স্টাফ রিপোর্টার,বিজয় বার্তা ২৪
নেপালকে ৬ উইকেটে হারিয়ে প্রথমবারের মত অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠল বাংলাদেশ। শুক্রবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টের প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালে আগে ব্যাটিং করে নেপাল ৯ উইকেটে ২১১ রান সংগ্রহ করে। জবাবে বাংলাদেশ ৪৮.২ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে জয় নিশ্চিত করে।
যুব বিশ্বকাপের প্রথম আসর বাদে প্রতিটি আসরে বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করলেও এবারই প্রথম সেমিফাইনালে উঠল বাংলাদেশ। এর আগে যুব বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সাফল্য ছিল ২০০৬ সালে, সেবার পঞ্চম হয়েছিল বাংলাদেশ। শুধু যুব বিশ্বকাপ না বৈশ্বক কোনো ক্রিকেট টুর্নামেন্টে এটাই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সাফল্য।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ জাকির হাসান ৭৫ ও মেহেদী হাসান মিরাজ ৫৫ রান করে অপরাজিত থাকেন।
এর আগে শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশের যুবারা। সাইফ হাসান (৫), পিনাক ঘোষ (৩২), নাজমুল হোসেন শান্ত (৮) ও জয়রাজ শেখ (৩৮) রান করেন।
দলীয় ১৭ রানে নেপালের স্পিনার সুনিল ধামালার বলে এলবিডাব্লিউ’র শিকার হন সাইফ। দ্বিতীয় উইকেটে প্রতিরোধ পায় বাংলাদেশ। পিনাক ঘোষ ও জয়রাজ শেখ ৪৬ রান যোগ করেন। কিন্তু দুজনের ভুল বুঝাবুঝিতে রান আউটে এ প্রতিরোধ ভেঙে যায়। পিনাক ঘোষের ৫৪ বলে ৩২ রানের ইনিংসটিতে ছিল ২টি চারের মার। গ্রুপ পর্বে দাপটের সঙ্গে ব্যাটিং করা নাজমুল হোসেন শান্ত এদিন বেশিক্ষণ টিকে থাকতে পারেননি। ৮ রান করে লেগ স্পিনার সন্দীপ ল্যামিচানের হাতে ফিরতি ক্যাচ দেন শান্ত। শান্তর বিদায়ের কিছুক্ষণ পরই ধামালার বলে এলবিডাব্লিউ’র শিকার হন জয়রাজ শেখ (৩৮)।
এর আগে মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২১১ রান সংগ্রহ করে নেপাল।
ফিল্ডিং করতে নেমে শুরুতেই দাপট দেখায় বাংলাদেশ। ১৯ রান খরচ করেই ২ উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। ষষ্ঠ ওভারের দ্বিতীয় বলে পেসার সাইফউদ্দিনের বলে বোল্ড হন ওপেনার স্বন্দ্বীপ সুনার (৭)। পরের ওভারের প্রথম বলে আব্দুল হালিমের পরিবর্তে খেলতে নামা মেহেদী হাসান রানা চমক দেখান।
গতির পাশাপাশি অসাধারণ এক বাউন্সে তুলে নেন প্রথম উইকেট। ব্যাটসম্যান জোগেন্দ্র সিং কারকি (১) ব্যাট নামিয়েও রক্ষা পাননি। দ্রুত ২ উইকেট হারিয়ে তৃতীয় উইকেট জুটিতে প্রতিরোধ গড়ে তুলে নেপাল। অধিনায়ক রাজু রিজাল ও সুনিল ধামালা ৪৪ রান যোগ করেন। বিপজ্জনক হয়ে উঠা এ জুটি ভাঙে রান আউটে। ১৯তম ওভারের প্রথম বলে নাজমুল হোসেন শান্তর থ্রোতে উইকেট রক্ষক জাকির হাসান স্ট্যাম্প তুলে সুনিল ধামালাকে (২৫) আউট করেন।
চতুর্থ উইকেটে ৫১ রানের জুটি পায় নেপাল। বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ব্যাটিং করে ৫৭ বলে ৫১ রান যোগ করেন রাজু রিজাল ও আরিফ শেখ। অধিনায়ক রাজু হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন। এ সময় বাংলাদেশের অধিনায়ক স্পিন অ্যাটাক সরিয়ে পেস অ্যাটাক আনার পর সাফল্য পায় বাংলাদেশ। পেসার সাইফউদ্দিনের বল তুলে মারতে গিয়ে মিড উইকেটে ক্যাচ তুলে দেন আরিফ শেখ (২১)। অসাধারণ দক্ষতকায় ক্যাচটি লুফে নিতে কোনো সমস্যাই হয়নি জয়রাজ শেখ ইমনের।
তবে একপ্রান্ত আগলে খেলে যেতে থাকেন রাজু রিজাল। হাফসেঞ্চুরির পরও বাংলাদেশের বোলারদের বেশ দাপট দেখিয়ে খেলে যেতে থাকেন ডানহাতি এ ব্যাটসম্যান। তবে জুনিয়র টাইগারদের ফিল্ডিং নৈপুণ্যে হার মানতেই হয় তাকে। তার ৮০ বলে ৭২ রানের ইনিংসটি থেমে যায় শান্ত ও জাকির হাসানের ফিল্ডিংয়ে। রান আউট হয়ে ফিরে যান রাজু। অন্যপ্রান্তে থাকা বাহাতি রাঝভির সিংকে বেশিক্ষণ টিকতে দেননি স্পিনার শাওণ। শাওণের বলে সুইপ করতে গিয়ে এলবিডাব্লিউ’র শিকার হন রাঝভির সিং (৯)।
শেষ দিকে দিপেন্দ্র সিং আইরি ২২ রান, প্রেম তামাং ২২ রান এবং কৌশল ভুটেলের ১৪ রানে ২১১ রানের পুঁজি পায় নেপাল।
বল হাতে বাংলাদের সেরা বোলার পেসার সাইফউদ্দিন। ৩৮ রানে ২ উইকেট নেন তিনি। এ ছাড়া ১টি করে উইকেট নেন মেহেদী হাসান রানা, মেহেদী হাসান মিরাজ ও সালেহ আহমেদ শাওন।