বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার পূর্বাচল উপশহরের একটি লেক থেকে তিনটি পলিথিন ব্যাগে মোড়ানো পাশের পরিচয় মিলেছে। নিহত ব্যক্তি নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার চান ডাইংয়ের মালিক জসিম উদ্দিন মাসুম। বৃহস্পতিবার সকালে নিহতের ছেলে নারায়ণগঞ্জের ভিক্টোরিয়া হাসপাতালের মর্গে গিয়ে বাবার লাশ শনাক্ত করেন।সেই সাথে হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। অবৈধ প্রেমের (পরকীয়া) সম্পর্কের জেরে ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন মাসুমকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে জবাই করে হত্যা করে। লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে টুকরো টুকরো করে ব্যাগে করে বিভিন্ন স্থানে ফেলে দেয় পরিকীয়া প্রেমিকা রুমা। পুলিশের কাছে ১৬১ ধারায় হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করেছে রুমা । আবেগ ও ক্ষোভের বসে দুধের সাথে ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে পান করিয়ে হত্যা করে এবং লাশ টুকরা টুকরা করে পলিথিন ব্যাগে ভরে পাঠা ও সিএনজিতে করে বিভিন্ন জায়গায় ফেলে দেয়।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার এ তথ্য জানান।
পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার বলেন, রূপগঞ্জের পূর্বাচলে জসিম উদ্দিন মাসুমের (৬২) ৭ টুকরো লাশ উদ্ধার করা হয়। প্রথমে লাশের পরিচয় পাওয়া যায়নি। অজ্ঞাত পরিচয়ের লাশটির পরিচয় পেতে গুলশান থানার একটি জিডির সূত্র ধরে লাশের পরিচয় জানতে পারি।হত্যাকান্ডে ভুক্তভোগী হলেন ফতুল্লার চাঁদ ডাইংয়ের মালিক শিল্পপতি জসিম উদ্দিন মাসুম।। তিনি বিবাহিত এবং তার সংসারে সন্তান রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এই ঘটনায় পুলিশ অনুসন্ধান চালিয়ে এই হত্যাকান্ডের মূল আসামি মোসা. রুমা আক্তারকে (২৮) রাজধানীর কাফরুল শেওড়াপাড়া এলাকার ভাড়া বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরে আসামিকে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করে তার দেখানো স্থান থেকে একটি চাপাতি, হেসকো ব্লেড এবং ভুক্তভোগির পরিহিত সাফারি, এক জোড়া স্যু উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, অবৈধ প্রেমের সম্পর্কের জেরে এই হত্যাকান্ড ঘটেছে।রুমার সাথে শিল্পপতি মাসুসের একটা অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে। এর পাশাপাশি এই শিল্পপতি মাসুম অন্য আরেক নারীর সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। এই বিষয়টি জানতে পেরে রুমা রাগে-ক্ষোভে ও আবেগের বশবতি হয়ে তাকে খুন করে। গত ১০ নভেম্বর রাতে রাজধানীর শেওরাপাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। মূলত সেখানে একটি ভাড়া বাড়িতে তারা একত্রিত হতো। প্রথমে তাকে দুধের সাথে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করা হয়। এর পর চাপাতি দিয়ে জবাই করে লাশ টুকরো টুকরো করা হয়। সেই টুকরো টুকরো অংশ প্রথমে পাঠাও ও পরে সিএনজি ভাড়া করে এগুলো বিভিন্ন স্থানে ফেলেছে। গ্রেফতারকৃত রুমা আক্তার ময়মনসিংহ গৌরিপুর থানার তাতরাক্ন্দাা এলাকার নজর আলীর মেয়ে। মেয়েটি অবিবাহিত।
তিনি আরও বলেন, এই ঘটনায় আরও দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তারা এই ঘটনায় জড়িত কিনা তা যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম পরিচয় প্রকাশ করা হচ্ছে না। এ ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা হয়েছে।
এ ব্যাপারে নিহতের বড় ছেলে ওবায়দুল ইসলাম শিবু তার বাবার হত্যাকারীদের দ্রুত সনাক্ত করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানান। তিনি বলেন, আমার বাবাকে যে ভাবে নিশৃংস ভাবে হত্যার পর শরীর যে ভাবে টুকরো টুকরো করে ফেলা হয়েছে তা কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছিনা।