয় বার্তা ২৪
বাংলাদেশের পোষাক খাতে এখনো কাজের নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা হয়নি। বিশ্বখ্যাত ফ্যাশন হাউজ সুইডেনের এইচ অ্যান্ড এমের শীর্ষ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর অর্ধেকের বেশিই বাংলাদেশি। তবে দুখঃজনক হলেও সত্য, সাভারের রানা প্লাজা ধসের পর দুই বছর পেরিয়ে গেলেও এর অনেক কারখনাতেই অগ্নি নির্বাপনের ন্যূনতম ব্যবস্থাটুকুও নেই। পোশাক খাত নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান ক্লিন ক্লথ ক্যাম্পেইনের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এইচ অ্যান্ড এমের ‘গোল্ড’ ও ‘প্লাটিনাম’ গ্রেডের সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এখনো ছোট দরজা ও কলাপসিবেল গেট কারখানা থেকে সরিয়ে নেয়নি। ১৩ শতাংশ সরবরাহকারীই কারখানার ভেতরে থাকা দরজার তালা অপসারণে ব্যর্থ হয়েছে। এসব দরজা সবসময় তালাবদ্ধ থাকায় অগ্নিকাণ্ডের সময় শ্রমিকরা দ্রুত কারখানা থেকে বের হতে পারে না।
২০১৩ সালের এপ্রিলে সাভারের রানা প্লাজা ধসে প্রায় ১১০০ শ্রমিক নিহত হয়। ওই ভবনটিতে আন্তর্জাতিক ফ্যাশন হাউজ প্রিমার্ক, মাতালান ও বেনিটনে পোশাক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের কারখানা ছিল। এ ঘটনার পর বাংলাদেশে কয়েক হাজার পোশাক কারখানার ভবন ও অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা পরিদর্শণ করে ইউরোপ ও আমেরিকার ক্রেতাদের পক্ষে অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্স নামে দুটি প্রতিষ্ঠান।
ইউরোপীয় ক্রেতাদের পক্ষে অ্যাকর্ডের পরিদর্শকরা কারখানা ভবনের কাঠামোগত ত্রুটি দূর, বৈদ্যুতিক ও অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য পরিকল্পনা পেশ করেছিল। তবে রানা প্লাজা ধসের পর আড়াই বছর পেরিয়ে গেলেও ওই পরিকল্পনার মাত্র ১০ শতাংশ বাস্তবায়িত হয়েছে।
ওয়ার্কার্স রাইটস কনসোর্টিয়ামের স্কট নোভা বলেন, ‘অ্যাকর্ডের দেওয়া প্রতিটি প্রস্তাবনা আড়াই বছরে বাস্তবায়িত হওয়া উচিৎ ছিল। তবে দুখঃজনক হলেও সত্য এইচ অ্যান্ড এমের কোনো বাংলাদেশে সরবরাহকারী কারখানাকে নিরাপদ বলা মুশকিল।’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এইচ অ্যান্ড এমে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ১৩ শতাংশে ভেতরের তালাবদ্ধ দরজা সরিয়ে নেওয়া হয়নি। ৩৮ শতাংশ কারখানায় এখনো প্বার্শ দরজা ও কলাপসিবেল গেট সরানো হয়নি। ৫৫ শতাংশ কারখানা অগ্নিকাণ্ডের সময় দ্রুত বের হওয়ার মতো সংযোজন করেনি। এছাড়া এসব কারখানার দেয়াল ঘেঁষে সরু যে সিড়ি রয়েছে সেগুলোও তারা বন্ধ করেনি। এসব ঘটনায় যে কোনো সময় শ্রমিকরা দুর্ঘটনার সময় বড় ক্ষয়-ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে।