নারায়ণগঞ্জ,বিজয় বার্তা ২৪
ইজারাদারের কালেক্টর নামক ডাবল টোকেন ও জোর করে সকল নৌ-পথে চাঁদাবাজি, নৌ শ্রমিকদের উপর হামলার প্রতিবাদে, রাহাজানি, সন্ত্রাস ও তথাকথিত নৌ-প্রশাসনের হয়রানি বন্ধ সহ বাংলাদেশ জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশনের পেশকৃত ৭ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে বৃহষ্পতিবার বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়ন বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করেছেন।
পরে বিকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়ন শ্রমিকদের সমস্যা সমাধানে জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান মিঞার সভাপতিত্বে সভা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া নৌ শ্রমিকবৃন্দ পুলিশ সুপার বরাবর স্মারকলিপি পেশ করেন।
এসময় বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়ন’র শ্রমিকবৃন্দ উক্ত সভা বয়কট করেছেন এবং পরবর্তীতে কর্মবিরতি অব্যাহত রেখে বৃহত্তর আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
এদিকে বাংলাদেশ কার্গো ট্রলার বাল্কহেড শ্রমিক ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছেন তারা নৌ ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছে।
এসময় সভাকক্ষে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব) এস এম নজরুল ইসলাম, (সার্বিক) মো: গাউছুল আজম, নৌ পুলিশ নারায়ণগঞ্জ জোনের অতিরিক্তি পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাতেম, সহকারী পুলিশ সুপার মান্নান প্রমূখ।
এ সময় শ্রমিকেরা বলেন, সারা দেশে বাংলাদেশ জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশনের শ্রমিক ও কর্মচারীরা আজ নির্যাতিত। নৌ-পথে চলাচলরত এসব শ্রমিকদের কাছ থেকে জোর করে ডাবল টোকেন আদায় ও তাদেরকে মারধর করা হচ্ছে। তার পাশাপাশি নৌ-পুলিশের বিভিন্ন দিক থেকে চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটে চলেছে প্রতিনিয়ত। এই চাঁদাবাজির সাথে জরিত রয়েছে বিআইডব্লিউটিইএ এর নারায়ণগঞ্জ জোন এর ইন্সপেক্টর শমসের। বিশেষ করে নবীগঞ্জ ঘুদারা ঘাট, শাহ সিমেন্টের ফ্যাক্টরী থেকে কলাগাছিয়া পুলিশ ফাঁড়ির আওতাধীন গজারিয়া, কালীপুরা চর কিশোরগঞ্জ, ষাটনল, দশআনি এসব এলাকায় এই চাঁদাবাজি প্রতিদিনই ঘটে চলেছে। চর কিশোরগঞ্জ এলাকার নাসির মেম্বার, মুন্সিগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি আফসু চেয়ারম্যান ও চর কিশোরগঞ্জ এলাকার মোতালিব মেম্বারের নেতৃত্বে নৌ-পথে এই চাঁদাবাজি হচ্ছে।
শ্রমিকেরা আরো বলেন, রাতের বেলায় নদীপথে আমাদের বোটগুলো আটকিয়ে নানা অজুহাত দেখিয়ে হাতে ধরিয়ে দেয়া হচ্ছে তাদের মনগড়া ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকার একটি টোকেন। কিছু দুর গেলে আবারও আটকিয়ে অপরগ্র“প জোর করে টোকেন নিতে বাধ্য করাচ্ছেন। শ্রমিকরা এর প্রতিবাদ করলে তাদেরকে মারধর করে গুরুতর আহত করে হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। গত কয়েকদিন পূর্বে রাতের বেলায় আমাদের দুজন শ্রমিককে নদীতে বোট আটকিয়ে মারধর করে গুরুতর আহত করা হয়। বর্তমানে তারা নারায়ণগঞ্জ খাঁনপুরে অবস্থিত ৩শ’ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এসব বিষয়ে বিগত কিছুদিন পূর্বে আমরা বাংলাদেশ জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশনের শ্রমিক ও কর্মচারীরা ইউনিয়ন নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার ও নৌ-পুলিশ এর ইন্সপেক্টর এর বরাবর একটি লিখিত স্বারকলিপি বাংলাদেশ জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আয়নূল হোসেন উত্তম ও কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারন সম্পাদক সবুজ সিকদারের এর নেতৃত্বে প্রদান করেছি। আমরা শ্রমিক, দুমুঠো খাবারে জন্য নিজের দেহকে বিসর্জন দিয়ে শরীর থেকে ঘাম ঝড়িয়ে আমরা জীবনের বাজী রেখে এই নৌ-পথে চলাচল করি সামান্য অর্থ উপার্জনের আশায়। প্রশাসনকে বলতে চাই এর ব্যবস্থা করতে না পারলে আর যদি এভাবেই চলে তাহলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আইনুল হোসেন উত্তম, সাধারণ সম্পাদক সুবজ শিকদার, ডেমরা শাখার সভাপতি জাকির হোসেন, খাদ্য পণ্য নৌযান শ্রমিকের কেন্দ্রেীর কমিটির সভাপতি ইদ্রিস খাঁন, বাংলাদেশ জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত আলী, ত্রান বিষয়ক সম্পাদক অহিদুর রহমান মাষ্টার প্রথম শ্রেনী, বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি নিজামউদ্দিন, যুগ্ম সম্পাদক নূরে আলম হাওলাদার, সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, মুন্সিগঞ্জ শাখার সহ সভাপতি মাসুদ রানা, নান্নু মিয়া, নজরুল ইসলাম, আলাউদ্দিন, কাওসার প্রমুখ।