বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
আন্তর্জাতিক শ্রমজীবী নারী দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলার উদ্যোগে “নারীদের লড়াইয়ের গল্প” শীর্ষক আলোচনা সভা এবং ইফতার কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার চাষাঢ়াস্থ কার্যালয়ে নারীদের লড়াইয়ের গল্প” শীর্ষক আলোচনা সভা এবং ইফতার কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়
আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ মহানগরের নির্বাহী সমন্বয়কারী পপি রানী সরকার। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন ঢাকা মহানগরের সংগঠক সানজিদা ইসলাম ইলমা।
ছাত্রনেতা সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং ছাত্রনেতা মৌমিতা নুরের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন তোলারাম কলেজের সংগঠক রাইসা ইসলাম,মুন্নি আক্তার প্রত্যাশা, কদম রসুল কলেজের সংগঠক অনামিকা চৌধুরি, ভোলাইল শাখার সংগঠক জান্নাতি আক্তার,পাগলা উচ্চ বিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আফসানা আহমেদ, সদস্য তিশা,আন্দোলন কারী শিক্ষার্থী সানজিদা ইসলাম,মউ আক্তার, আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলার দপ্তর সম্পাদক অপূর্ব রয়, অর্থ সম্পাদক শাহিন মৃধা, প্রচার সম্পাদক রাতুল দেওয়ান, নারায়ণগঞ্জ কলেজ শাখার সদস্য সচিব আবিদ রহমান, সদস্য শেখ সাদী, তাহমিদ আনোয়ার, কদম রসুল কলেজ সংগঠক শফিক উদ্দিন শিপন সহ অন্যান্য সংগঠক ও সাধারন শিক্ষার্থীরা।
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে পপি রানী সরকার বলেন, “আন্তর্জাতিক শ্রমজীবি নারী দিবসে নারীরা তাদের শ্রম ঘন্টা কমানোসহ নারীর বিভিন্ন অধিকার নিয়ে নারীদের যে সংগ্রাম ও ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছিল সেই সকল সংগ্রামী নারীদের জানাই শুভেচ্ছা। সকল নারীদের প্রতি শ্রদ্ধা। সে সাথে এ অভ্যুত্থানের নারীদের জানাই শুভেচ্ছা। দেশের প্রতিটা সংকটে নারীরা বুক চিতিয়ে লড়াই করেছে এবং সকল স্তরেই নারীদের ভূমিকা অপরিসীম। বিশেষ করে ২৪ এর অভ্যুত্থানে নারীদের ভূমিকা ছিলো অতুলনীয়। ইতিহাস সাক্ষী যে,নারীরা যেই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে সেই আন্দোলন সফলতা লাভ করে। তার ধারাবাহিকতায় নারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ এর মধ্য দিয়ে ২৪ এর অভ্যুত্থানে আমরা বিজয় পাই। কিন্তু এতকিছুর পরও সমাজে নারীদের কে হেয় করে দেখা হয়। রাষ্ট্রে নারীর নিরাপত্তা বলতে কিছু নেই। আমরা দেখছি সারাদেশে অব্যাহত ভাবে নারী ও শিশু নিপীড়ন হলেও নারীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যার্থ প্রশাসন। অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে এসে নারী ও শিশুর নিরাপত্তাহীনতা দেশের জন্য হুমকি।
তিনি আরো বলেন, শ্রমজীবী নারীদের সংগ্রাম কেবল অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য নয়, এটি সামাজিক ও রাজনৈতিক মুক্তির লড়াইও। শ্রমজীবী নারীদের অবদানকে স্বীকৃতি দিতে হবে, তাঁদের কাজের সঠিক মূল্য দিতে হবে, এবং তাঁদের ন্যায্য অধিকারের জন্য একটি ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে ছাত্রনেতা সাইদুর রহমান বলেন, নারী দিবস,এটি কোনো উৎসব নয়, এটি আমাদের সংগ্রামের দিন। আজকের এই দিনে আমরা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি সেই সকল নারীকে, যারা যুগে যুগে বৈষম্য, অন্যায় ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন, সমাজে পরিবর্তন এনেছেন এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি ন্যায্য, সমান অধিকারের সমাজ নির্মাণে ভূমিকা রেখেছেন।নারীদের অধিকার আদায়ের এই পথ সহজ ছিল না। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে নারীরা ভোটাধিকার, সমান মজুরি, শিক্ষা ও কাজের সুযোগ, নির্যাতনের বিরুদ্ধে সুরক্ষা—এসব অধিকারের জন্য লড়াই করেছেন এবং এখনো করছেন। বাংলাদেশেও নারী আন্দোলন অনেক দূর এগিয়েছে, কিন্তু এখনো আমাদের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে।
২৪ এর অভ্যুত্থানে নারীদের ভূমিকা নিয়ে তিনি আরো বলেন, আমরা দেখেছে ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে নারীরা দৃঢ় সাহসীকতার পরিচয় দিয়েছে। সারা দেশে মুক্তির আকাঙ্ক্ষায় নারীরা শত বাধা পেড়িয়ে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন।কিন্তু এই সময়ে এসে সেই নারীদের উপর নেমে এসেছে চরম নির্যাতন। আমরা দেখছি অভ্যুত্থানের পরে সারা বাংলাদেশে কিভাবে ধর্ষনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।একজন শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ কেউই এখন সমাজে নিরাপদ নয়।আমরা নারী ও শিশু নিপীড়নের প্রতিবাদ জানাই এবং অপরাধীদের শাস্তি দাবি করি।
এছাড়াও আলোচনা সভায় নারীরা তাদের লড়াইয়ের গল্পে তাদের জীবন সংগ্রাম এবং ২৪ এর অভ্যুত্থানের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।