বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ-বিএনপির আগাম প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে সাবেক ও বর্তমান এমপি এবং দলের প্রভাবশালী নেতাদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে এলাকাটি। রাজনৈতিক দলগুলো যেমন অনেক আগে থেকেই তাদের প্রার্থী নিয়ে হিসাব-নিকাশ করছে, তেমনি সাধারণ মানুষও হিসাব করছে আগামী সরকারে কারা থাকবেন। এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। তবে যে দলেই সরকার গঠন করুক না কেন বিএনপিসহ সব দলই আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে তা অনেকটাই নিশ্চিত। নির্বাচনের এখনো অনেক দিন বাকি। তবুও আগাম প্রস্তুতি নিয়ে সম্ভাব্য এমপি প্রার্থী হিসেবে নবীন-প্রবীণ মিলে অন্তত এক ডজন নেতা নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকার মানুষের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করছেন। তাদের এ ঘন ঘন যোগাযোগ রক্ষাই আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে এলাকায়। এতদিন তাদের অনেককেই মাঠে দেখা না গেলেও মনোনয়ন পেতে এখন সক্রিয় হয়ে উঠছেন বলে দলীয় নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন। এ নিয়ে দলের ভেতরে ও বাইরে কিছুটা ক্ষোভও দেখা দিয়েছে। আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে এরই মধ্যে দেশব্যাপী চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। বিগত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন বিশ দলীয় জোট অংশ না নিলেও আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিচ্ছে এমন ধারণা নারায়ণগঞ্জের তৃণমূল মানুষের মধ্যে। এ কারণে আগামী নির্বাচনকে ঘিরে ক্রমেই সরগরম হয়ে উঠছে নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক অঙ্গন। ফলে সাবেক ও বর্তমান এমপি এবং নতুন করে এমপি মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মাঠে-ময়দানে সরব উপস্থিতি লক্ষ করা যাচ্ছে। একাদশ নির্বাচনকে সামনে রেখে এরই মধ্যে দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির পক্ষ থেকে পৌর, জেলা, উপজেলাপর্যায়ে কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে দলটি। কমিটি গঠনের প্রক্রিয়াকে ঘিরে পদ পেতে মরিয়া নেতাকর্মীরা। এ দিকে কমিটি গঠন নিয়ে জেলা ও উপজেলা বিএনপির ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। ত্যাগীদের মূল্যায়ন না করে অযোগ্যদের ভালো পদে বসানোর অভিযোগ রয়েছে দলটির বিরুদ্ধে। তবে যাই হোক বিভেদ ভুলে আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে চায় দলটি।
সূত্রে জানা যায়, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে সরগরম হয়ে উঠেছে নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক অঙ্গন। ইতোমধ্যে বিভিন্ন সভা সমাবেশে অঙ্গীকারনামা তুলে ধরেছেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতৃবৃন্দ। দু’টি দলের নীতি নির্ধারকরা বলছেন, ভেতরে ভেতরে ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে মনোনয়ন প্রক্রিয়াও। তবে নির্বাচনী পদ্ধতি নিয়ে দ্বিমত পোষণ করলেও দুটি দলই শঙ্কায় আছে, দলীয় অন্তঃকোন্দল নিয়ে। বর্তমান সরকারের ৫ বছর মেয়াদ অনুযায়ী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকি এখনো দেড় বছরেরও বেশী। তবে ইতিমধ্যেই দেশের সব মহলে শুরু হয়েছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে নানা জল্পনা কল্পনা। তাই ভিতরে ভিতরে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপিও। নির্বাচনে মনোনয়ন দেয়ার ক্ষেত্রে বিএনপি আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় নেতাদের গুরুত্ব দিলেও আওয়ামী লীগের চোখ সংসদ সদস্যদের বিগত বছরগুলোর আমলনামার দিকে।
নারায়ণগঞ্জের একটি পথ সভায় সড়ক ও যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গ্রহণযোগ্য প্রার্থী আমা চাচ্ছি কোথাও কোথাও হয়তো এর একটু ঘাটতি আছে। প্রত্যেকের কাজের একটা তালিকা নেতৃর কাছে আছে। জনগণের কাছে যে প্রার্থী গ্রহণযোগ্য তাকে আমরা মনোনয়ন দেবো।’
একই সুরে কথা বলেছেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের মনোনয়ন দেবো।’
নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগ মনে করছে, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ঐক্যবদ্ধতা দলকে বিএনপি থেকে এগিয়ে রাখলেও আগামী নির্বাচনে তাদের ডোবাতে পারে বিশৃঙ্খল তৃণমূল। আর বিএনপির দাবি, দলের মধ্যে অন্তদ্ধন্ধ থাকলেও তাদের প্রধান শক্তি জনগণই।
এদিকে মহানগর বিএনপির সাধারন সম্পাদক এটিএম কামাল বলেছেন, ‘আমাদের জনগণের প্রতি অনেক বেশি আস্থা। তাই আমরা চাচ্ছি নিরপেক্ষ সুষ্ঠু একটা নির্বাচন হোক।’
নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই বলেন, ‘আমাদের সব নেতা কর্মী ঐক্যবদ্ধ। যেখানে যা সমস্যা আছে সিনিয়র নেতাদের সাথে তৃনমূলকে নিয়ে বিভিন্ন বৈঠকের মাধ্যমে সমাধান করা হবে।