বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
রোহিঙ্গাদের অবৈধভাবে পাসপোর্ট ও নাগরিক সনদ তৈরির কাজে সহায়তাকারী প্রতারক চক্রের ৬জনকে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে আটক করেছে র্যাব-২ এর সদস্যরা। এসময় তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয়েছে অবৈধভাবে তৈরি করা ২৫ হাজারেরও বেশি জন্ম নিবন্ধন সনদ ও নাগরিক পরিচয়পত্রের ফরম। বুধবার বিকেলে সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার জালকুড়ি এলাকায় আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্য্যালয়কে কেন্দ্র করে গড়ে বেশ কয়েকটি কম্পিউটার কম্পোজের দোকানে এ অভিযান চালায় র্যাব-২ এর একটি দল।
র্যাব-২ এর কোম্পানি কমান্ডার মহিউদ্দিন ফারুক জানান, কক্সবাজারের রোহিংগা ক্যাম্পসহ টেকনাফ, উখিয়া এবং আশপাশ এলাকায় অবস্থানরত রোহিংগাদের অনেকেই সম্প্রতি এদেশের পাসপোর্ট তৈরি করে অবৈধভাবে বিদেশে যাওয়া শুরু করেছে। দেশের কিছু দালালদের সহযোগিতায় তারা এই পাসপোর্টগুলো তৈরি করে নিচ্ছে। তবে পাসপোর্ট তৈরীর জন্য জন্ম নিবন্ধন সনদ ও নাগরিক পরিচয়পত্র তৈরির কাজগুলো করতে সহযোগিতা নিচ্ছে আরেকটি আইটি অভিজ্ঞ চক্রের। এই চক্রটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে নাম পরিচয় ও ঠিকানা ঠিক রেখে অবৈধভাবে জন্ম নিবন্ধন সনদ ও নাগরিক পরিচয়পত্র তৈরী করে দিচ্ছে।
তিনি জানান, এমনই একটি চক্র নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুঁড়ি এলাকায় আঞ্চলিক পাসপোর্ট কায্যালয়ের আশপাশে গড়ে উঠা কম্পিউটার কম্পোজের ব্যবসার আড়ালে এই জালিয়াতি ও অবৈধ কাজ করে আসছে বলে র্যাব জানতে পারে। এই চক্রটির উপর গোয়েন্দা নজরদারিও শুরু করে তারা। পরে নিশ্চিত হয়ে বুধবার অভিযান চালায় এমন চারটি কম্পিউটার কম্পোজের দোকানে।
বিকেল বিকেল চারটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা নাগাদ র্যাবের এই অভিযানে বেরিয়ে আসে পাসপোর্ট ও নাগরিক সনদ জালিয়াতির প্রত্যক্ষ প্রমান। বিভিন্ন বয়সের রোহিঙ্গা অধিবাসিদের ছবি সম্বলিত ২৫ হাজারেরও বেশি অবৈধ নাগরিক পরিচয়পত্র ও জন্ম নিবন্ধন সনদের পূরণকৃত ফরম পাওয়া যায় এই দোকানগুলোতে। ফরমগুলো পর্য়বেক্ষণগুলো দেখা গেছে, রোহিঙ্গাদের জন্য তৈরি করা এসব ভূয়া জন্ম নিবন্ধন সনদ ও নাগরিক পরিচয়পত্রগুলোতে স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে কক্সবাজার জেলার নাম ব্যবহার করা হয়েছে। তবে অস্থায়ী ঠিকানা হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকার ঠিকানা। এই সনদ ব্যবহার করে দালাল চক্রের মাধ্যমে সহজেই পাসপোর্ট হাতে পেয়ে যাচ্ছে রোহিঙ্গারা।
র্যাব-২ এর এই কর্মকর্তা জানান, আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্য্যালয়ের কোন অসাধু কর্মকর্তা বা কর্মচারী এই চক্রের সাথে জড়িত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে পাসপোর্ট কার্য্যালয়েও তারা নজরদারি করছেন। এছাড়া অবৈধভাবে তৈরি করা নাগরিক পরিচয় পত্রগুলোতে সিটি করপোরেশনের স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ওয়ার্ড মেম্বারদের সীল স্বাক্ষরও ব্যবহার করা হয়েছে। এই সমস্ত জনপ্রতিনিধিরা এই জালিয়াতির কাজে জড়িত আছেন কিনা সে বিষয়টিও র্যাব খতিয়ে দেখছে।